সন্তানের ঘুম নিয়ে প্রায় সব মা-বাবারই দুশ্চিন্তা থাকে। কারণ শিশুদের ঘুমের ধরন ও সময় বড়দের থেকে আলাদা।
কতটা ঘুম প্রয়োজন?
শিশুর জন্মের পর প্রথম মাসে দৈনিক ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়। তবে এ সময় তারা একটানা দীর্ঘ সময় ঘুমাতে পারে না, কারণ পাকস্থলী ছোট থাকায় ঘন ঘন খিদে পায়। এক থেকে চার মাস বয়সী শিশুদের দৈনিক ১৪–১৫ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। এ সময়ে তারা ধীরে ধীরে দিন-রাতের সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নিতে শুরু করে।
চার মাস থেকে এক বছর বয়সী শিশুদের ঘুমের ধরন অনেকটাই বড়দের মতো হয়ে যায়। তারা রাতে বেশি সময় ঘুমায়। দিন-রাত মিলিয়ে এ বয়সে দৈনিক ১২–১৩ ঘণ্টা ঘুম যথেষ্ট। শিশুর সঠিক শারীরিক বৃদ্ধি ও মস্তিষ্কের বিকাশে এই ঘুম অপরিহার্য।
ঘুমের সমস্যা কেন হয়?
শিশুর ঘুম না হওয়ার পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে। ঘরে বেশি আলো বা টেলিভিশন চালু থাকলে অনেক শিশু ঘুমাতে চায় না। দোলনায় ঘুম পাড়ানোর অভ্যাস থাকলে বিছানায় শোয়ালেই তারা জেগে যায়। ভেজা বা আঁটসাঁট ডায়াপারও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
কিছু শিশুর কোলে বা কাঁধে ঘুমানোর অভ্যাস থাকে, ফলে বিছানায় শোয়ালে ঘুম ভেঙে যায়। অসুস্থতা, দিনের বেলা বেশি ঘুমানো, অতিরিক্ত স্মার্টফোন দেখা ইত্যাদিও শিশুর ঘুমের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
শিশুর ঘুম ঠিক রাখতে করণীয়
শিশুর জন্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমের রুটিন তৈরি করতে হবে। শোবার ঘর হালকা অন্ধকারে রাখতে হবে এবং ঘুমের আগে আলো কমিয়ে দেওয়া উচিত। গরমকালে শিশুর শরীর হালকা ভেজা সুতি কাপড় বা গামছা দিয়ে মুছে দিলে আরাম পায় এবং ঘুম ভালো হয়। শীতে হালকা ভারী কাপড় পরানো যেতে পারে, তবে অতিরিক্ত নয়, কারণ কম্বল বা লেপ ব্যবহার করা হয়ই।
দিনের বেলায় খেলাধুলার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এতে শিশুর শরীর ক্লান্ত হয় এবং রাতে সহজে ঘুমায়। তবে শিশুকে কখনোই উপুড় করে শোয়ানো যাবে না। এতে শ্বাসনালীতে বাধা তৈরি হতে পারে। পাতলা বালিশে শোয়ানো সবচেয়ে ভালো।
যদি শিশু নিয়মিত ঘুমের সমস্যায় ভোগে বা ইনসমিয়া থাকে, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
এনডি