ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

গহীন বনে খুবি উপাচার্য!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২২
গহীন বনে খুবি উপাচার্য! খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন

খুলনা: বৈশাখের এই খরতাপে পুড়ছে প্রকৃতি। ঘর থেকে বের হওয়াই দায়।

কিন্তু গবেষণার নেশা ও পেশা এমন বিষয় তা বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বেলায়।

আপাদমস্তক একজন শিক্ষক ও গবেষক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। আর এ কারণে এই তীব্র তাপদাহের মধ্যে তিনি গত দু’তিনদিন কক্সবাজারের চকরিয়ার গহীন বনে ঘুরছেন বৃক্ষরাজি নিয়ে গবেষণার কাজে।

বাংলানিউজের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তথ্য সম্পর্কে জানতে উপাচার্যকে ফোন দিয়ে জানা গেলো তিনি এই তীব্র তাপদাহের মধ্যে গবেষণার কাজে চকরিয়ায় গেছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস জানান, উপাচার্য সেখান থেকে অফিসের প্রয়োজনীয় খোঁজ-খবর নিচ্ছেন, নির্দেশনা দিচ্ছেন। আবার গবেষণার কাজে গহীন বনের ভেতর ঢুকে নানাভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন বৃক্ষরাজির। নানা প্রজাতির বৃক্ষরাজির ওপর গবেষণা তার নেশা ও পেশার মতোই। নিজে সরেজমিনে তিনি ডাটা গ্রহণসহ গবেষণার কাজ করেন।  

খান গোলাম কুদ্দুস জানান, সুন্দরবনের ওপর রয়েছে তার গবেষণার খ্যাতি। সুন্দরবনসহ দেশের বৃক্ষরাজি, পরিবেশ ও প্রতিবেশ তথা জীববৈচিত্র্য নিয়ে তার ১০৯টি গবেষণা নিবন্ধ আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তার প্রকাশিত পুস্তকের সংখ্যা ৩টি, অনুবাদ গ্রন্থ ২টি। দেশি ও বিদেশি সংস্থার অর্থায়নে ২৬টি গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। সময় পেলেই প্রায়শই তিনি গবেষণার কাজে ছুটে যান সুন্দরবন, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলে।

পরে বন নিয়ে গবেষণার ব্যাপারে ফোনে উপাচার্যের নিকট জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, জীববৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণার অনেক সুযোগ রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রকৃতি ও বনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এসব সুক্ষ্ম বিষয়গুলো আমাদের খুঁজে বের করা দরকার। প্রকৃতি আপনাকে প্রশান্তি দিতে পারে। প্রকৃতির নানা উপাদান আমাদের জীবন ধারণের প্রধানতম অনুসঙ্গ। বন, জলা, জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে গবেষণার বিভিন্ন উপকরণ।  

তিনি আরও বলেন, উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও মূলত আমি একজন শিক্ষক ও গবেষক। প্রায় ১ বছর উপাচার্যের দায়িত্ব পালনকালে গবেষণার কাজে অনেকটা বিঘ্ন ঘটছে ঠিকই, তবে তা সত্ত্বেও আমি ছুটির দিন ও বিশেষ প্রয়োজনে গবেষণার কাজে সুন্দরবনসহ দেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলে ছুটে যাই। একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও একজন শিক্ষকের প্রধান কাজ হচ্ছে গবেষণা করা। একটি দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিতে গবেষণার বিকল্প নেই।

এদিকে বিশ্ব বিজ্ঞানীদের নিয়ে র‌্যাংকিংকারী আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা সংস্থা এডি সাইন্টিফিক ইনডেক্স থেকে রোববার (২৪ এপ্রিল) প্রকাশিত র‌্যাংকিং তালিকায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রিতে প্রথম, দেশে ফরেস্ট্রি বিজ্ঞানীদের মধ্যে চতুর্থ, এশিয়ার বিজ্ঞানীদের মধ্যে ১৫৪ তম মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২১
এমআরএম/এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।