ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২, ০৮ মে ২০২৫, ১০ জিলকদ ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পশুর হাট নিয়ে অস্বস্তি কাটেনি চসিকের

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:০৯, মে ৮, ২০২৫
পশুর হাট নিয়ে অস্বস্তি কাটেনি চসিকের ফাইল ছবি।

চট্টগ্রাম: কোরবানির ঈদের বাকি মাত্র এক মাস। এখনো শেষ হয়নি নগরের সবচেয়ে বড় এবং চসিকের স্থায়ী পশুর হাট সাগরিকার ইজারা।

দুই দফায় কাঙ্ক্ষিত সাড়া না মেলায় এখন তৃতীয়বারের মতো এ হাটের ইজারা প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি ১৬টি অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমোদন চাওয়া হলেও এখনো সাড়া মেলেনি।
সব মিলে কোরবানির স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাট নিয়ে বলা যায় অস্বস্তি কাটেনি চসিকের। প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আহরণের অন্যতম বড় খাত স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাট।  

সূত্র জানায়, চসিকের তিনটি স্থায়ী পশুর হাট- সাগরিকা গরুর বাজার, বিবির হাট গরুর বাজার ও পোস্তারপাড় ছাগলের বাজার। এর মধ্যে এবার বিবির হাট বাজার ১ কোটি ১৬ লাখ টাকায় ইজারা হয়েছে। সরকার নির্ধারিত দর ছিল ১ কোটি ৯ লাখ টাকা। পোস্তার পাড় ছাগলের বাজার ইজারা হয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ টাকায়। সরকার নির্ধারিত দর ছিল প্রায় ১ কোটি ১৩ লাখ। এবার সাগরিকা গরুর বাজারের সরকারি ইজারা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা। কিন্তু দুই দফায় আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় তৃতীয়বার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। সেই প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।  

গত ১৫ এপ্রিল জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দিয়ে এবার নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ১৬টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর অনুমোদন চেয়েছে চসিক। এর মধ্যে ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডেই রয়েছে তিনটি- পতেঙ্গা স্টিল মিল বাজার, পূর্ব হোসেন আহম্মদ পাড়া সাইলো রোডের পাশে টিএসপি মাঠ ও মুসলিমাবাদ রোডের সিআইপি জসিমের খালি মাঠ। বাকি হাট বসানোর প্রস্তাবিত স্থানগুলো হলো- ৬ নম্বর ওয়ার্ডে কর্ণফুলী পশু বাজার, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণে টিকে গ্রুপের খালি মাঠ, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে বড়পোল সংলগ্ন মহেশ খালের দুই পাড়ের খালি জায়গা, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়াজেদিয়া মোড়, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের আউটার রিং রোডে সিডিএ বালুর মাঠ, ৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ডের জানালী রেল স্টেশন সংলগ্ন রেলওয়ের পরিত্যক্ত খালি জায়গা, মধ্যম হালিশহর মুনির নগর আনন্দবাজার সংলগ্ন রিং রোডের পাশে খালি জায়গা, সল্টগোলা রেলক্রসিং সংলগ্ন খালি জায়গা, ১ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরী হাট, হালিশহর পুলিশ লাইনের সামনে রাস্তার পাশ, মাদারবাড়ী পোর্ট সিটি হাউজিংয়ের খালি জায়গা, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর হালিশহর গলিচিপা পাড়া বারুনিঘাটা মাঠ ও অলংকার গরুর হাট। যানজটের শঙ্কা, ক্রেতা-বিক্রেতার নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ইত্যাদি নানা বিষয় বিবেচনা করে অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়ে থাকে।   

গত বছর কোরবানিতে নগরে অস্থায়ী নয়টি পশুর হাট বসানোর অনুমোদন মিললেও শেষ পর্যন্ত বসেছিল সাতটি। এগুলো হলো-কর্ণফুলী পশুর হাট, হালিশহরের বড়পোল সংলগ্ন গোডাউন মাঠ, ওয়াজেদিয়া মোড়, আউটার রিং রোডে সিডিএ বালুর মাঠ, বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণে টিকে গ্রুপের মাঠ, হোসেন আহম্মদ পাড়া সাইলো রোডের পাশে টিএসপি মাঠ এবং মুসলিমাবাদ সড়কের সিআইপি জসিমের খালি মাঠ। এগুলো ইজারা দিয়ে সিটি করপোরেশনের আয় হয়েছিল ৫ কোটি ৬ লাখ টাকা। অস্থায়ী হাটের জায়গা ইজারাদারকে ব্যবস্থা করতে হয়। রেলওয়ের জায়গা ও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জায়গার অনুমোদন নিতে না পারায় দুইটি অস্থায়ী পশুর হাট বসেনি।  

চসিকের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, চসিকের আয়ের গুরুত্বপূর্ণ খাত তিনটি স্থায়ী পশুর হাট এবং কোরবানি উপলক্ষে অস্থায়ী পশুর হাটগুলো। হাটের ইজারাদারদের অভিযোগ থাকে, প্রতিবছর নগরে অনেক অবৈধ পশুর হাট বসে এতে বৈধ পশুর হাটে হাসিল আদায় আশানুরূপ হয় না। অবৈধ হাটের কারণে শুধু যে চসিক বা ইজারাদার হাসিল আদায় থেকে বঞ্চিত হয় তা নয় একই সঙ্গে চাঁদাবাজি, পেশি শক্তির প্রয়োগ, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, যানজট সৃষ্টি, পশুর গোবর পরিষ্কার না করা, ক্রেতা-বিক্রেতার নিরাপত্তাহীনতাসহ অনেক সমস্যা দেখা দেয়। অতীতে স্থায়ী পশুর হাট ইজারা না হলে খাস কালেকশনের মাধ্যমে হাসিল আদায় করতো চসিক। এবারও যদি সাগরিকা গরুর বাজার ইজারা না হয় তাহলে কর্তৃপক্ষ যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে। প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনা চাইবে।  

তিনি বলেন, বৈধ কোরবানির পশুর হাটে জাল বুথ শনাক্তকরণ মেশিন, সিসিটিভি ক্যামেরা, পশু চিকিৎসাসেবা, পর্যাপ্ত আলোকায়ন, গোখাদ্য সরবরাহ, গরু বাঁধার ছাউনি, পশুর গোবর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্যাম্প ও টহল নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সংস্থা দায়িত্ব পালন করে। অবৈধ হাটগুলোতে এসব থাকে না।  

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২৫
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।