ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৩ মে ২০২৪, ১৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সাগরে ড্রেজার ডুবি: ২০ ঘণ্টায়ও উদ্ধার হয়নি ৮ শ্রমিক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২২
সাগরে ড্রেজার ডুবি: ২০ ঘণ্টায়ও উদ্ধার হয়নি ৮ শ্রমিক ড্রেজার উল্টে নিখোঁজ শ্রমিকদের উদ্ধারে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা। ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের সাগরে থাকা ড্রেজার ডুবে নিখোঁজ আট শ্রমিক ২০ ঘণ্টা পরও উদ্ধার হয়নি।  

তবে ডুবুরি দল সকাল থেকেই নিখোঁজ শ্রমিকদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সে কর্মরত ফায়ার ফাইটার ওসমান গনি।

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি জানান, সাগরে জোয়ারের কারণে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে বিঘ্ন ঘটছে। ডুবুরিরা কাজ করছেন। নিখোঁজদের এখনও খোঁজ মেলেনি।  

নিখোঁজ শ্রমিক ইমাম মোল্লা ও শাহিন মোল্লার ভাই এনায়েত মোল্লা জানান, সোমবার রাত ১০টার দিকে আমার দুই ভাইসহ আমাদের একই এলাকার আট জন শ্রমিক ড্রেজার ডুবিতে নিখোঁজ হয়েছেন। সকালে আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে এলেও এখনও উদ্ধার তৎপরতা চোখে পড়েনি।  

তিনি বলেন, আমরা নিখোঁজ আটজনের দেহ দেখতে চাই। জীবিত না হলেও লাশ যেন পাই।

এদিকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য এভাবেই আকুল আবেদন জানান স্বজনরা।  

নিখোঁজ  শ্রমিকদের বাড়ি পটুয়াখালী:

ঘটনাস্থলে আসা কয়েকজন স্বজন জানান, নিখোঁজ সব শ্রমিকের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার পটুয়াখালী সদরের চরজোন ইউনিয়নে। তারা বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের বেপজা ও একটি কোম্পানির বালু সরবরাহ করতে সাগরে ড্রেজারে কাজ করতেন।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে নিখোঁজ হওয়ার পর এখনও সন্ধান মেলেনি শ্রমকিদের। তারা সবাই সাগরের মধ্যে রাখা বালু উত্তোলনের ড্রেজারে অবস্থান করছিলেন।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সাগরের জোয়ারের পানির উচ্চতা বাড়ার পাশাপাশি ঝড়ো হাওয়ায় ওই স্থানে রাখা বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন সৈকত-২ পানিতে ভেসে গিয়ে ডুবে যায়। ড্রেজারে অবস্থানরত শ্রমিক শাহীন মোল্লা (৩৮), ড্রেজার চালক ইমাম মোল্লা (৩২), মাহমুদ মোল্লা (৩২), আলামিন (২১), তারেক, আবুল বশর (৪৫) ও অজ্ঞাতপরিচয় দুইজন নিখোঁজ হন।  

বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত ড্রেজারে থাকা শ্রমিক আব্দুস সালাম বলেন, ড্রেজারে আমিসহ নয়জন শ্রমিক ছিলাম। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা শুনে সন্ধ্যা অনুমান ৭টার দিকে আমি ড্রেজার থেকে নেমে নিরাপদ স্থানে চলে আসি। বাকিরা ড্রেজারেই অবস্থান করছিলেন।  

ড্রেজার ম্যানেজার রেজাউল করিম জানান, ঘটনাস্থলে আরও ছয়টি ড্রেজার রাখা ছিল। সতর্কতা সংকেত পেয়ে কয়েকটি ড্রেজারের শ্রমিক নিরাপদ স্থানে চলে গেলেও দুর্ঘটনা কবলিত ড্রেজারের আট শ্রমিক নিরাপদ আশ্রয়ে যাননি।

সাহেরখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমার ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে বালু উত্তোলন কাজে নিয়োজত একটি ড্রেজারের আট শ্রমিক নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি শুনেছি। সোমবার বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সবাইকে সতর্ক অবস্থানে চলে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। তারপরও তারা কেন নিরাপদ আশ্রয়ে গেলো না তা বুঝতে পারছি না।  

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল অনেক চেষ্টা করছে। তবুও নিখোঁজ শ্রমিকদের উদ্ধার সম্ভব হচ্ছে না। ইতোমধ্যে ডুবুরি দল ড্রেজারের একটি চেম্বার কেটেছে তাতে কোনো দেহ মেলেনি। সাগরে জোয়ারের কারণে উদ্ধার তৎপরতায় বিঘ্ন ঘটছে।  

তিনি জানান, নৌ বাহিনীর মাধ্যমেও চেষ্টা করা হবে। উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২২
এসএইচডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।