ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

তামাকের সারচার্জ আদায় নীতিমালা হচ্ছে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৬ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৭
তামাকের সারচার্জ আদায় নীতিমালা হচ্ছে

ঢাকা: তামাকজাত দ্রব্যে ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ’ আদায়ে নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। শিগগিরই এ নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। একইসঙ্গে তামাকজাত পণ্যের ভ্যাট বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। 

৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে সোমবার (২৯ মে) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান তিনি। দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

 

বুধবার (৩১ মে) উদ্‌যাপিত হবে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘তামাক উন্নয়নের অন্তরায়’। দেশের ৬৪টি জেলায়ই দিবসটি উদ্‌যাপন করা হবে। ঢাকায় ওসমানী মিলনায়তনে ওইদিন বেলা ১১টায় আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।  

সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার। তবে দেশকে তামাকমুক্ত করতে সময় লাগবে। আমরা সমন্বিত প্রচেষ্টায় তামাকমুক্ত করতে পারবো’।  

তিনি বলেন, ‘তামাক সম্পর্কে সতর্কবার্তা আরও বেশি দৃষ্টিগোচর করা হবে। তামাকপণ্যের প্যাকেট ও কৌটার গায়ে ছবিসহ সতর্কবার্তার পরিধি বাড়ানো হবে। ধূমপান মানে বিষপান- এ সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হবে’।  

এক প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তামাকের ভ্যাট বাড়ানোর পক্ষে’।  

মোহাম্মদ নাসিম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সদর দফতর জেনেভায় প্রকাশ্যে ধূমপান করা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আমি জেনেভায় দেখলাম, মানুষ প্রকাশ্যে ধূমপান করছে। সেখানে কোনো বাধা দেওয়ার বিষয় নেই। আমি আশ্চর্য হলাম, জেনেভায় ডব্লিউএইচও’র সদর দফতর যেখানে, সেখানেও প্রকাশ্যে ধূমপান হচ্ছে, বাধা দেওয়া হচ্ছে না’।  

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক। এ সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, তামাক খাতে যেখানে সরকারের বছরে প্রায় ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা আয় হয়, সেখানে তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা, অকাল মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের কারণে বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। ফলে বছরে নিট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে যথেষ্ট অগ্রগতি হলেও কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিশেষ করে ছবিসহ সতর্কবার্তা প্রদানে বিভিন্ন তামাক কোম্পানি আইন লঙ্ঘন করছে বলে গণমাধ্যমে আসছে।  

তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রিস্থলে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন সরবরাহ করে আইন লঙ্ঘনে উৎসাহী করছে তামাক কোম্পানিগুলো। এগুলো আইন অনুসারে নিষিদ্ধ। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এসব অবৈধ বিজ্ঞাপন অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে অসংক্রামক রোগে এক তৃতীয়াংশের অকাল মৃত্যু হ্রাস এবং আন্তর্জাতিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তির (এফসিটিসি) বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে সরকারের সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগ একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।  

যেহেতু টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় বিশেষভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণে জোর দেওয়া হয়েছে, তাই সারা দেশবাসীর সহযোগিতা না পেলে সরকারের একার পক্ষে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না। তামাক নিয়ন্ত্রণ বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের পোস্টারের মোড়ক উন্মোচন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৬ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৭ 
এসকে/এএসআর
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।