ঢাকা, বুধবার, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৮ মে ২০২৫, ০০ জিলহজ ১৪৪৬

জাতীয়

নজিরবিহীন আন্দোলনে উত্তাল সচিবালয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৩৬, মে ২৬, ২০২৫
নজিরবিহীন আন্দোলনে উত্তাল সচিবালয়

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-কে কালো আইন উল্লেখ করে আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ সচিবালয়। আজকের মধ্যে অধ্যাদেশটি প্রত্যাহার না হলে কঠোর কর্মসূচিসহ তিনদিন ছুটি নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কর্মচারীরা।

দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ছাড়াও এতে অংশ নিয়েছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। তাদের আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সচিবালয়। কর্মচারীদের আন্দোলনে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু।

রোববার (২৫ মে) রাতে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে সরকার। গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

উপদেষ্টা পরিষদে অধ্যাদেশটি অনুমোদনের পর থেকেই গত কয়েকদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অধ্যাদেশ জারির পরদিন সকাল থেকেই সচিবালয়ে ছয় নম্বর ভবনের সামনে বাদামতলায় জড়ো হন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সকাল ১১টার দিকে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর ও মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়। এরপর সোয়া ১১টার দিকে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের অপর অংশ। এই অংশে নেতৃত্বে রয়েছেন মো. নূরুল ইসলাম এবং মুজাহিদুল ইসলাম।

বিক্ষোভ মিছিলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘অবৈধ কালো আইন, বাতিল কর করতে হবে’, ‘কর্মচারী মানে না, অবৈধ কালে আইন’, ‘মানি না মানবো না, অবৈধ কাল আইন’, ‘এক হও লড়াই কর, ১৮ লাখ কর্মচারী’, ‘সচিবালয়ের কর্মচারী, এক হও এক হও’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’- এ ধরনের বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভে অংশ নিতে কাজ ফেলে নিচে নেমে এসেছেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তারা সচিবালয়ের ভেতরে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি অন্যান্য ফটকও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের পক্ষে সভাপতি মো. নূরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব। কেউ ঘরে বসে থাকবেন না। সচিবদের হুমকিতে আপনারা ভয় পাবেন না। আমাদের কর্মসূচি চলছে চলবে।  

তিনি বলেন, আজকে দিনের মধ্যে যদি এই অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করা না হয়। তাহলে আমরা এমন কঠোর কর্মসূচি দেবো যাতে কেউ সচিবালয়ে ঢুকতে পারবে না।

চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুতির বিধান রেখে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে সরকার।

সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন, এক ইস্যুতে সব দল মত নির্বিশেষে আন্দোলনে নেমে আসার নজির নেই। মূলত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একজোট হয়েছেন।

আরও পড়ুন>> 

সচিবালয়ের সব ফটক বন্ধ করে দিলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা 

অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না সচিবালয় অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি

এমআইএইচ/এসএএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।