ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চবি ছাত্রলীগের ৪ নেত্রীর মারামারি, ২ জনের বহিষ্কার দাবি

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২২
চবি ছাত্রলীগের ৪ নেত্রীর মারামারি, ২ জনের বহিষ্কার দাবি ...

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের পদধারী ৪ ছাত্রীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দুইজন অভিযুক্ত দুই ছাত্রীর বিরুদ্ধে হল প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী হলেন- ছাত্রলীগের উপ স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও সংস্কৃত বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী সিমা আরা শিমু এবং উপ ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী সাজামুন নাহার ইষ্টি।

 

অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী- তাসফিয়া জাসারাত নোলক ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের উপ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক। আরেক অভিযুক্ত নির্জনা ইসলাম নাট্যকলা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের উপ কৃষি শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক।  

জানা গেছে, সাজমুন নাহার ইষ্টি ও তার রুমমেট নির্জনা ইসলাম খালেদা জিয়া হলের ২০৩ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে অভিযুক্ত তাসফিয়া নোলক ২০৩ নম্বর রুমে ঢুকলে তাঁকে অনুমতি ছাড়া রুমে প্রবেশ করতে নিষেধ করায় নির্জনা ও নোলক উভয়ে সাজমুন নাহার ইষ্টির সঙ্গে তর্কে জড়ায়। এরপর সাজমুন নাহার ইষ্টি- নির্জনার মা ও নোলকের বাবাকে এ বিষয়ে জানালে তাসফিয়া নোলক রাত ১০টার দিকে আবার ২০৩ নম্বর রুমে এসে ইষ্টির সঙ্গে তর্কে জড়ায়। এসময় পাশের রুমে থাকা সীমা আরা শিমু তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করলে তাসফিয়া নোলক তাঁকে চড় মারে। এরপর উভয়ে একে অপরকে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে।  

একপর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে সিমা আরা শিমুর অনুসারীরা তাসফিয়া জাসারাত নোলকের বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। পরে হল প্রভোস্ট ও প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে তাঁরা হলে ফিরে যান।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন আগে অভিযুক্ত তাসফিয়া জাসারাত নোলককে মাদকদ্রব্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পাশ থেকে রাত ১২টার দিকে হাতেনাতে ধরেন প্রক্টরিয়াল বডি। পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত তাসফিয়া জাসারাত নোলকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদমাধ্যমের পরিচয় জানার পর ফোন কেটে দেন।

ভুক্তভোগী সাজমুন নাহার ইষ্টি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা হল প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরাও তখন ছিলেন। উনারা এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদের দাবি- অভিযুক্ত তাসফিয়া নোলক এবং নির্জনা ইসলাম উভয়কে বহিষ্কার করতে হবে।

দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম সোহেল বলেন, ২০৩ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী নাজমুন নাহার ইষ্টি ও নির্জনা ইসলামের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় নোলক তাদের রুমে গিয়ে তর্কে জড়ায়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।  

প্রভোস্ট বলেন, অভিযুক্ত নোলকের বিষয়ে প্রক্টর অফিস থেকে আগেও অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল আমাদের কাছে। নিয়মানুযায়ী আমরা একটি হল-বুক মেনটেইন করি। নোলক প্রায় সময় অনেক রাতে হলে আসে। আমরা তাকে মৌখিকভাবে এ বিষয়ে আগেই সতর্ক করেছি। নোলকের বাবাকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্রীদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। আমরা হল প্রভোস্টকে বিষয়টি দেখতে বলেছি। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা যান সেখানে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তের সংশ্লিষ্টতা পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২২
এমএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।