ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুট

কারো জন্য ‘ভিআইপি’ সুবিধা, দুর্ভোগ সাধারণের 

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২২
কারো জন্য ‘ভিআইপি’ সুবিধা, দুর্ভোগ সাধারণের 

মাদারীপুর: নাব্যতা সংকট, ফেরি সংকটসহ নানা ধরনের সংকট লেগে আছে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে। তার ওপর মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে যোগ হয়েছে ‘ভিআইপি’ সুবিধা।

 

সাপ্তাহিক বা সরকারি ছুটির দিনে ঘাটে অপেক্ষারত গাড়ির ও মানুষের চাপ বেশি থাকলে কেউ কেউ সিরিয়াল ভেঙে এ ‘ভিআইপি’ সুবিধা নিয়ে অনায়াসে দ্রুত পার হয়ে যান পদ্মা নদী। কিন্তু ভিআইপি সুবিধার ফাঁদে পড়ে সিরিয়ালে আগে থেকেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হয় সাধারণ যাত্রীদের।  

এ রুটে দীর্ঘদিন ধরেই লেগে রয়েছে সংকট। বিশেষ করে পদ্মাসেতুর পিলারের সঙ্গে কয়েকবার ফেরির ধাক্কা লাগার পর সংকট আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।  

বর্তমানে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে দু’টি রো রোসহ মাত্র ছয়টি ফেরি চলাচল করে। তাও ২৪ ঘণ্টা নয়, শুধুমাত্র সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল করছে। ফেরি এবং সময় স্বল্পতার কারণে এ নৌরুটে যাত্রীদের দুর্ভোগ কাটছে না সহসাই। ঘাটে এসে সময় মতো পদ্মা পার হতে না পেরে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককেই। তবে ‘ভিআইপি’ সুবিধা নিয়ে কেউ কেউ বেশ দ্রুত ফেরিতে উঠতে পারেন বলেও জানা গেছে। আর সাধারণ যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় ঘাটের টার্মিনালে।

বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, ফেরির সংখ্যা কম এবং শুধু দিনের বেলায় মাত্র আট/নয় ঘণ্টা চলার কারণে ফেরিঘাটে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ নৌরুট দিয়ে ২৪ ঘণ্টা ফেরি চললে এবং ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হলে দুর্ভোগ দূর হতো বলে ধারণা যাত্রীদের।  

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) বাংলাবাজার ঘাট সূত্র জানায়, বর্তমানে নৌরুটে দু’টি রো রো ফেরিসহ মোট ছয়টি ফেরি চলছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা/৫টা পর্যন্ত ফেরিগুলো শুধুমাত্র ছোট যানবাহন পারাপার করে থাকে। বর্তমানে নৌরুটে রো রো ফেরি সুফিয়া কামাল ও বেগম রোকেয়া, কে-টাইপ ফেরি কুঞ্জলতা ও কুমিল্লা এবং ফ্ল্যাট ফেরি রায়পুরা ও রানীগঞ্জ চলাচল করছে।  

এদিকে বিকেল ৫টার পর বাংলাবাজার রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ হলে এ রুটের রো রোসহ অন্যান্য ফেরিগুলো 
শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি রুটে চলাচল করে। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত মাঝিকান্দি রুট দিয়ে ছয়টি ফেরি যানবাহন পারাপার করে।

বাংলাবাজার ঘাটে কথা হয় প্রাইভেটকারচালক মো. আব্বাস আলীর সঙ্গে। তিন বলেন, ঘাটের দুর্ভোগ শেষ হবে না। পদ্মা পার হতে ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। তবে ভিআইপি নামে অনেক গাড়িই পরে এসে আগে পার হচ্ছে। আর আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে। ’

মাইক্রোবাসচালক মো. লিয়াকত বলেন, গাড়ির সংখ্যা বেশি। অথচ ফেরি চলে মাত্র ছয়টা। তাও ২৪ ঘণ্টা চললে দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমত। এখন কি আর করার! পদ্মাসেতু চালু হওয়ার অপেক্ষায় আছি।

বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ঘাটে গাড়ির বেশ চাপ রয়েছে সকাল থেকে। মূলত বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার টানা তিনদিনের ছুটি ছিল। ওই সময়ে অনেকেই ঢাকার কর্মস্থল থেকে নিজ নিজ বাড়িতে গেছেন বেড়াতে। আবার রোববার ফিরেছেন ঢাকায়। এজন্য দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার এ রুটে এ ক’দিন যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। ওই সময়টায় আমরা অ্যাম্বুলেন্স, রোগীবাহী যানবাহন ও পচনশীল পণ্যের গাড়ি জরুরি ভিত্তিতে পার করেছি। তবে ফেরি কম থাকায় কিছুটা দুর্ভোগ থেকে যাচ্ছে।

‘ভিআইপি’ সুবিধা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিরিয়াল মেনে ঘাটে আসা গাড়িগুলো পার করা হয়। কোনো গাড়ি আগে পার করার সুযোগ নেই। এছাড়া সন্ধ্যার পর মাঝিকান্দি রুট সারারাত চালু থাকে। ওই রুট দিয়েও যানবাহন পারাপার হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।