ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

‘আ’লীগ সাধারণ সম্পাদকের কাজই বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলা’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২০
‘আ’লীগ সাধারণ সম্পাদকের কাজই বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলা’ অ্যাগ্রিকালচারিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর | ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাজই হলো বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলা, এমন মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আওয়ামী লীগ এক দলীয় শাসন ব্যবস্থায় বিশ্বাসী সরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, তারা ভিন্নমতকে সহ্য করতে চায় না। আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং লাগে। তারা আগে বলেছে বিএনপি নেই। বিএনপি নাকি একেবারে নিঃশেষ হয়ে গেছে। কিন্তু তাদের সাধারণ সম্পাদকের প্রত্যেক দিন একটাই কাজ হলো বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলা।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, যেখানে উনি (ওবায়দুল কাদের) বলছেন বিএনপি নাই, বিএনপি নাই। অথচ আপনি দেশের অর্থনীতি, আপনার দলকে কী করবেন সেটা না বলে শুধু শেখ হাসিনাকে নিয়ে কথা বলেন আর বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলেন। আসলে বিএনপি এত বেশি করে আছে, এত প্রবলভাবে আছে যে, আপনি প্রত্যেক দিন বিএনপিকে নিয়েই কথা বলেন।

শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে অ্যাগ্রিকালচারিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

‘কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের কৃষি সেক্টরে কৌশল শীর্ষক’ এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. একে ফজলুল হক ভূইয়া।

সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, একটা কথাও সত্য বলে না। সরকার যে ভাষ্য দেয় তার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। চতুর্দিকে দেখি সবাই কোভিডে আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন। আমার ভাই, চাচা-খালা-বোন সবাই আক্রান্ত হয়েছেন। খবর নিয়ে দেখবেন খুব কম পরিবার আছে যাদের কেউ না কেউ আক্রান্ত হয়নি। ঢাকা উত্তরের মেয়রের পরিবারের ১৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরও তারা বলেন, ১৯০০ জন আক্রান্ত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জেলাগুলোতে এখন কোনো টেস্ট হয় না। ওই যে ট্রাম্প যে বলেছে- ‘নো টেস্ট নো করোনা’।

তিনি বলেন, আজকে ভারত স্বীকার করে যে, তাদের প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ কমে গেছে, অথচ এরা বলে প্রবৃদ্ধি ১০ ভাগ বেড়ে গেছে। একটা সরকার কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন হলে জনগণের সাথে মিথ্যা কথা বলে। এর একমাত্র কারণ জনগণের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এই সরকার সম্পূর্ণভাবে জনবিচ্ছিন্ন, সে কারণে জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ব নেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে জিডিপির ১৮ শতাংশ আর কৃষি ক্ষেত্রে ১.৮ শতাংশ। কেন? কারণ হলো জনগণের প্রতি যদি স্টিম রোলার চালাতে হয় তাহলে তাদের এই পাবিলক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বাড়াতে হবে। তাদের খুশি রাখতে হবে। সবাইকে একটার পর একটা প্রণোদনা দিতে হবে, গাড়ি দিতে হবে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিশেষ বাহিনীর লোকদের গাড়ি কেনার জন্য ৩০ লাখ করে টাকা দিয়েছে। এখন উপ-সচিব পর্যন্ত গাড়ি কেনার টাকা পায়। সেই গাড়ি মেইনটেনেন্সের জন্য মাসে ৫০ হাজার টাকা পাবে। আর আমার কৃষক ভাই খাবার পাবে না। ভ্যান চালক খাবার পাবে না।

এক-এগারো আওয়ামী লীগ করিয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে তারা কোন মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেন। যারা জনগণের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নেয়, যারা জনগণের সাথে মিথ্যা বলে প্রতারণা করে, তারা বলে গণতন্ত্রের কথা। আওয়ামী লীগের কোনো অধিকার নেই গণতন্ত্রের কথা বলার। তারা হারিয়ে গেছে, দেউলিয়া হয়ে গেছে বলেই আজকে তাদের গায়ের জোরে বন্দুক-পিস্তল দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হয়। আসুন না নরমাল ফেয়ার ইলেকশন করুন। আপনারা কোথায় কী আছেন, জনগণের কাছে দরদি হয়ে গেছেন, সেটা দেখা যাবে। কেন আপনারা ২০১৮ সালে আগের রাতে নির্বাচন করে নিয়ে গেলেন। ২০১৪ সালে কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলো না, আপনারা ১৫৪ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করে কেন একটি জনবিচ্ছিন্ন সরকার প্রতিষ্ঠা করলেন? এটা শেষ হবে, শেষ হতে বাধ্য। আমাদের দেশের জনগণ কোনোদিন পরাজয় মেনে অধিকার হারিয়ে নিশ্চুপ থাকে না।

আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, অ্যাগ্রিকালচারিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের নেতা কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ইবরাহিম খলিল, গোলাম হাফিজ কেনেডি, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল ফারুক, অধ্যাপক আব্দুল করিম, শওকত আলী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২০
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।