ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

সন্ত্রাসীদের সঙ্গে লড়েও স্বামীকে বাঁচাতে পারলেন না

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৬ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৯
সন্ত্রাসীদের সঙ্গে লড়েও স্বামীকে বাঁচাতে পারলেন না রিফাত শরীফকে কোপানোর সময়ের কয়েকটি ছবি।

বরগুনা: বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফ (২২) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে সাবেক স্বামী নয়ন বন্ড ও তার সহযোগীরা।

বুধবার (২৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে।  গুরুতর আহত রিফাতকে প্রথমে বরগুনা সদর হাসপাতাল ও পরে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল (শেবাচিম) কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়।



এদিকে ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। পুলিশও জানিয়েছে, ওই স্থানে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করা গেছে। এদের মধ্যে নয়ন বন্ড, তার বন্ধু রিশান ফরাজী ও রাব্বি আকন নামে তিনজনের নাম জানা গেছে।  

জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম রণি জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলেজের সামনে দু'জন যুবক রিফাতকে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এসময় রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি তাদের থামানোর চেষ্টা করেন। এক মিনিটের মতো সময় দুই যুবক রিফাতকে উপর্যুপরি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে চলে যায়।

এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় স্ত্রী মিন্নি রিকশায় করে রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রিফাতকে বরিশালের শেবাচিম হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকেরা। সেখানে বিকেল ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন রিফাতের মৃত্যু হয়।

রিফাত বরগুনা সদর উপজেলার ৬ নম্বর বুড়িরচর ইউনিয়নের মাইঠা লবণগোলা এলাকার দুলাল শরীফের ছেলে।  

অভিযুক্ত নয়ন বন্ডের মা সাহেদা বেগম জানান, ৭ মাস আগে স্থানীয় কাজী অফিসে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে তার ছেলে নয়নের সঙ্গে মিন্নির বিয়ে হয়। পরে মিন্নির সঙ্গে রিফাতের সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারেন নয়ন। এ নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। একপর্যায়ে বিচ্ছেদে রূপ নেয় তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক। মাস দু'য়েক আগে মিন্নি নয়নকে ডিভোর্স দেন।  এর কিছুদিন পরই রিফাতকে বিয়ে করেন তিনি।

নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ জানান, দুই মাস আগে রিফাত পুলিশ লাইন এলাকার কিশোরের মেয়ে আয়শা আক্তার মিন্নিকে বিয়ে করে। নিজের সাবেক স্ত্রী দাবি করে পশ্চিম কলেজ সড়কের নয়ন নামে এক যুবক প্রায়ই মিন্নিকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। এক পর্যায়ে ফেসবুকে আপত্তিকর ছবিও পোস্ট করে সে। এ নিয়ে রিফাতের সঙ্গে নয়নের বিরোধিতা তৈরি হয়। এর জেরে সকালে রিফাতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে যায়। এ সময় নয়নের সঙ্গে রিশান ফরাজী ও রাব্বি আকন নামে তার দুই সহযোগীও ছিলো।

বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জড়িত নয়নসহ বাকিদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৯/আপডেট: ০০৩৫ ঘণ্টা
এনটি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।