ঢাকা, শনিবার, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৭

রাজনীতি

শাপলা প্রতীক না দেওয়া ইসির স্বেচ্ছাচারিতা-একরোখা মনোভাব: এনসিপি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৩০, অক্টোবর ৩, ২০২৫
শাপলা প্রতীক না দেওয়া ইসির স্বেচ্ছাচারিতা-একরোখা মনোভাব: এনসিপি এনসিপি

জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) শাপলা প্রতীক না দেওয়াকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ‘স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত ও একরোখা মনোভাব’ হিসেবে মন্তব্য করে ইসিকে তা থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম স্বাক্ষরিত ‘শাপলা প্রতীক বরাদ্দ প্রশ্নে এনসিপির ব্যাখ্যা’ শিরোনামে এক বার্তায় এ আহ্বান জানান।

বার্তায় নাহিদ ইসলাম শাপলা প্রতীক নিয়ে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যা যা হয়েছে তার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

শুক্রবার (০৩ অক্টোবর) বিকেলে এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক নাসিরউদ্দীন পাটোয়ারী তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নাহিদ ইসলাম স্বাক্ষরিত এই বার্তাটি শেয়ার করেন।

এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরে নাহিদ ইসলাম বলেন, আশা করি শাপলা প্রতীক দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন তাদের স্বেচ্ছাচারী ও একরোখা মনোভাব পরিত্যাগ করবে এবং এমনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে যাতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন ও সব দলের ক্ষেত্রে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহ জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়।

শাপলা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যা যা হয়েছে এনসিপির
নিচে ‘শাপলা প্রতীক বরাদ্দ প্রশ্নে এনসিপির ব্যাখ্যা’ শিরোনামে নাহিদ ইসলামের পুরো বার্তাটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

এতে বলা হয়, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বিগত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখে রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পর থেকেই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমাদের প্রতিনিধি দল নিয়মিত মতবিনিময়, বৈঠক ও যোগাযোগ রক্ষা করে আসছে। এনসিপির প্রতিনিধি দল এপ্রিল মাস থেকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নির্বাচনসংক্রান্ত আইন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন প্রক্রিয়া, নিবন্ধনের সময়সীমা, প্রবাসীদের ভোটাধিকারসহ নির্বাচনকেন্দ্রিক নানা বিষয় নিয়ে নিয়মিত আলোচনায় অংশ নিচ্ছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন বিবিধ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর সংশ্লিষ্ট বিধানে নতুন করে নির্বাচনী প্রতীক তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। নির্বাচন কমিশনের তালিকায় প্রতীক যুক্ত করতে কমিশন একটি কমিটি গঠন করে এবং সংশ্লিষ্ট কমিটি মোট ১৫০টি প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করে। উক্ত কমিটির একজন সদস্যের সঙ্গে এনসিপির একটি প্রতিনিধি দল গত ০৪ জুন ২০২৫ ইং তারিখে নির্বাচন কমিশনে বৈঠক করেন এবং বৈঠকে তিনি চূড়ান্ত তালিকায় ‘শাপলা’ প্রতীক থাকার বিষয়টি আশ্বস্ত করেন। এছাড়াও এ-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এরপর বিগত ২২ জুন ২০২৫ তারিখে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় কর্তৃক প্রকাশিত ১০ মার্চ ২০২৫ ইং তারিখের ১৭.০০.০০০০.০২৫.৫০.০৯২.২৪-৪৯ নং স্মারকের গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন দাখিল করে এবং দলের অনুকূলে ‘শাপলা’ প্রতীক সংরক্ষণের জন্য আবেদন জানায়।

জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি নির্বাচন কমিশনের কাছে ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করার সাথে সাথেই সারা দেশের আপামর জনসাধারণ এনসিপির প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’-কে চিনতে শুরু করে এবং গণমানুষের সঙ্গে এনসিপির শাপলা প্রতীককেন্দ্রিক এক অভূতপূর্ব আত্মিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। এছাড়াও ২০২৫ সালের জুলাই মাসে এনসিপি দেশজুড়ে ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করে এবং উক্ত কর্মসূচিতে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ এনসিপিকে আপন করে নেয় এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে খাল-বিল-জলাশয় থেকে শাপলা সংগ্রহ করে উক্ত কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এনসিপির প্রতীক হিসেবে শাপলাকে হৃদয় থেকে বরণ করে নেয়।

কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, হঠাৎ করে বিগত ০৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে এনসিপি জানতে পারে যে, নির্বাচন কমিশন শাপলাকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে তফসিলভুক্ত না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ‘শাপলা’ জাতীয় প্রতীক হওয়ায় নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে এটি বিধিমালার তফসিলভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানায় নির্বাচন কমিশন।

এরপর বিগত ১৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে এক বৈঠকে মিলিত হন, এবং বৈঠকের আলোচনায় এবং একটি লিখিত আবেদনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দেন যে, শাপলাকে জাতীয় প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনের প্রদত্ত ব্যাখ্যা আইনানুগভাবে সঠিক নয় এবং এই বিষয়ে কমিশনের গৃহীত অবস্থানের আইনি ভিত্তি নেই।  

উক্ত বৈঠকে এনসিপি স্পষ্ট করে জানায় যে, বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪(৩), The Bangladesh National Anthem, Flag and Emblem Order, 1972-এর ধারা ৪, Bangladesh National Emblem Rules, 1972-এর বিধি ৩ এবং অন্যান্য বিদ্যমান আইন অনুসারে ‘শাপলা’ প্রতীক তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করা এবং রাজনৈতিক দলকে বরাদ্দ দিতে কোনো আইনগত বাধা নেই।

১৯৭২ সালের অর্ডারের ৩য় তফসিল এবং ১৯৭২ সালের বিধিমালার পরিশিষ্ট-ক-তে জাতীয় প্রতীকের নকশা অঙ্কিত আছে। উক্ত নকশা অনুযায়ী জাতীয় প্রতীক হচ্ছে লালচে এবং হলুদ রঙের যুগল বৃত্তের ভেতরে লালচে এবং হলুদ রঙে অঙ্কিত পানির ওপর ভাসমান শাপলা ফুল, দুপাশে দুটি ধানের শীষ, উপরে তিনটি সংযুক্ত পাটপাতা যার ঠিক দুই পাশে দুটি করে চারটি তারকার সন্নিবেশ ও সামষ্টিক রূপ।

অর্থাৎ জাতীয় প্রতীকের নকশা এবং রং ১৯৭২ সালের অর্ডারের ৩য় তফসিল ও বিধিমালার পরিশিষ্ট-ক দ্বারা সুনির্দিষ্ট। তাছাড়া জাতীয় প্রতীকের শাপলাটি পানিতে ভাসমান, কিন্তু 'ভাসমান শাপলা' নামে কোনো প্রতীক তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার আয়োজন ছিল না।

শাপলা জাতীয় প্রতীকের চারটি স্বতন্ত্র উপাদানের একটি মাত্র উপাদান। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিকে জাতীয় প্রতীকের চারটি উপাদানের একটি উপাদান 'ধানের শীষ' বরাদ্দ দিয়েছে এবং বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডিকে আরেকটি উপাদান 'তারা' প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে। সেহেতু নির্বাচন কমিশন 'শাপলা'-কে প্রতীকের তালিকাভুক্ত করে রাজনৈতিক দলকে বরাদ্দ দিতে পারে।
এছাড়াও নির্বাচন কমিশন জাতীয় ফল 'কাঁঠাল'-কে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে এবং তৃণমূল বিএনপি নামের আরেকটি দলকে 'সোনালি আঁশ' প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে। সুতরাং 'শাপলা' জাতীয় ফুল হলেও দলের প্রতীক হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে আইনগত কোনো বাধা নেই। ধানের শীষ, শাপলা, পাটপাতা এবং তারকা আলাদা আলাদা করে চারটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়। আর এই চারের সমষ্টিই হচ্ছে জাতীয় প্রতীক, যা দুই রঙের দুটি বৃত্ত দ্বারা পরিবেষ্টিত।

জাতীয় প্রতীকের উপাদানের মধ্যে দুটি উপাদান ইতোমধ্যে দুটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে বরাদ্দকৃত। সর্বোপরি, ‘শাপলা’-কে প্রতীকের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নীতিগত সিদ্ধান্ত ভুল আইনি ভিত্তি ও বোঝাপড়ার ওপর দাঁড়িয়ে আছে।

এরপর এনসিপির প্রতিনিধিদল দফায় দফায় কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয় এবং কমিশনের কাছ থেকে উক্ত ১৩ জুলাই ২০২৫ তারিখের আবেদনের অগ্রগতি জানতে চাইলেও কমিশন উক্ত বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা ও অবস্থান স্পষ্ট করেনি। উল্লেখ্য, ১৩ জুলাইয়ের বৈঠকের পরবর্তী কোনো বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে শাপলা প্রতীক বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আইনি বাধার বিষয়টি আর উল্লেখ করা হয়নি, এবং সংবাদমাধ্যমেও আইনি বাধার বিষয়ে কমিশন কোনো বক্তব্য প্রদান করেনি।

অর্থাৎ শাপলাকে প্রতীক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত কোনো আইনি ভিত্তি দ্বারা গঠিত নয়, বরং এনসিপির প্রতি বিরূপ মনোভাব ও স্বেচ্ছাচারী দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ বলে প্রতীয়মান হয়।

পরবর্তীতে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি বিগত ০৩ আগস্ট ২০২৫ তারিখে কমিশনের কাছে চিঠির মাধ্যমে পার্টির অনুকূলে প্রতীক সংরক্ষণের ক্রম হিসেবে ১. শাপলা, ২. সাদা শাপলা এবং ৩. লাল শাপলা উল্লেখ করে এবং শাপলা প্রতীক হিসেবে দৃশ্যমান করার ক্ষেত্রে শাপলার ভিন্ন ভিন্ন ভার্সন বা আংশিক বিকৃত ভার্সন গ্রহণ করার ক্ষেত্রে এনসিপি সবসময় আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানায়। একই দিনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধি দল এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করে।

০৩ আগস্টের বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে শাপলাকে প্রতীক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক ও আশ্চর্যজনকভাবে ডিজিএফআইসহ আরও বেশ কিছু সংস্থার লোগোতে শাপলা রয়েছে এবং একারণে আইনগত কোনো বাধা না থাকলেও এনসিপিকে শাপলা বরাদ্দ না দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিশনের মনোভাবের কথা ব্যক্ত করেন।

কিন্তু উক্ত বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধি দল স্পষ্ট করে উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ পুলিশের লোগোর উল্লেখযোগ্য অংশ জুড়ে ধানের শীষ প্রতীক বর্তমান থাকা, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর লোগোর উল্লেখযোগ্য অংশ জুড়ে ঈগল প্রতীক বর্তমান থাকা এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের লোগোর পুরোটা অংশ জুড়ে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন এর আগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতীক হিসেবে ধানের শীষ, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রতীক হিসেবে ঈগল এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে।

কিন্তু শুধুমাত্র ডিজিএফআই-এর লোগোর সঙ্গে কিছুটা সাদৃশ্য থাকার কারণ দেখিয়ে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়া বৈষম্যমূলক এবং স্বেচ্ছাচারী। নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের মনোভাব প্রকাশের ফলে তাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয় এবং স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রীয় কোনো বাহিনীর কাছে নতি স্বীকার করছে কিনা এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করে ও তাদের কারো কারো কথায় প্রভাবিত হয়ে পরিচালিত হচ্ছে কিনা-এমন প্রশ্ন জনমনে তৈরি হয়।

উল্লেখ্য, এনসিপিকে যেন প্রতীক হিসেবে শাপলা বরাদ্দ না দেওয়া হয়-এ বিষয়ে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের তৎপরতা জনপরিসরে দৃশ্যমান এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত রয়েছে।

সম্প্রতি মাঠপর্যায়ে সব যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হওয়ার পর এবং নিবন্ধনের সব শর্ত প্রতিপালনের ফলশ্রুতিতে নির্বাচন কমিশন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। কিন্তু গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে কমিশনের সিনিয়র সচিব সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার প্রতীক তালিকায় শাপলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি এবং একারণে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া যাবে না।
নির্বাচন কমিশনের এমন স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত এবং উক্তরূপ বক্তব্য অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। নির্বাচন কমিশনের এহেন একরোখা কার্যকলাপে তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উত্থাপিত হয় এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন ও সব দলের ক্ষেত্রে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহ প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

সার্বিক বিবেচনায় আমরা আশা করি, নির্বাচন কমিশন ২০০৮ সালের নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে জাতীয় নাগরিক পার্টির অনুকূলে ১. শাপলা, ২. সাদা শাপলা এবং ৩. লাল শাপলা থেকে যেকোনো একটি প্রতীক বরাদ্দ করবে এবং এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে পূর্বের স্বেচ্ছাচারী ও একরোখা মনোভাব পরিত্যাগ করবে এবং এমনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে যাতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন ও সব দলের ক্ষেত্রে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহ জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়।

এমইউএম/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

রাজনীতি এর সর্বশেষ