ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকদের ভিড়

সুনীল বড়ুয়া,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২২
কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকদের ভিড়

কক্সবাজার: টানা তিনদিনের ছুটিতে কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। গরমের তীব্রতা উপেক্ষা করে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকেরা আনন্দমুখর সময় কাটাচ্ছেন।

কেউ সাগরের লোনা জলে গা ভাসাচ্ছেন, কেউবা বালিয়াড়িতে দৌঁড়ঝাপ করছে আবার কেউ কেউ আশপাশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভ্রমণ করছেন। তবে পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, তিনদিনের টানা ছুটিতে লাখো পর্যটক সমাগম হবে—এমন প্রত্যাশা থাকলেও পর্যটক সমাগম আশানুরূপ হয়নি।

তবে কক্সবাজার ভ্রমনে আসা পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে সমুদ্র সৈকতসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, টানা ছুটিতে সৈকত এলাকা, হোটেল মোটেল জোন, হিমছড়ি, ইনানিসহ আশপাশের পর্যটন স্পটগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন।

পর্যটকদের ভ্রমণ যেন নিরাপদ এবং আনন্দদায়ক হয়, সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানান ট্যুরিস্ট পুলিশের এই কর্মকর্তা।

জাতীয় শিশু দিবস, সাপ্তাহিক ছুটি ও পবিত্র শবেবরাতের ছুটি যোগ হয়ে ১৭ থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত টানা তিনদিনের সরকারি ছুটিতে বিশ্বের কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন হাজারো পর্যটক।



লক্ষ্মীপুর থেকে সপরিবারে কক্সবাজার বেড়াতে আসেন ফয়সল হাসান রুমেল।  তিনি বলেন, শুক্রবার ভোরে পৌঁছে কলাতলীর একটি হোটেলে উঠেছি। দুপুরে প্রচণ্ড গরমে সমুদ্রে নামতে ইচ্ছা করেনি। তবে বেশ ভালোই লাগছে।

রুমেলের স্ত্রী ফাহমিদা হোসেন বলেন, এ পর্যন্ত চারবার এখানে এসেছি। খারাপ লাগেনি কখনো। সত্যি কথা কি, সমুদ্র সৈকতে এলেই মনটা ভালো হয়ে যায়। খুব ভালো সময় কাটাচ্ছি আমরা।

রোহিঙ্গা শিবিরে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করেন রাঙ্গামাটির মেয়ে দীপা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ইচ্ছে করে প্রতিদিন বিকেলটা এখানে কাটাই। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে হয়ে ওঠে না। তাই সুযোগ পেলেই ছুটে আসি বিচে।

একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত উন্নয়নকর্মী নুরুল আমিন নান্নু বলেন, বাড়ি রামুতে হলেও চাকরির কারণে পরিবার নিয়ে থাকতে হয় উখিয়ায়। তবুও সুযোগ পেলেই সৈকত ভ্রমণে ছুটে আসি। কক্সবাজার সৈকতটা এমন, এখানে হাজার বার এলেও মন ভরে না।

ঢাকার তেজগাঁও কলেজের ছাত্র মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকতে থাকতে আর ভালো লাগছিল না। তাই এখানে ছুটে আসা। বন্ধুদের সঙ্গে ভ্রমণে এসে খুব ভালো সময় কাটছে। গরম চলে আসাতে আবহাওয়া প্রতিকূলে চলে গেছে। তবে সাগরে গোসল করতে ভালোই লাগছে।

তবে আশানুরূপ পর্যটক না আসায় কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। সুগন্ধা পয়েন্টের হোটেল কক্সভিউর জেনারেল ম্যানেজার ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, টানা ছুটিতে অনেক পর্যটক সমাগম হয়েছে, তবে আশানুরূপ নয়। এরকম ছুটির সময়ে হোটেলে প্রায় শতভাগ বুকিং থাকলেও এবার হয়েছে ৫০-৬০ ভাগ। প্রধান সড়কের কিছু হোটেল বাদে বেশির ভাগ হোটেলে একই অবস্থা। টানা ছুটি পড়লেও শবে বরাত পড়াতে পর্যটক সমাগম তুলনামূলক কম বলে ধারণা করেন তিনি।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বাংলানিউজকে বলেন, কক্সবাজার ভ্রমণে এসে কোনো পর্যটক যেন হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য জেলা প্রশাসনের একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম মাঠে থাকে। বিশেষ বিশেষ দিনগুলো এ ধরনের তৎপরতা আরও বাড়ানো হয়।

তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনের টিম ছাড়াও ট্যুরিস্ট পুলিশ পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে কাজ করে। আমরা চাই কক্সবাজার ভ্রমণে আসা প্রতিটি পর্যটক খুব ভালো স্মৃতি নিয়ে এখান থেকে ফিরে যাক।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২২
এসবি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।