ঢাকা, বুধবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২২ মে ২০২৪, ১৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

চকরিয়ায় ৪ ভাইয়ের পর আহত আরও এক ভাইয়ের মৃত্যু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২২
চকরিয়ায় ৪ ভাইয়ের পর আহত আরও এক ভাইয়ের মৃত্যু

কক্সবাজার: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় পিকআপ ভ্যানচাপায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে চারজন ঘটনাস্থলে ও একজন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে মারা গেছেন।

মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ধারণা করা হচ্ছে, চালক ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। তবে পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ এটি পরিকল্পিত একটি হত্যাকাণ্ড। তারা সাত ভাই ও এক বোন সড়কের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।

দুর্ঘটনায় আহত বাকি দুই ভাই ও বোন। এদের মধ্যে একজন অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহত একজন মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতাল। তবে পায়ে সামান্য আঘাত পেলে বোন বাড়িতেই রয়েছেন।

এদিকে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এটি পরিকল্পিত একটি হত্যাকাণ্ড। কারণ তারা সড়কের ওপর কেউ দাঁড়িয়ে ছিলেন না। হতাহতরা সড়ক থেকে অন্তত দুই ফুট দূরে এক কাতারে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু চকরিয়া থেকে কক্সবাজারগামী সবজিবোঝাই একটি অজ্ঞাত পিকআপ ভ্যান তাদের মুহূর্তের মধ্যে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হতাহতদের মধ্যে সবাই একই পরিবারের সদস্য। নিহত পাঁচজনই একে অপরের ভাই।

নিহত পাঁচজন হলেন- চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট স্টেশন এলাকার হাসিনা পাড়ার মৃত সুরেশ চন্দ্র শীলের পাঁচ ছেলে অনুপম শর্মা (৪৫), নিরূপম শর্মা (৪৩), দীপক শর্মা (৪০), চম্পক শর্মা (৩৮) ও শরণ শর্মা (২৬)। আহতরা হলেন- রক্তিম শর্মা (৩০), প্লাবন শর্মা (২৮) ও বোন মুন্নী শর্মা (৩৪)।

নিহত ব্যক্তিদের এক স্বজন জানান, নিহত পাঁচ ভাইয়ের বাবা সুরেশ চন্দ্র শীল মারা যান গত ১০ দিন আগে। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান হওয়ার জন্য সব প্রস্তুতিও নেওয়া হয়। তারা ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাদের প্রয়াত বাবার আত্মার শান্তি কামনায় ভোরে বাড়ির কাছের নির্জন এলাকায় ধর্মীয় কার্য সম্পাদন করতে যান। তখন সবাই ছিলেন এক পোশাকে (সাদা কাপড়ে)। সেখানে তারা মহাসড়কের পূর্বাংশে সড়ক থেকে অন্তত দুই ফুট দূরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে কারো জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে চকরিয়া থেকে কক্সবাজারমুখী একটি সবজি বোঝাই পিকআপ ভ্যান তাদের চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর বাংলানিউজকে বলেন, মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় একসঙ্গে এক পরিবারের পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় পুরো ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তিদের দাফন-কাফনের জন্য নগদ অর্থ সহায়তা করেছি।

মহাসড়কের মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শাফায়েত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘যখন দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয় তখন ছিল ভোর এবং দুর্ঘটনার স্থানটি অনেকটাই নির্জন এলাকা। তাই ঘাতক পিকআপ ভ্যানটিকে এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে সেটি শনাক্ত এবং ঘাতক চালককে আটক করার চেষ্টা চলছে।

 উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বাংলানিউজকে বলেন, বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দিনে একসঙ্গে এত সদস্যের প্রাণহানির ঘটনা সত্যিই বেদনাদায়ক। আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হবে। ‘এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান ইউএনও জেপি দেওয়ান।

আরও পড়ুন>>

>>>চকরিয়ায় পিকআপভ্যান চাপায় ৪ ভাই নিহত

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২২
এসবি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।