ফুসফুস জীবনের এক অপরিহার্য অঙ্গ। শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের জন্য দরকার সুস্থ ফুসফুস।
আশঙ্কাজনক তথ্য হলো, বিশ্বে ৮২০ কোটি মানুষের মধ্যে ১০০ কোটি মানুষ ফুসফুস সংক্রান্ত নানা রোগে ভুগছে। এর পরিমাণ প্রতি আটজনে একজন। বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশই ফুসফুসের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে শুধু অ্যাজমা রোগেই ভুগছেন প্রায় এক কোটি ১০ লাখ মানুষ। চল্লিশোর্ধ্ব ২১ শতাংশ মানুষ ফুসফুসের বিশেষ রোগ সিওপিডিতে ভুগছেন যাদের ৬২ শতাংশই ধূমপায়ী। তাই ফুসফুস সুস্থ রাখার জন্য দরকার ব্যাপক সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব ফুসফুস দিবস ২০২৫ উপলক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জেসিআই-স্বীকৃত হাসপাতাল এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকার রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে এক বৈজ্ঞানিক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এ বছর দিবসটির স্লোগান—‘সুস্থ ফুসফুস, সুস্থ জীবন’।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এভারকেয়ার হসপিটাল বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. রত্নদ্বীপ চাসকার। গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য দেন- দ্য চেস্ট অ্যান্ড হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) মহাসচিব ডা. মো. জহিরুল ইসলাম শাকিল, দ্য চেস্ট অ্যান্ড হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের মহাসচিব ডা. গোলাম সারোয়ার লিয়াকত হোসেন ভূঁইয়া, বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের যুগ্ম সম্পাদক ডা. কাজী সাইফুদ্দিন বেন্নুর। বক্তব্য দেন গ্রুপ মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. আরিফ মাহমুদ।
‘বিশ্ব ফুসফুস দিবস ও ফুসফুস রোগের বৈশ্বিক বোঝা’- এ বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকার রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কো-অর্ডিনেটর ডা. এস এম আব্দুল্লাহ আল মামুন। সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. জিয়াউল হক।
এভারকেয়ার হসপিটাল বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. রত্নদ্বীপ চাস্কার বলেন, ‘এভারকেয়ার হসপিটাল সবসময় উন্নত প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ল্যাব, দক্ষ চিকিৎসক ও নিবেদিত টিমের মাধ্যমে রোগীদেরকে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করে আসছে। আমাদের লক্ষ্য কেবল চিকিৎসা দেওয়া নয়, বরং জনগণকে প্রতিরোধমূলক সচেতনতা গড়ে তুলতেও সহায়তা করা। ’
গ্রুপ মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. আরিফ মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে হাঁপানি, সিওপিডি ও নিউমোনিয়ার মতো রোগগুলো ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। ’
রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কো-অর্ডিনেটর ডা. এস এম আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ফুসফুসজনিত জটিল রোগে যেসব মানুষ মারা যাচ্ছে তার একটি বড় অংশ-ই প্রতিরোধযোগ্য। ধূমপান, বায়ুদূষণ, কর্মক্ষেত্রে ক্ষতিকর পরিবেশ, জীবনধারাজনিত কারণ ইত্যাদি ফুসফুসের রোগ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। ’
তিনি আরও বলেন, সুস্থ ফুসফুসের জন্য সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে- ধূমপান না করা, দূষিত পরিবেশ থেকে বাঁচা, সুষম খাদ্য গ্রহণ, শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা, সংক্রমণ থেকে বাঁচা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা ইত্যাদির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে, সচেতনতা বাড়াতে হবে।
আলোচনা অনুষ্ঠানের আগে চিকিৎসক ও নার্সদের নিয়ে ‘অক্সিজেন থেরাপি ও ইনহেলেশন কৌশল’ বিষয়ক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালা শেষে সনদপত্র দেওয়া হয়।
আরবি