ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ঈদে ৬ জোড়া বিশেষ ট্রেন চলবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২২
ঈদে ৬ জোড়া বিশেষ ট্রেন চলবে

ঢাকা: আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের ভ্রমণের সুবিধার্থে ছয় জোড়া বিশেষ ট্রেন পরিচালনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর রেল ভবনের সম্মেলনকক্ষে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রেলের টিকিট বিক্রি কার্যক্রমসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।



তিনি বলেন, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। প্রতিবন্ধী ও নারীদের জন্য বিশেষ কোচ ব্যবস্থা থাকবে। একজন যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি টিকিট নিতে পারবেন। ছয় জোড়া ট্রেনের মধ্যে চাঁদপুর স্পেশাল-১, চাঁদপুর স্পেশাল-২, দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল, খুলনা স্পেশাল, সোলাকিয়া স্পেশাল-১ ও সোলাকিয়া স্পেশাল-২ রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম তিনটি ঈদের আগে ২৯ এপ্রিল ০১ মে পর্যন্ত এবং ঈদের পর ০৪ মে থেকে ০৮ মে পর্যন্ত চলবে। খুলনা-ঢাকা-খুলনা ২৯ এপ্রিল থেকে ০১ মে এবং সোলাকিয়া স্পেশাল ১ ও ২ ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরববাজার এটা ঈদের দিন চলবে।  

মন্ত্রী বলেন, ঈদুল ফিতরের সাত দিন আগে ২৫ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর অফ-ডে থাকবে না এবং ঈদ পরে যথারীতি অফ-ডে কার্যকর করা হবে। অফ-ডে প্রত্যাহারের ফলে অতিরিক্ত ৯২টি আন্তঃনগর ট্রেন বিশেষ টিপ হিসাবে পরিচালিত হবে। ঈদুল ফিতরের দিন কোন আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।

তিনি বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতর সম্ভাব্য তারিখ ৩ মে ধরে নিম্নোক্ত সিডিউল মোতাবেক ঈদের অগ্রিম টিকিট বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ২৩ এপ্রিল থেকে বিক্রি করা হবে। চলবে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত।

তিনি আরও বলেন, ‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’ স্লোগান বাস্তবায়নে টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে যাত্রীদের এনআইডি/জন্মসনদ ফটোকপি কাউন্টারে প্রদর্শনপূর্বক টিকিট ক্রয় করতে হবে। ইন্টারনেটে ই-টিকেটিংয়ের মাধ্যমে ঈদ অগ্রিম টিকিট বিক্রি সকাল ৮টায় শুরু হবে।

মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রে একটি করে নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য কাউন্টার থাকবে। প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনে শুধুমাত্র নারী ও প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য একটি করে স্বতন্ত্র কোচ সংযোজন করা হবে। একজন যাত্রী একসঙ্গে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট ক্রয় করতে পারবে। ঈদের অগ্রিম বিক্রিত টিকিট ফেরত নেওয়া হবে না। স্পেশাল ট্রেনের কোনো টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাবে না। শুধুমাত্র স্টেশন কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হবে। ঢাকা (কমলাপুর) স্টেশনে যাত্রীর চাপ কমানোর লক্ষ্যে ঢাকা শহরের পাঁচটি কেন্দ্র থেকে টিকিট বিক্রি করা হবে। সেগুলো- কমলাপুর, ঢাকা বিমানবন্দর, তেজগাঁও, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ও ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন)।

তিনি বলেন, ঢাকা থেকে বর্হিগামী ট্রেনের প্রতিদিন মোট আসন সংখ্যা হবে ২৬ হাজার ৬শ ৬৩টি। এর অর্ধেক টিকিট কাউন্টার এবং অর্ধেক টিকিট অনলাইনে বিক্রি হবে। ঢাকা থেকে দুটি ঈদ স্পেশাল ট্রেনের আরও এক হাজার ৫শ আসনের টিকিট কাউন্টার থেকে বিক্রি হবে।  

মন্ত্রী বলেন, ঈদে ফেরত টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১ মে থেকে চলবে ৪ মে পর্যন্ত। ২, ৩ ও ৪ মে এর অগ্রিম টিকিট বিক্রি চাঁদ দেখার ওপর নির্ধারণ করা হবে। ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ৯২টি (পাহড়াতলী ওয়ার্কশপ থেকে ৭৩টি ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ১৯টি) যাত্রীবাহী কোচ সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ২১৮টি (পূর্বাঞ্চল ১১৬টি ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে ১০২টি) লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ট্রেনে ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ঢাকা, ঢাকা বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী, খুলনাসহ সব বড় বড় স্টেশনে জিআরপি, আরএনবি, বিজিবি ও স্থানীয় পুলিশ এবং র‌্যাবের সহযোগিতায় টিকিট কালোবাজারী প্রতিরোধে সার্বক্ষণিক প্রহরার ব্যবস্থা থাকবে। তাছাড়া জেলা প্রশাসকদের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, চলন্ত ট্রেনে, স্টেশনে বা রেললাইনে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধকল্পে আরএনবি, জিআরপি ও রেলওয়ে কর্মচারীদের কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে। এছাড়া র‌্যাব, বিজিবি, স্থানীয় পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় সহযোগিতায় নাশকতাকারীদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ঈদের তিনদিন আগে থেকে কনটেইনার ও জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন ছাড়া সব গুডস ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।

মন্ত্রী বলেন, ঈদের আগে ও পরের পাঁচদিন ঢাকা, ঢাকা বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে যেকোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণপূর্বক পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রয়োজনে এবং ঢাকা বিমানবন্দর ও জয়দেবপুর স্টেশনে আন্তঃজেলা আন্তঃনগর ট্রেন পরিচালনায় জরুরি সমস্যা সমাধানের সুবিধার্থে কর্মকর্তা নিয়োজিত করার ব্যবস্থা করা হবে।  

তিনি আরও বলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তারা কর্তৃক গঠিত ভিজিলেন্স টিম টিকিট বিক্রয়ের মনিটরিং করবেন। ঈদ উপলক্ষে ঈদের ১০ দিন আগে এবং ঈদের পরে ১০ দিন পর্যন্ত ট্রেনে সেলুন সংযোজন করা হবে না।

যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে নিয়োজিত করতে রিলিফ ট্রেনগুলো স্ব-স্ব অবস্থানে প্রস্তুত রাখা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২২
এসএমএকে/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।