ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুদকে সময় চেয়েছেন ‘টাকার কুমির’ আবজালের স্বজনেরা 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৯
দুদকে সময় চেয়েছেন ‘টাকার কুমির’ আবজালের স্বজনেরা 

ঢাকা: ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে টাকার কুমির বনে যাওয়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাময়িক চাকরি হারানো আবজাল হোসেনের ভাই ও শ্যালককেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে তারা তাতে সাড়া না দিয়ে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন।

১৬ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবরক্ষক আবজাল হোসেনের দুই ভাই ও তিন শ্যালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুদক। স্বজন হওয়ার পাশাপাশি তারা সবাই আবজালের সহকর্মীও।

‘সিন্ডিকেট’ করে অধিদফতরের দরপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে কয়েকশ’ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অর্থপাচার করেছেন বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।  

অভিযুক্তরা হলেন- আবজালের ভাই ও ফরিদপুর টিভি হাসপাতালের ল্যাব সহযোগী মো. বেলায়েত হোসেন ও মো. লিয়াকত হোসেন, আবজালের তিন শ্যালক স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাখালী কার্যালয়ের গাড়ি চালক মো. রফিকুল ইসলাম, একই অফিসের উচ্চমান সহকারী মো. বুলবুল ইসলাম ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অফিস সহকারী মো. শরিফুল ইসলাম।

দুদকের উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. শামছুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৬ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতরের এই পাঁচ কর্মচারীকে নোটিশ দিয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তলব করা হয়। কিন্তু তারা উপস্থিত না হয়ে তিন সপ্তাহের সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন।  

তিনি বলেন, যেহেতু সময় চেয়েছেন। তাই পরবর্তী আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আবার সময় দিয়ে তলব করবো।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, আবজাল হোসেন ৩০ হাজার টাকা বেতন পেলেও  ঢাকার উত্তরায় তিনি ও তার স্ত্রীর নামে বাড়ি আছে পাঁচটি। আরেকটি বাড়ি আছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে। আর রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় আছে অন্তত ২৪টি প্লট ও ফ্ল্যাট। দেশে–বিদেশে আছে বাড়ি–মার্কেটসহ অনেক সম্পদ। এসব সম্পদের বাজারমূল্য হাজার কোটি টাকারও বেশি।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আবজাল হোসেন গত এক বছরে সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ২৮ বারেরও বেশি সপরিবারে সফর করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার সিডনির পর্টার স্ট্রিট মিন্টুতে যে বাড়ি কিনেছেন, তার দাম দুই লাখ ডলারেরও বেশি।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ১০ জানুয়ারি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।  

এদিকে একই ধরনের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (বাজেট) আনিসুর রহমানকে ১৪ জানুয়ারি দুদক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। অধিদফতরের আরও দুই পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হলেও সময় চেয়ে আবেদন করেছেন তারা।

তলবের নোটিশ পাওয়া দুই পরিচালক হলেন-পরিচালক ডা.  কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন, অধ্যাপক ডা. আবদুর রশীদ।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরে সিন্ডিকেট করে সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন অভিযুক্তরা। এছাড়া বিদেশে অর্থ পাচার ও জ্ঞাত আয় বহির্ভুত অর্জনের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলানিউজের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক জানান, শিগগির স্বাস্থ্যখাতে শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে। যার যার অপরাধ তার তার। সরকার কারো অনিয়মের দায় নেবে না। এরই মধ্যে একজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এরপরই মূলত অভিযানে নামে দুদক।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৯
আরএম/এমএ 

** 
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল বরখাস্ত

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।