ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

শেরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আন্দোলন, রোগীদের ভোগান্তি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০১৭
শেরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আন্দোলন, রোগীদের ভোগান্তি চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের দুর্ভোগ/ ছবি- আরিফ জাহান

শেরপুর (বগুড়া) ঘুরে: আবুল ফজলু শিপলু। তিনি একজন প্রতিবন্ধী। পরণে লুঙ্গি, গায়ে ছিলো সুয়েটার। মাথার চুলগুলো উসকোখুসকো। হাতে ভিজিটিং কার্ড নিয়ে করিডরের মেঝেতে হামাগুড়ি দিয়ে খোঁজ করছিলেন চিকিৎসকের। 
 
 

চর্মরোগ ও মুখের ঘা’র চিকিৎসা নিতে প্রতিবন্ধী এ রোগী আত্মীয় আব্দুল জলিলের সঙ্গে রিকশাযোগে বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলেন। তিনি উপজেলার বিণোদপুর গ্রামের মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে।


 
আব্দুল জলিলের সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ছাগলধরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসা সেবা না পেয়ে একপর্যায়ে দু’জনেই বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হন।  
 
মঙ্গলবার (০৩ জানুয়ারি) বেলা সোয়া ১১টা। নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি কারাবন্দি চিকিৎসক ডা. মুস্তাফা আল্লামা তালুকদার পায়েলের মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থান ধর্মঘট-মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছিলেন। কারাবন্দি চিকিৎসক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার।  
 
প্রায় দেড়ঘণ্টা কর্মসূচি চলাকালে কমপ্লেক্সের ভেতরটা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীতে ভরে যায়। সিংহভাগ রোগী ছিলেন নারী ও শিশু। কোলের শিশু নিয়ে অনেক নারীকে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। পুরুষের সংখ্যাও একেবারে কম ছিল না। রোগীতে গিজগিজ করলেও চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যস্ত ছিলেন কর্মসূচি পালনে। রোগীদের দুর্ভোগ

জরুরি বিভাগ, প্রধান কর্মকর্তার কার্যালয়সহ অন্যদের কক্ষের দরজায় তালা মেরে পুরো কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম বন্ধ রেখে চলছিলো এ আন্দোলন কর্মসূচি। অথচ দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা ছিলেন চরম ভোগান্তিতে।  
 
আন্দোলন কার্যক্রম আরো দু’দিন চলবে বলে বাংলানিউজকে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোখলেছুর রহমান। তিনি রোগীদের সমস্যার কথাও স্বীকার করেন। তবে সমস্যাটি সাময়িক বলেও দাবি করেন।  
 
চিকিৎসাসেবা নিতে আসা উপজেলার তালপুকুরিয়ার ফারজানা, মামুরশাহীর মরিয়ম, শাপলা, উচরংয়ের রুখাসান, রামচমুকুন্দের আফরোজা, বিলকিস, ঝাঁঝরের ওমর আলীসহ একাধিক রোগী বাংলানিউজকে জানান, তাদের জিম্মির মাধ্যমে আন্দোলন করে ডাক্তার সাহেবরা কি পাবেন।  
 
এতে করে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা মানুষদের শুধু ভোগান্তি বাড়াচ্ছেন তারা-অভিযোগ এসব রোগীদের।  
 
২০১৬ সালের ২৯ নভেম্বর (মঙ্গলবার) মধ্যরাতে বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ওয়ার্ড থেকে বের করে দেওয়া হয় অন্তঃসত্ত্বা মাজেদা বিবিকে। পরে খোলা আকাশের নিচে জরুরি বিভাগের সামনে জন্ম দেন ফুটফুটে কন্যা সন্তানের। তবে সেই নবজাতকে বাঁচানো যায়নি।
এ ঘটনায় নবজাতকের বাবা ইলিয়াছ হোসেন বাদী হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মুস্তাফা আল্লামা তালুকদার পিয়াল ও নার্স সুষমা রানীকে আসামি করে শেরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।  
 
সেই মামলায় আদালতে জামিন নিতে গেলে বিচারক ডা. মুস্তাফা আল্লামা তালুকদার পিয়ালের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৭
এমবিএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।