ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

বিবাহ বহির্ভূত যৌনতায় এক বছরের কারাদণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০২২
বিবাহ বহির্ভূত যৌনতায় এক বছরের কারাদণ্ড

বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ডের আইন করতে যাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া।

চলতি মাসেই নতুন এই ফৌজদারি দণ্ডবিধি পাস করতে যাচ্ছে দেশটির পার্লামেন্ট।

খবর রয়টার্স-এর।

সংবাদ সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, পাস হতে যাওয়া এই ফৌজদারি দণ্ডবিধির আওতায় প্রেসিডেন্ট কিংবা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অবমাননা এবং ইন্দোনেশিয়ায় রাষ্ট্রীয় আদর্শবিরোধী যেকোনো দৃষ্টিভঙ্গিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।  

একইসঙ্গে বিয়ের আগে যৌন সম্পর্ক স্থাপনকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই দণ্ডবিধিতে।

কয়েক দশক ধরে আইনটির খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে ইন্দোনেশিয়ার উপ-আইনমন্ত্রী এডওয়ার্ড ওমর শরিফ হিয়ারিয়েজ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, আগামী ১৫ ডিসেম্বর নতুন এই ফৌজদারি দণ্ডবিধি পাস হতে পারে।  

‘ইন্দোনেশীয় মূল্যবোধের সঙ্গে সংগতি রেখে অপরাধ দমন বিধিটি প্রণয়ন করতে পেরে আমরা গর্বিত’, যোগ করেন তিনি।

এদিকে, ১৫ তারিখের আগেই আইনটি পাস হতে পারে জানিয়ে খসড়া আইনটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইনপ্রণেতা বামবাং উরিয়ান্তো বলেন, নতুন এই দণ্ডবিধিটি আগামী সপ্তাহেই পাস হয়ে যেতে পারে। ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটি ইসলামি সংগঠন খসড়া আইনটির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। তবে বিরোধীরা বলছেন, আইনটি ১৯৯৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর পতনের পর কার্যকর হওয়া উদার সংস্কারগুলোর পরিপন্থী।

এই দণ্ডবিধির আগের খসড়াটি ২০১৯ সালে পাস হওয়ার কথা থাকলেও এ নিয়ে তখন দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। হাজারো মানুষ বিক্ষোভ দেখান তখন। তাদের অভিযোগ ছিল, এ ধরনের আইন নাগরিক স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করবে।

এ প্রসঙ্গে দেশটির সরকার বলছে, আইনটির খসড়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, খসড়ায় খুব সামান্যই পরিবর্তন এসেছে।  

আইনে, ধর্ষণের শিকার নারীর গর্ভপাত বাদে অন্য গর্ভপাতের ঘটনাকে অপরাধ বিবেচনা এবং ‘কালোজাদু’র জন্য কারাদণ্ডের বিধান বহাল থাকছে।

সর্বশেষ ২৪ নভেম্বর যে খসড়াটি তৈরি করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে রয়টার্স বলছে, বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ঘটনায় সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড দেয়া হবে। শুধু ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের মতো সীমিতসংখ্যক মানুষের অভিযোগ করার এখতিয়ার থাকবে।

অন্যদিকে, এই আইনে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টকে অবমাননার দায়ে সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত সাজার বিধান রাখা হয়েছে। শুধু প্রেসিডেন্টই এ অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন।  

এ প্রসঙ্গে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আন্দ্রিয়াস হারসোনো বলেন, এ আইন ইন্দোনেশিয়ার গণতন্ত্রের জন্য একটি বড় ধাক্কা।  

ইন্দোনেশিয়ার এমপ্লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (APINDO)-এর ডেপুটি চেয়ারপারসন শিন্তা উইদজাজা সুকামদানি বলেছেন, আইনের ধারাগুলো নৈতিকতার সঙ্গে সম্পর্কিত। এটা ভালোর চেয়ে বেশি ক্ষতি করবে, বিশেষ করে পর্যটন এবং আতিথেয়তা খাতে নিযুক্ত ব্যবসাগুলোর জন্য।

তবে ইন্দোনেশিয়ার উপ-আইনমন্ত্রী দাবি করেছেন, নতুন এই আইন গণতান্ত্রিক স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০২২
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।