ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিপদসীমার ১৫ সে.মি. ওপরে বইছে তিস্তার পানি

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৮
বিপদসীমার ১৫ সে.মি. ওপরে বইছে তিস্তার পানি

লালমনিরহাট: ভারি বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় সৃষ্ট বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ। ক্রমেই বাড়ছে পানিবন্দির সংখ্যা।

সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপরে।
 
তিস্তা ব্যারাজের বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা বাংলানিউজকে জানান, ভারি বর্ষণের সঙ্গে উজানের পাহাড়ি ঢলে সোমবার সকাল থেকে তিস্তার পানি প্রবাহ বাড়তে থাকে।

সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা ব্যারাজে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার। তা বেড়ে গিয়ে রাত ৯টায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। এ পয়েন্টের বিপদসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার।  

ভারত তাদের গজল ডোবা ব্যারেজের অধিকাংশ গেট খুলে দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, প্রচণ্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। আরও কী পরিমাণ পানি আসবে তা ধারণা যাচ্ছে না।  

পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারেজের সবগুলো জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা পাড়ের লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানিতে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার অধুনালুপ্ত ছিটমহল আঙ্গোরপোতা- দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সিন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন, পার্শ্ববতী কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার বেশ ইউনিয়নের চর এলাকার ২০ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কয়েক হাজার একর আমন ধানের ক্ষেতসহ অনেক ফসলি ক্ষেত তিস্তার পানিতে ডুবে গেছে।  

হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনী গ্রামের অস্থায়ী বাঁধগুলোও হুমকির মুখে পড়েছে। এ বাঁধগুলো ভেঙে গেলে তিস্তার পানি হাতীবান্ধা শহরে ঢুকে পড়তে পারে। আদিতমারী উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কার না করায় হুমকির মধ্যে পড়েছে মহিষখোচা ও সদরের খুনিয়াগাছ বাগডোরা অংশও। ইতোমধ্যে চর এলাকাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে গেছে।  

হাতীবান্ধা উপজেলার চর ধুবনীর আনছার আলী, লোকমান, মতিয়ার রহমান, পাটিকাপাড়ার শফিকুলসহ অনেক পানিবন্দি বাসিন্দা বলেন, দুপুর থেকে পানিবন্দি আমরা। ক্রমে পানি বেড়ে চলেছে। এখন পর্যন্ত আমাদের মাঝে কোনো ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি। কেউ আমাদের খোঁজ পর্যন্ত করেনি।

হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল আলম চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, উজানের ঢলে তিস্তায় ব্যাপকভাবে বাড়ছে পানি প্রবাহ। তবে কী পরিমাণ বাড়তে পারে সে বিষয়ে কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। পানি বাড়তে থাকলে ব্যারাজ রক্ষার্থে ফ্লাড বাইপাস কেটে দেওয়া হতে পারে।  

বাংলাদেশ সময়: ০২১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৮
এইচএ/

** রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে অতিভারী বর্ষণের আভাস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।