ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিজিবি-বিজিপির পতাকা বৈঠক

সীমান্তে গোলা পড়ার ঘটনায় মিয়ানমারের দুঃখ প্রকাশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২২
সীমান্তে গোলা পড়ার ঘটনায় মিয়ানমারের দুঃখ প্রকাশ

কক্সবাজার: সীমান্তে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের গোলা বাংলাদেশের সীমান্তে এসে পড়া ও আকাশ সীমা লঙ্ঘনের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এ রূপ ঘটনা ঘটবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)।

রোববার (৩০ অক্টোবর) কক্সবাজারের টেকনাফে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে বিজিবি প্রতিনিধিদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে এমন প্রতিশ্রুতি দেয় বিজিপি।

রোববার সকাল ১০টায় টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ জেটি ঘাট সংলগ্ন বিজিবির সোদান রেস্ট হাউসে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠক চলে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।

বৈঠক শেষে বিকেল সাড়ে ৪টায় টেকনাফ বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নে অনুষ্ঠিত হয় প্রেস ব্রিফিং। প্রেস ব্রিফিংয়ে টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, বৈঠকের শুরুতে বিজিবি সীমান্তে গোলাগুলির বিষয়ে আলোচনা করে। সেখানে একাধিকবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গোলা পড়া ও হেলিকপ্টারের আকাশ সীমা লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানালে বিজিপির পক্ষে থেকে দুঃখ প্রকাশ করে এ রূপ ঘটনা আর ঘটবে না বলে প্রতিশ্রুত দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি-বিজিপি এক সঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। এছাড়া বৈঠকে অনুপ্রেবশ রোধ, মাদক চোরাচালান বন্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, বৈঠকে বিজিপির পক্ষে বলা হয়েছে মিয়ানমারের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে সীমান্তে বিভিন্ন অপরাধ করছে। বিজিবির

পক্ষ থেকে এ ঘটনা অস্বীকার করা হয়। বিজিবির পক্ষে জানানো হয়, কখনও কোনো সময় বাংলাদেশের ভূখণ্ড কোনো সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি।

একই সঙ্গে সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশ কোনো সহায়তা করেনি। ভবিষ্যতেও সন্ত্রাসী রোধে বাংলাদেশ কঠোর অবস্থানে থাকবে। এরূপ সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী মিলে মিশে কাজ করাতে ঐক্যবদ্ধ মত প্রকাশ করেছে।

বৈঠকে উপস্থিত বিজিবির রামুর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রউফ বলেন, পতাকা বৈঠকটি নিয়মমাফিক বৈঠকের একটি অংশ।

গত তিন মাস ধরে মিয়ানমার অভ্যন্তরে চলমান গোলাগুলিকে কেন্দ্র করে সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর পরিস্থিতিতে বৈঠক করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। সীমান্ত পরিস্থিতিতে সীমান্তের বাসিন্দারাও আতঙ্কিত হন। এ পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকে দু'দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ চলছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিজিবির পক্ষ থেকে বিজিপির কাছে একাধিকবার চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজিপি বৈঠকে বসতে রাজি হয় ও বৈঠক আন্তরিক পরিবেশে শেষ হয়েছে।

তিনি বলেন, রোববার সকাল ৯টায় টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ জেটি ঘাটে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দুটি স্পিডবোট পৌঁছায়। এর পর শুরু হয় বৈঠক। বৈঠকে বিজিবির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছে। বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার ও বিজিপির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন মিয়ানমারের পিউন ফিউর-১১ বর্ডার গার্ড পুলিশের অধিনায়ক কর্নেল ইয়ে ওয়াই শো।

বৈঠকটি নিয়মমাফিক অব্যাহত রাখার জন্য উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী রাজি হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২২
এসবি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।