ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জিটিআই পরিচালকের বিরুদ্ধে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

বাকৃবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
জিটিআই পরিচালকের বিরুদ্ধে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

বাকৃবি (ময়মনসিংহ): চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অবস্থিত গ্রাজুয়েট ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (জিটিআই) পরিচালক প্রফেসর এ কে এম  রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী বয়ড়া গ্রামের মো. শফিকুল ইসলাম শাহীন এ অভিযোগ করেন। এছাড়াও আরও অসংখ্য অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই পরিচালকের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে শফিকুল ইসলাম শাহীন বলেন, জিটিআইতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে আমার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন প্রফেসর এ কে এম রফিকুল ইসলাম। কিন্তু চাকরি না দিয়ে তিনি সেই পদে বসিয়েছেন নিজের আত্মীয়কে। এখন টাকা ফেরত চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন।  

পরিচালককে টাকা দেওয়ার সাক্ষীও তার কাছে আছে বলে জানান তিনি।  

তিনি আরও বলেন, গত সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বারের মোড়ে রফিকুল ইসলাম কয়েকজন সন্ত্রাসী পাঠিয়ে আমাকে হুমকি দিয়েছেন।  

এ অভিযোগের বিষয়ে জিটিআইয়ের পরিচালক প্রফেসর রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শফিকুল চাকরির জন্য আমার অফিসে ধরণা দিত। চাকরি না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি কোনো টাকা-পয়সা নেইনি। শফিক আমাকে বলেছে, সে চাকরির জন্য ‘ছাত্রলীগ’কে টাকা দিয়েছে। ’ 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ রুবেল বলেন, প্রশাসনিক কোনো কাজে ছাত্রলীগ যুক্ত নয়। চাকরির বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও জিটিআইয়ের পরিচালকেরই দেখার কথা।  

জিটিআইয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ফাউন্ডেশন ট্রেনিং, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। গত বছরের ২৫ মে রফিকুল ইসলাম জিটিআইয়ের পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরিচালকের দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তার দুইজন আত্মীয়সহ মোট পাঁচজনকে মাস্টার রোলে নিয়োগ দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে জিটিআইয়ের জন্য একজন শিক্ষক নির্ধারিত থাকলেও পরবর্তীতে তিনি আরও তিনজন শিক্ষক নিয়োগের জন্য নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।

এছাড়াও ট্রেনিংয়ের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা, কোর্স পরিচালক নামে আলাদা পদ সৃষ্টি করে প্রতিটি প্রশিক্ষণ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আত্মসাৎ, জিটিআইয়ের ডরমেটরিতে ৪০টি নিম্নমানের খাট ক্রয় এবং সহকর্মী ও কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করাসহ নানা রকম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে।  

অবসরপ্রাপ্ত জিটিআইয়ের দুইবার পরিচালকের দায়িত্ব পালন করা শিক্ষক তাজুল ইসলাম বলেন, প্রশিক্ষণে কোর্স পরিচালক রাখা কিংবা অবসরপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষককে কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব দেওয়ার কোনো নিয়ম জিটিআইয়ে নেই। আমার সময়ে ওরকম কিছুই ছিল না।

অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সত্য নয়। কেউ হয়ত ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।

পরিচালকের স্বেচ্ছাচারিতা, টাকা আত্মসাৎ ও অনিয়মের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর বলেন, জনবল নিয়োগ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থের জন্য। নিয়োগ প্রক্রিয়াকে পুঁজি করে কারো কোনো অনিয়ম বা অর্থ লেনদেন করার সুযোগ নেই। যদি এ ধরনের কোনো কিছু হয়ে থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।