ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

তেঁতুলতলা মাঠে ঈদ জামাত, দ্বিগুণ খুশি বাসিন্দারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৩ ঘণ্টা, মে ৩, ২০২২
তেঁতুলতলা মাঠে ঈদ জামাত, দ্বিগুণ খুশি বাসিন্দারা তেঁতুলতলা মাঠে ঈদ জামাত। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বিগত প্রায় ৫০ বছরের ধারাবাহিকতায় এবারো রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে উদযাপিত হলো ঈদের জামাত। তবে এবার প্রায় হারিয়ে যেতে বসা মাঠটি ফিরে পাওয়ায় ঈদে বাড়তি আনন্দ যোগ করেছে এলকাবাসীর।

মঙ্গলবার (৩ মে) পূর্ব নির্ধারিত সময় ৮টার দিকে অনুষ্ঠিত হয় এবারের ঈদের জামাত। নির্ধারিত সময়ের আগেই মাঠটি প্রায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। স্থানীয়রাসহ ঈদ জামাতে যোগ দিয়েছেন আশ-পাশের বাসিন্দারাও।

নামাজ আদায় শেষে মুসল্লিরা প্রথা অনুযায়ী একে-অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। নিজেদের আলোচনায় বার বার উঠে এসেছে মাঠ ফিরে পাওয়ার বিষয়টি। এমন ঈদ উপহারের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তারা।

মাঠের পাশেই জামে মসজিদ। এলাকাবাসীর পক্ষে মাঠে ঈদের জামাতের আয়োজন করে এই মসজিদ কমিটি। জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ সফি উল্লাহ ঈদের নামাজে ইমামতি করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা রেদওয়ান বলেন, ছোটবেলা থেকেই এই মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করি। এখানে প্রত্যেক দিন শিশুরা খেলাধুলা করে, বয়স্করা আড্ডা দেয়, হাঁটাহাঁটি করেন। এছাড়া এলাকার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও এ মাঠে হতে দেখেছি।

কিন্তু হঠাৎ করে মাঠটিতে থানা ভবন নির্মাণের জন্য দখলে নেয় পুলিশ। কিন্তু বিষয়টি মেনে নিতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে মাঠটি ফিরিয়ে দিয়েছে। ঈদের আগ মুহূর্তে এটিই এই এলকাবাসীর জন্য সেরা ঈদ উপহার।

শহীদুল্লাহ নামের এক বাসিন্দা বলেন, মাঠটিকে সরকারিভাবে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা উচিত। যাতে ভবিষ্যতে কোন সংস্থা বা কেউ এখানে হস্তক্ষেপ না করতে পারে।

তিনি বলেন, কয়েক দিন আগেও যখন রাতারাতি দেয়াল তোলা হয়, তখনও আমরা শঙ্কায় ছিলাম এবার বোধ হয় এখানে আর ঈদের নামাজ আদায় করা হচ্ছে না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আমাদের কথা শুনে মাঠটি আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এই মাঠ ফিরে পাওয়ায় এবারের ঈদ আমাদের কাছে অবশ্যই বাড়তি আনন্দের।

এর আগে সোমবার (২ মে) ঈদ জামাতের জন্য মাঠটিকে প্রস্তুত করা হয়। মাঠ পরিষ্কার করে টানানো হয় শামিয়ানা। স্থানীয় বাসিন্দারা মাঠটিকে পরিষ্কার করে ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত করে তোলেন। সামনে বড় একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে সবাইকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানানো হয়।

স্থানীয়রা জানান, এবারই প্রথম পুরো মাঠজুড়ে শামিয়ানা টানানো হয়েছে। এর আগে কোনো ঈদের জামাতে পুরো মাঠে এমন আয়োজন হয়নি।

৩১ জানুয়ারি পরিত্যক্ত এই মাঠটি বরাদ্দ পেয়ে কাঁটাতারের বেড়া দেয় পুলিশ। এরপর সেখানে কলাবাগান থানার স্থায়ী ভবন নির্মাণ হবে জানিয়ে টানানো হয় সাইনবোর্ড। এরপর থেকেই শুরু হয় তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষার আন্দোলন।

২৪ এপ্রিল এই মাঠটিকে রক্ষার দাবিতে আন্দোলনকারী সৈয়দা রত্না ও তার ছেলেকে ধরে নিয়ে যায় কলাবাগান থানা পুলিশ। ১৩ ঘণ্টা আটকে রাখার পর প্রতিবাদের মুখে মধ্যরাতে তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

২৮ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জানান, মাঠটিতে আর কোনো নির্মাণ কাজ হবে না। জায়গাটি যেভাবে ছিল, সেভাবেই থাকবে। এটি আগের মতো এলাকাবাসী ব্যবহার করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫২ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০২২
পিএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।