ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

একই কারখানায় ২ বছরে তিন বার আগুন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯
একই কারখানায় ২ বছরে তিন বার আগুন ‘প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’র কারখানায় আগুন। ছবি: বাংলানিউজ

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা): কেরানীগঞ্জ উপজেলার চুনকুটিয়া এলাকায় অবস্থিত ‘প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’র কারখানাটিতে গত দুই বছরে তিনবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যার দুটোই ঘটেছে চলতি বছরে। প্রতিটি অগ্নিকাণ্ড ছিল ভয়াবহ। 

২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর কারখানাটিতে প্রথম অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এরপর চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো আগুন লাগে।

তবে ওই দু’টি অগ্নিকাণ্ডে কারখানার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।  

সর্বশেষ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) তৃতীয়বারের মতো আগুন লাগে কারখানাটিতে। এ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১০ হাজার স্কয়ার ফিট কারখানাটির ভেতরের সব মালামাল ও যন্ত্রাংশ পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডের ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা একজনের মরদেহ উদ্ধার করে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় প্রায় ৩৫ জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এলাকাবাসীর দাবি এর আগে আরও একবার এ কারখানাটিতে আগুন লেগেছিল।  

কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন জানায় এ কারখানাটি অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে। অচিরেই এসব অবৈধ কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।  

কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত দেবনাথ বলেন, খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পেরেছি কারখানাটির কোনো অনুমোদন ছিল না। কেবল মাত্র ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে তারা ব্যবসা পরিচালনা করছিল। ফের যেনো এ কারখানা চালু করতে না পারে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা যায়, বুধবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকার ‘প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’র কারখানায় আগুন লাগে।  

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অগ্নিদগ্ধরা।  ছবি: বাংলানিউজঘটনার সময় শ্রমিকরা কাজ করছিলেন। তখন হঠাৎই গ্যাস রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ইঞ্জিনিয়ার এসে শ্রমিকদের আগুন লাগার খবর দেয়। এরপর শ্রমিকরা পানি ও কারখানায় থাকা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে তখনই তারা দগ্ধ হয়।

এই অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন একজন। এছাড়া অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ৩৫ জন। এদের মধ্যে একজন জাকির হোসেন (২২)। বিগত চার বছর ধরে তিনি এই কারখানায় কাজ করছেন। মাসিক বেতন ১২ হাজার টাকা। তিনি চুনকুটিয়া এলাকার আবুল হোসেন মাতব্বরের ছেলে। অগ্নিকাণ্ডে জাকিরের মুখমণ্ডল, দুই হাত ও দুই পা পুড়ে গেছে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ওই কারখানায় দুই শিফটে মোট তিনশ’ শ্রমিক কাজ করে। সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৫০ জন, বাকিরা রাতে। কারখানায় মূলত প্লাস্টিকের ওয়ানটাইম প্যাকেট বানানো হয়।  

তিনি আরও বলেন, আমাদের গ্যাস রুমে ৩৪ কেজি ওজনের মোট আটটি সিলিন্ডার থাকে। সেই সিলিন্ডার প্লাস্টিক ফোলানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া রুমের বাইরে আরেকটি গোডাউন আছে। যেখানেও ৩০ থেকে ৪০টি গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ করে রাখা হয়। তবে সেগুলোও বিস্ফোরিত হয়েছে কিনা জানি না।



আরো পড়ুন>
**
আগুনের সূত্রপাত ‘গ্যাস রুমে’, নেভাতে গিয়েই দগ্ধ শ্রমিকরা
***কেরানীগঞ্জে আগুন: কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ক্ষতি বেশি
***কেরানীগঞ্জে প্লাস্টিক কারখানার আগুনে নিহত ১, দগ্ধ ৩২
***কেরানীগঞ্জে অগ্নিকাণ্ড: অনুমোদন ছিল না ওই কারখানার


বাংলাদেশ সময়: ২৩০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।