ঢাকা, সোমবার, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

নেপালে ভেঙে দেওয়া সংসদ পুনর্বহাল চায় ৮ দল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:১৫, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫
নেপালে ভেঙে দেওয়া সংসদ পুনর্বহাল চায় ৮ দল গত মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা সিংহ দরবার প্রাসাদে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন

নেপালে সরকার পতনের পর প্রেসিডেন্টের কাছে ভেঙে দেওয়া সংসদ পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে দেশটির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো।

নেপালি কংগ্রেস, সিপিএন - ইউএমএল এবং মাওবাদী সেন্টারসহ আটটি দল এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পৌডেল অসাংবিধানিক আচরণ করছেন।

নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকির পরামর্শে শুক্রবার প্রেসিডেন্ট পৌডেল সংস ভেঙে দেন। এটি সরকার-বিরোধী আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি ছিল।

ফেসবুকসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে গত সপ্তাহে সংঘটিত গণবিক্ষোভের সময় সংঘর্ষে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে এক চুক্তির পর কারকিকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

সোমবার মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল কিন্তু ততক্ষণে এই বিক্ষোভ গণআন্দোলনে রূপ নিয়েছিল। ক্ষুব্ধ জনগণ মঙ্গলবার রাজধানী কাঠমান্ডুতে সংসদ এবং সরকারি ভবনগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এখন নতুন করে সংসদ পুনর্বহালের দাবিতে শনিবার দেওয়া বিবৃতিতে আটটি রাজনৈতিক দলের প্রধান হুইপ সই করেছেন। তারা যুক্তি দিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা অসাংবিধানিক এবং নেপালের বিচার বিভাগের প্রতিষ্ঠিত নজিরগুলোর বিরুদ্ধে যায়।

নেপালে আন্দোলনকারী জেন-জি তরুণদের বিক্ষোভে একটি প্রধান দাবি ছিল সংসদ ভেঙে দেওয়া। কিন্তু আটটি রাজনৈতিক দলের জোট বলছে, বিক্ষোভকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে আগামী বছরের পাঁচই মার্চের জন্য ঘোষিত জাতীয় নির্বাচনও অন্তর্ভুক্ত।

তবে তা জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। পরে শনিবার প্রেসিডেন্ট পৌডেল সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শন এবং নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করার আহ্বান জানান।
 
প্রেসিডেন্ট বলেন, সংবিধান কার্যকর আছে, সংসদীয় ব্যবস্থা কার্যকর এবং ফেডারেল গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র এখনও বিদ্যমান। ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন পরিচালনা করে জনগণের কাছে আরও দক্ষ গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।  

সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি কারকিই প্রথম কোনো নারী, যিনি হিমালয়ান এই জাতিকে নেতৃত্ব দিতে কাঠমান্ডুতে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে শপথ নেন।

আশা করা হচ্ছে, কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি তার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীদের নিয়োগ করবেন। কারকিকে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির অধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং জেন-জি আন্দোলনের ছাত্র নেতারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে তার নেতৃত্বকে সমর্থন করছেন।

কিন্তু তার মন্ত্রিসভা নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। এর মধ্যে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, সংসদ ও হামলার শিকার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভবন পুনর্নির্মাণ, পরিবর্তন চাওয়া জেন-জি আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করা।

সহিংসতার সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অস্থিরতার পর নেপাল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে।
 
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।