চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও অযাচিত বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থা চবি শাখা। সংগঠনটির নেত্রীদের ভাষায়, ছাত্রদল মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে নির্বাচনী পরিবেশকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটায় চাকসু ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন ছাত্রী সংস্থার নেত্রীরা। এসময় তারা নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস গঠনের সাত দফা ইশতেহারও ঘোষণা করেন।
লিখিত বক্তব্যে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল গতকাল আমাদের এবং এক হল প্রভোস্টের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছে। আমরা সেই অভিযোগের প্রতিবাদ জানাতে এবং নারীবান্ধব ক্যাম্পাস গঠনের ইশতেহার প্রকাশ করতে এখানে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, আগস্টে শিক্ষার্থীদের অনুরোধে ছাত্রী হলে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য একটি ফার্স্টএইড বক্স সরবরাহ করা হয়েছিল। এটি কোনো নির্বাচনী প্রচারণার অংশ ছিল না, বরং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে নেওয়া উদ্যোগ ছিল। অথচ ছাত্রদল সেই ছবিকে ব্যবহার করে এখন নির্বাচনের আচরণ বিধি লঙ্ঘন বলে প্রচার করে বেড়াচ্ছে। যা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।
জান্নাতুল জানান, ছাত্রদলের অভিযোগের পর নির্বাচন কমিশনের পাঠানো শোকজের জবাব দেওয়া হয়েছে এবং কমিশনের নির্দেশে বক্সটি সরিয়েও নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, শামসুন্নাহার হলের ভিপি প্রার্থী শেখ সাদিয়া আচরণবিধি ভঙ্গ করে বাদামি রঙের লিফলেট ছাপালেও নির্বাচন কমিশন তা উপেক্ষা করেছে। এছাড়া ছাত্রী সংস্থা সমর্থিত 'অদম্য শিক্ষার্থী জোট'র ভিপি প্রার্থী ফাইরোজ ফেরদৌসের ফেসবুক আইডি হ্যাক করা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী তাসমিনকে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া এবং দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী প্রার্থী আয়েশা আক্তারকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগও তোলে সংগঠনটি।
জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, এসব বিষয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তবে আগের ঘটনার মতো এবারও সুষ্ঠু সমাধান পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা করছি। আমরা চাই নির্বাচনটি যেন নারী হয়রানিমুক্ত, সমান সুযোগের পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সাত দফা ইশতেহার ঘোষণা করে ছাত্রী সংস্থা:
১. প্রতিটি হলে নিপীড়নবিরোধী মনিটর সেল গঠন
২. অনলাইন অভিযোগ প্ল্যাটফর্ম চালু
৩. দ্রুত জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত
৪. আইনি সহায়তা ও কাউন্সেলিং ডেস্ক স্থাপন
৫. সচেতনতা ও নেতৃত্ব বিকাশ কর্মসূচি
৬. সহপাঠী সহায়তা নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা
৭. নারী হয়রানি ও সাইবার বুলিংকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে সংযোজন
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজয়–২৪ হলের ভিপি প্রার্থী উমাইমা শিবলী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের ভিপি প্রার্থী সুমাইয়া নুসরাত, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী খাদিজাতুল কোবরা, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী নাজিফা তাসফিয়াহ এবং শামসুন্নাহার হলের ভিপি প্রার্থী ফাইরোজ ফেরদৌস।
এমএ/পিডি/টিসি