ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আগুনের সূত্রপাত ‘গ্যাস রুমে’, নেভাতে গিয়েই দগ্ধ শ্রমিকরা

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯
আগুনের সূত্রপাত ‘গ্যাস রুমে’, নেভাতে গিয়েই দগ্ধ শ্রমিকরা

ঢাকা: কেরানীগঞ্জের প্লাস্টিক কারখানায় লাগা আগুন নেভাতে গিয়েই অধিকাংশ শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে এমন তথ্যই জানায় অগ্নিদগ্ধ শ্রমিকেরা।

জানা যায়, ঘটনার সময় শ্রমিকরা কাজ করছিলেন। তখন হঠাৎই গ্যাস রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

পরে ইঞ্জিনিয়ার এসে শ্রমিকদের আগুন লাগার খবর দেয়। এরপর শ্রমিকরা পানি ও কারাখানায় থাকা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে তখনই তারা দগ্ধ হয়।

বুধবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকার ‘প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’র কারখানায় আগুন লাগে। এই অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন একজন। এছাড়া অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ৩২ জন।

এদের মধ্যে একজন জাকির হোসেন (২২)। বিগত চার বছর ধরে তিনি এই কারখানায় কাজ করছেন। মাসিক বেতন ১২ হাজার টাকা। তিনি চুনকুটিয়া এলাকার আবুল হোসেন মাতব্বরের ছেলে। অগ্নিকাণ্ডে জাকিরের মুখমণ্ডল, দুই হাত ও দুই পা পুড়ে গেছে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ওই কারখানায় দুই শিফটে মোট তিনশ’ শ্রমিক কাজ করে। সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৫০ জন, বাকিরা রাতে। কারখানায় মূলত প্লাস্টিকের ওয়ানটাইম প্যাকেট বানানো হয়।  

‘ঘটনার সময় আমি প্যাকেজিং সেকশনে কাজ করছিলাম। তিন থেকে চার মাস হয় আমাদের এক নতুন ইঞ্জিনিয়ার জয়েন করেছেন। নামটা মনে পড়ছে না। তিনি গ্যাস রুমে সিলিন্ডার মেরামত করছিলেন। তখনই আগুন লাগে। ওই ইঞ্জিনিয়ারই দগ্ধ হয়ে হঠাৎ বলে আগুন লেগেছে। তখন আমরা দ্রুত আগে নারী শ্রমিকদের বের করে দেই। এরপরে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে পানি ও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। তবে এর আগেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে অধিকাংশ শ্রমিক দগ্ধ হয়েছে। ’

শ্রমিকরা যদি আগুন নেভাতে উদ্যোগ না নিত, তাহলে এত লোক দগ্ধ হতো না বলেও তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, আমাদের গ্যাস রুমে ৩৪ কেজি ওজনের মোট আটটি সিলিন্ডার থাকে। সেই সিলিন্ডার প্লাস্টিক ফোলানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া রুমের বাইরে আরেকটি গোডাউন আছে। যেখানে ৩০ থেকে ৪০টি গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ করে রাখা হয়। সেগুলোও বিস্ফোরিত হয়েছে কিনা জানি না।

‘অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ও পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করার আগেই গ্যাসের কারণে আগুনের ফুলকি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতেই শ্রমিকরা দগ্ধ হয়। যখন ওই ইঞ্জিনিয়ার আগুন লাগার খবর জানিয়েছে, তখনই শ্রমিকরা বের হয়ে গেলে এতজন দগ্ধ হতো না। এছাড়া ওই ইঞ্জিনিয়ারও দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে। ’

মেহেদী হাসান (২২) নামে আরেক শ্রমিক বাংলানিউজকে বলেন, ওই গ্যাস রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত। ঘটনার সময় আমি ডেলিভারি সেকশনে কাজ করছিলাম। হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত। এরপর আরও কিছুই মনে নেই।

আরও পড়ুন>>>
***কেরানীগঞ্জে আগুন: কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ক্ষতি বেশি
***কেরানীগঞ্জে প্লাস্টিক কারখানার আগুনে নিহত ১, দগ্ধ ৩২
***কেরানীগঞ্জে অগ্নিকাণ্ড: অনুমোদন ছিল না ওই কারখানার

বাংলাদেশ সময়: ২২১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
এজেডএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ