ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কেরানীগঞ্জে দগ্ধ ৬ জনের কারোই আর ঘরে ফেরা হলো না

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২
কেরানীগঞ্জে দগ্ধ ৬ জনের কারোই আর ঘরে ফেরা হলো না

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা): কেরানীগঞ্জে আগুনে দগ্ধ একই পরিবারের ছয়জনের মধ্যে বেচে থাকা সর্বশেষ সদস্য ইয়াসিনের (১২) মৃত্যু হযেছে।

বৃহস্পতিবার (০৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিউটের আবাসিক সার্জন ডা. আইউব হোসেন।

ইয়াসিনের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে শেষ হলো পরিবারটির দগ্ধদের মৃত্যুর মিছিল। তাদের বাড়ির দিইটি ঘরে থাকা ছয় সদস্য দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও কারোই আর ফেরা হলো না। তাদের সেই বাড়িটি এখন মানুষ শূন্য।

এর আগে গত ৩০ আগস্ট কেরানীগঞ্জের জিনজিরার মান্দাইল মালোপাড়ার একটি বাসায় গ্যাসের আগুন থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ছয়জন দগ্ধ হন। ঘটনার দিন দুপুরে ৬০ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে মারা যায় শিশু মরিয়ম (৪), ০২ সেপ্টেম্বর বেলা ৩টার দিকে শাহাদত (২০) ও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মারা যান বেগম (৬০)। পরে ০৫ সেপ্টেম্বর ভোরে মারা যান ইদুনী ওরফে পান্না বেগম (৫০) এবং এদিন রাতে মারা যান সোনিয়া আক্তার (২৪)।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বেগম (৬০) তার মেয়ের ঘরের দুই নাতি শাহাদাৎ (২০) ও ইয়াসিনকে নিয়ে বাড়িটিতে ভাড়া থাকতেন। বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাবেন বলে সেখানে বেড়াতে আসেন ইদুনী বেগম, সোনিয়া ও মরিয়াম। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই ৩০ আগস্ট ভোর বেলা সেখানে আগুন ধরে যায়। দগ্ধদের হাসপাতালে নেওয়ার পর একে একে মারা যান পরিবারের সবাই।

বাড়ির মালিক বলছেন, কিছুদিন আগেও ওই ঘরটিতে আগুন লেগে একজনের হাত পুড়েছিল। বাড়িতে এতো ঘর থাকতে সেখানেই বার বার আগুন লাগে। ওই ঘরে তারা তান্ত্রিক আসর বসাতেন। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গ্যাসের চুলা অন্য এক ঘরে ছিল আর সেই ঘরে আগুনের তেমন কোনো নমুনা দেখা যায়নি। আমরা বিষয়টির সঠিক তদন্ত চাই।

প্রতিবেশী জাহানারা বেগম বলেন, বাড়িরর মুরুব্বি বেগম তান্ত্রিক কাজকর্ম করতো। বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের যাতায়াত ছিল সেই বাড়িতে। তার আসরে এখনও অনেক কিছু পড়ে আছে। তবে আমরা জানি না কিভাবে আগুন লাগছে। এটা ভেবে খারাপ লাগছে যে পরিবারটির কেউ আর বেঁচে রইলো না। অন্তত একজন বেঁচে থাকলেও অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা যেতো।

কেরানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন ম্যানেজার ফারুক আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আগুনের সূত্রপাত নিয়ে এখন পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। তবে এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ঘটনাটি মর্মান্তিক। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যতটুকু সম্ভব নিহতের পরিবারের পাশে দাড়িয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।