ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ 

ফজলে ইলাহী স্বপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৫ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২২
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ 

কুড়িগ্রাম: উজানের ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি এখনো বাড়ছে।

ফলে কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।  

প্রতি মুহুর্তে পানি বাড়ার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলার দেড় শতাধিক চর ও নদী সংলগ্ন গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ।  

শনিবার (১৮ জুন) সকালে সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

চরাঞ্চলের সড়কগুলো তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগের ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নীচু চরের বসতবাড়িগুলোতে পানি প্রবেশ করায় লোকজন আসবাবপত্র নিয়ে উঁচু জায়গায় স্থানান্তরিত হচ্ছে। অনেকেই ঘরের ভেতর চৌকি উঁচু করে অবস্থান নিয়েছে। দেখা দিয়েছে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও পশুখাদ্যের সংকট।

কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন চর ও নদী সংলগ্ন এলাকায় বন্যার পানি ক্লাশ রুমের ভেতর ও মাঠে পানি ওঠায় প্রায় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে।  

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, জেলায় প্রায় ৬ হাজার হেক্টর পাট, তিল, ভুট্রা ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। শুধু কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার নওয়াবশ, কদমতলা ও কাচির চরে কয়েকশ একর জমির পটলের ক্ষেত নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যা ও টানা বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে মরিচ ক্ষেত।  

কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার বাংলানিউজকে জানান, এখন পর্যন্ত রৌমারী উপজেলায় ৬ শত প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে ৪০০ টন খাবার মজুদ রয়েছে বলে জানান তিনি।  

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন বাংলানিউজকে জানান, ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পানি সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বাংলানিউজকে জানান, ইতোমধ্যে দুটি নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। বন্যা মোকাবিলায় আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। রৌমারী উপজেলায় ৮ শতাধিক পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এছাড়াও জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪২ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২২
এফইএস/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।