ঢাকা, শনিবার, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৪ মে ২০২৫, ২৬ জিলকদ ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

বিএনপি-জামায়াত-এনসিপির দ্বন্দ্বে নতুন সমীকরণে রাজনীতি

তানভীর আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:১৪, মে ২৩, ২০২৫
বিএনপি-জামায়াত-এনসিপির দ্বন্দ্বে নতুন সমীকরণে রাজনীতি

ঢাকা: দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে নানা সময়ে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব দেখা গেছে। যতই দিন যাচ্ছে, দ্বন্দ্ব যেন ক্রমশ বাড়ছেই।

এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, যত দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যাবে, ততই দেশের জন্য মঙ্গল।

গণঅভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা শিক্ষার্থীদের নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি দলটি গঠনের পর থেকেই জামায়াতে ইসলামী বা ছাত্র শিবিরের সঙ্গে এক ধরনের রাজনৈতিক মিত্রতাও ছিল। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতেও দল দুটি এক মঞ্চে ছিল। পরে জামায়াত ইস্যু ঘিরে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের স্ট্যাটাস ঘিরে দল দুটির মধ্যে এক ধরনের টানাপোড়েনও তৈরি হয়।  

তখন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন,  ‘উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সংবিধানবিরোধী যে কাজটি করেছেন তাতে তিনি শপথের ভায়োলেশন করেছেন। কোনো রাগ বা বিরাগের বশবর্তী হয়ে কাউকে হুমকি দেওয়া বা কোনো বিষয়ে তার দায়িত্ব থাকাকালীন সময় এটা তার জন্য মানায় না। ’

জানা যায়, উপদেষ্টা পরিষদে থাকলেও দলের নেতাদের ওপর মাহফুজ আলমের প্রভাব রয়েছে। এ কারণে তার ওই ফেসবুক স্ট্যাটাসের পর দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতিও দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে, ইশরাক হোসেনের শপথ নেওয়ার আন্দোলন থেকে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। এদিকে বিএনপি তাদের দাবিতে বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের যে উপদেষ্টারা ‘সরাসরি বা পরোক্ষভাবে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত’, তাদের অব্যাহতি দিতে হবে।

নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতেও বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বিরোধ রয়েছে। বিএনপি শুরু থেকেই দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা বলে আসছে। জামায়াতে ইসলামী চাইছে, সংস্কার শেষে ‘যৌক্তিক সময়ের’ মধ্যে নির্বাচন। আর এনসিপি আগে চাইছে ইসি পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন।

এনসিপি-জামায়াত বিরোধ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু হয় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে। ওই রাতেই একে একে আন্দোলনে যুক্ত হয় ছাত্র শিবির, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক ও ছাত্র সংগঠন।

পরে অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করে শাহবাগে নিয়ে যাওয়া হয়। শাহবাগে জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমসহ বেশ কয়েকজন নেতার নাম ধরে বিতর্কিত কিছু স্লোগান ও জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় বাধা দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। পরে সেই বিষয়গুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে টানা আন্দোলনের মুখে শনিবার রাতেই জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। বৈঠকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের কথা জানানো হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের পর তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দেন।

সেখানে তিনি লেখেন, ৭১র প্রশ্ন মীমাংসা করতেই হবে। যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিস্তানপন্থা বাদ দিতে হবে। পাকিস্তান এ দেশে গণহত্যা চালিয়েছে। সহযোগীদের ইনিয়ে বিনিয়ে গণহত্যার পক্ষে বয়ান উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। জুলাইয়ের শক্তির মধ্যে ঢুকে স্যাবোটাজ করা বন্ধ করতে হবে। সাফ দিলে আসতে হবে।

পরে আরেকটি পোস্ট দিয়ে সেটি সরিয়ে ফেলেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তবে তার পোস্টের স্ক্রিনশট দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। একই মঞ্চে আন্দোলন করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সফলতা আসার পর কেন হঠাৎ জামায়াত শিবিরকে ইঙ্গিত করে এই ধরনের পোস্ট দেন মাহফুজ আলম, সেটি নিয়েও প্রশ্ন জামায়াত ও শিবিরের শীর্ষ নেতাদেরও। জামায়াত ও শিবির বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে একাধিক বৈঠকও করেছে। সেখানে কেউ কেউ মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবিও তোলেন।

এনসিপি-বিএনপি বিরোধ

৫-আগস্ট রাজনীতিতে পরবর্তী বিএনপি ছিল কিছুটা ধীর-স্থির ভূমিকায়। তবে দলের চেয়ারপারসনের চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর বিএনপির সব স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা দেখা যায়। একপর্যায়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ নিয়ে বিলম্ব করায় মাঠে নামেন বিএনপি সমর্থকেরা। পরে আদালতের আদেশের মাধ্যমে সেই আন্দোলনে পূর্ণতা আসে। ফলে এখন রাজনীতির মাঠে এনসিপি-জামায়াতকে ছাপিয়ে অনেকটা সামনে চলে এসেছে বিএনপি।

এই প্রেক্ষাপটে বিএনপি কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—অন্তর্বর্তী সরকারের যে উপদেষ্টারা ‘সরাসরি বা পরোক্ষভাবে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত’, তাদের অব্যাহতি, সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানকে অপসারণ এবং ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ গঠনের লক্ষ্যে অবিলম্বে একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি।

ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছিলেন তার সমর্থকেরা। টানা নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে পরে বুধবার থেকে মৎস্য ভবন, কাকরাইল ও যমুনার সামনের রাস্তায় অবস্থান করছিলেন তারা। হাইকোর্টে সেই রিট খারিজ করে দিলে বৃহস্পতিবার বিকেলে অবশ্য ৪৮ ঘণ্টার জন্য আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেন ইশরাক।  

ইসির সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে নির্বাচন কমিশনকে ‘বিএনপির দলীয় আখড়া’ বলে অভিহিত করেন এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘এই যে ইসি গঠন করা হয়েছে এটা কোনো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এখন অ্যাকটিভ করে না। এটা বিএনপির একটি দলীয় কার্যালয় হিসেবে উপস্থিত হয়েছে। এটা বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ’

বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে ‘ভারতের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী মুজিববাদী সংবিধান রাখতে চায়’ বলে অভিযোগ তোলেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনই হবে। আমরা যতদিন বেঁচে আছি এই ইসি পুনর্গঠন করেই ছাড়ব। ইসি পুনর্গঠন না হলে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন জাতীয় নাগরিক পার্টি করতে দেবে না।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের যে উপদেষ্টারা একটি নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত বলে সবাই জানে ও বুঝে; উপদেষ্টা পরিষদে তাদের উপস্থিতি সরকারের নির্দলীয় নিরপেক্ষ পরিচিতিকে ক্রমাগত প্রশ্নবিদ্ধ করে চলেছে বলেই সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাদের অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার বুধবারের বক্তব্য আবারও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাকে অব্যাহতি দিতে হবে।

সম্প্রতি ‘আওয়ামী লীগের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিএনপি চলে’—জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর এমন বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা যদি একত্রে প্রস্রাব করেন, তাহলে এই প্রস্রাবের তোড়ে ভেসে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়বা। এমন কোনো কথা বলবা না যে কথার দায়িত্ব নিতে পারবা না। বিএনপির সম্পর্কে যে অভিযোগ করছ, সেই অভিযোগের জবাবে বিএনপি যদি শুধু থুথু ফেলে, সেই থুথুর মধ্যে তোমাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। ’

হাসনাত আবদুল্লাহর উদ্দেশে দুদু বলেন, ‘কথা বলার আগে একটু চিন্তাভাবনা করে বলতে হয়। এভাবে কথা বললে তোমাদের সম্বন্ধে মানুষের ধারণা কোথায় যাচ্ছে, একটু চিন্তা করো। এমন কোনো কথা বলবা না যে কথার দায়িত্ব নিতে পারবা না। হিসাব করে চলা, বলা ও গণতন্ত্রের রীতিনীতি না মানলে ফ্যাসিস্ট হিসেবে চিহ্নিত হবা। এ রকম প্রতিহিংসামূলক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে রাজনীতি করা যাবে না। ’

জামায়াত-বিএনপি দূরত্ব

দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র ও নির্বাচনের সঙ্গী বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যেও তৈরি হয়েছে দূরত্ব। বিভিন্ন সময়ে নেতাদের কথায় তা স্পষ্ট। লন্ডনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের সাক্ষাতের পর সম্পর্কে দূরত্ব কমবে বলে মনে করা হয়েছিল। তবে দলীয় আদর্শ আর কৌশলের রাজনীতি তাদের দূরত্ব আরও বাড়িয়েছে।  

গত বছরের ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ। সেই থেকে রাজনীতির মাঠে নানা বিষয়ে এই দুই দলের মধ্যে স্পষ্ট মতবিরোধ দেখা দেয়। তৃণমূল থেকে শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যেও তা স্পষ্ট হয়। দুই দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা, সরকারের সংস্কার প্রস্তাব, নির্বাচনের দিনক্ষণ, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক, প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে দলীয় লোকের বদলি, পদায়ন, নিয়োগ, দখল-চাঁদাবাজির মতো বিষয় নিয়ে বিরোধ রয়েছে।

সবশেষ একটি ঘটনার দিকে তাকানো যাক। পাবনার আটঘরিয়ায় একটি কলেজের পরিচালনা পর্ষদের অভিভাবক সদস্যপদ নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা–কর্মীদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়েছে। বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষ একে অপরের ওপর হামলা, দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছে।

ভুল পদক্ষেপে অন্য কারো লাভ?

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে একটি অংশ দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার পক্ষে, তাই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। শুধু রাজনৈতিক দলগুলো নয়, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের মধ্যেও বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে পড়েছে। এই ঘোলাটে পরিস্থিতিতে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিতে পারে।  

তারা বলছেন, বিভক্তিতে পতিত আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনেরও আশঙ্কা রয়েছে। এমন বাস্তবতায় সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিএনপি ও এনসিপি কোনো একটি পক্ষের ভুল পদক্ষেপ পরিস্থিতি শোচনীয় করে তুলতে পারে। এতে চূড়ান্ত বিচারে লাভবান হবে গণঅভ্যুত্থানের পরাজিত ও পতিত শক্তি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইশরাক হোসেনের মেয়র পদের ইস্যুকে জাতীয় ইস্যুতে পরিণত করে বিএনপি শক্তি প্রদর্শনের রাজনীতি দেখাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দলটি বরাবারই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ দাবি করে আসছে। এনসিপি-বিএনপির মধ্যে মূলত শক্তির পরীক্ষা চলছে। তাদের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে বিভেদ বাড়াবে। এতে অস্থিরতাও বাড়বে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ‘পদত্যাগ করতে চান’ চান বলেও খবর সামনে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে আগের সব ‘বিভাজনমূলক বক্তব্য ও শব্দচয়নের’ জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। আরও কয়েকটি দল ঐক্যের কথা বলছে।

রাজনীতিবিদ-বিশ্লেষকরা কী বলছেন

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বাংলানিউজকে বলেছেন, ইশরাক হোসেনের মেয়র পদে শপথ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার সম্পূর্ণ প্রতিহিংসামূলক কাজ করছে। ভারত ও আওয়ামী লীগের মতো এখনো প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে। জনগণের নির্বাচিত সরকার ছাড়া পরিস্থিতি স্থিতিশীল করা সম্ভব নয়। তাই যত দ্রুত সম্ভব অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হবে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করে জাতিকে আশ্বস্ত করা।

রাষ্ট্রচিন্তক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, দেশের চলমান আইনশৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতির জন্য যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি। সে কারণে বিএনপিসহ জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা জরুরি। প্রয়োজনে নিজেদের ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। আশা করি, নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর হলে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাবে।

টিএ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।