ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

২২ দিন পর কর্মস্থলে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২২
২২ দিন পর কর্মস্থলে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল

মুন্সিগঞ্জ: মুন্সিগঞ্জের স্কুলশিক্ষক হৃদয় মণ্ডল ১৯ দিন কারাভোগের পর ১০ এপ্রিল তিনি জামিনে কারামুক্ত হন। শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় তিনি কারাগার থেকে বেরিয়ে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নেন।

২২ দিনপর আজ তিনি নিজ কর্মস্থলে ফিরেছেন।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে বিনোদপুর রামকুমার উচ্চবিদ্যালয়ে আসেন তিনি। এ সময় পুলিশ বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

তবে সেদিন ঘটে যাওয়া ঘটনার তদন্ত কার্যক্রম এখনো চলমান। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) বিভাগ থেকে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হাই তালুকদারকে। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে এ অধ্যক্ষকে।

এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ আব্দুল হাই তালুকদার বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে আমাকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর আজ একদিন শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদন দাখিল করব।

এদিকে প্রিয় শিক্ষক ফিরে আসায় শিক্ষার্থীরা ও তার সহকর্মীরা উল্লাস প্রকাশ করেছেন। বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানায়, ‘হৃদয় মণ্ডল স্যার খুবই ভালো একজন শিক্ষক। তিনি ফিরে আসায় আমরা খুব খুশি হয়েছি। আমরা চাই স্যার আমাদের আগের মতো করে আবারও পাঠদান শুরু করুক। ’

হৃদয় মণ্ডলের সহকর্মী ও শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক শিক্ষক সজল সূত্রধর বলেন, হৃদয় স্যার ভালো মনের মানুষ ও ভালো শিক্ষক। তার পাঠদান পদ্ধতি আধুনিক। আমি সবসময় তার কাছে অনেক কিছু জানতে চাই। তিনি হাসিমুখে সবকিছু বুঝিয়ে দেন। তিনি গণিত খুব ভালো বোঝেন। গণিতের খুবই ভালো একজন শিক্ষক তিনি।

গত ২০ মার্চ বিনোদনপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ক্লাস চলাকালে ধর্মীয় বিষয়ে হৃদয় মণ্ডলের বিভিন্ন কথোপকথন মোবাইলে রেকর্ড করে শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা ধর্মের বিষয়ে আপত্তিকর কথা ও অবমাননার অভিযোগ তুলে ক্লাস শেষে শিক্ষকের বিচারের দাবিতে প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত আবেদন করে। ২২ মার্চ বিদ্যালয় চলাকালীন শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে।  

এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই শিক্ষককে থানায় নেয়। একইদিন বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আসাদ বাদী হয়ে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষককে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। ১৯ দিন হাজতে থাকার পর গত ১০ এপ্রিল জামিনে মুক্তি পান তিনি।

আরও পড়ুন
>>> বিজ্ঞান শিক্ষায় বাধা সৃষ্টি করতেই হৃদয় চন্দ্রকে ফাঁসানো হয়েছে
>>> হৃদয় মণ্ডলের জামিনে আর্টিকেল-১৯’র স্বস্তি, মামলা প্রত্যাহারের দাবি
>>> হৃদয় মণ্ডলের ঘটনার তদন্ত চলছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
>>> জামিন পেলেন শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।