বৃহস্পতিবার (২২ জুন) নিউমার্কেটে চত্বরে গিয়ে দেখা গেলো প্রতিটি দোকানে প্রচুর ক্রেতার ভিড়। রকমারি পোশাক, ঘর সাজানোর জিনিস, ব্রান্ডেড কসমেটিক থেকে শুরু করে আসবাবপত্র, শুকনো ফল, রান্নার সামগ্রী, সমস্ত দোকানেই ক্রেতাদের বিপুল পরিমাণে ভিড়।
মেঘাছন্ন আকাশ আর হালকা বৃষ্টি, গরমের তীব্রটা কাটিয়ে কিছুটা হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছে কলকাতার মানুষজন। মনোরম আবহাওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়েই দোকানে দোকানে উপচে পড়ছে ক্রেতাদের ঢল। কলকাতার নিউমার্কেট এলাকার বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বর্তমান ক্রেতাদের মধ্যে বেশি রয়েছে বাংলাদেশি ক্রেতারা।
তারা বলছেন এবারের বাজার শুধুমাত্র জমে উঠেছে বাংলাদেশিদের জন্য। কলকাতার কিছু ক্রেতা কিনছে না তা নয়, তবে খুবই কম। তার মধ্যে বেশি আছে পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে আসা মানুষজন।
কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, একে তো ডিমানিটাইজেশন-এর ধাক্কা এখনোও সামলে উঠতে পারেনি ভারতী্য়রা। লোকের হাতে নগদ টাকা খুবই কম। দ্বিতীয়ত খোলা বাজার শেষ করে দিয়েছে অনলাইন শপিং। নামীদামী সমস্ত ব্রান্ডেড সংস্থাগুলো ভিড় করেছে সেখানে।
কলকাতার ঈদের বাজারে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছরই ক্রেতারা শপিং করতে আসেন। এই বছর রমজান মাসের শুরু থেকেই তাদের ভিড় উল্লেখযোগ্য। পরিসংখ্যান বলছে প্রতিদিন বেনাপোল থেকে ভারতের ইমিগ্রেশন পার হচ্ছে ৪ হাজার যাত্রী। যার মধ্যে সাড়ে তিন হাজার মুসলমান। আবার এদের মধ্যে ৭০ শতাংশ পরিবার নিয়ে এসেছেন। এতো গেলো রাস্তার হিসেব। বিমানে করে এসেছেন বা আসছেন ১৫শ-র মতো। যার মধ্যে ৯০ শতাংশ ইসলাম ধর্মাবলম্বী। আবার এদের মধ্য ৪০ শতাংশ পুরুষ বাকিরা মহিলা। তবে রেলপথে মৈত্রীর হিসেব এখনই না পাওয়া গেলেও সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে বাস, বিমানের থেকে যাত্রীর সংখ্যাটা কোনো মতেই কম না বরঞ্চ বেশি হতে পারে।
বিমানে ঢাকা ফিরতি এক ক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, সারা বছর অন্য পথে এলেও লাগেজ নিয়ে বিমানই তার ভরসা। বিমানে দুই দেশের কাস্টমসে ঝামেলাও কম। আসা-যাওয়াও সহজ।
নিউমার্কেট সংলগ্ন হগ মার্কেট চত্বরে বাংলাদেশি, ১৫-তে পা দেওয়া রুকসানা এই প্রথম বাবা মার সাথে কলকাতায় শপিং করছে। তার নাকি খুব ভালো লেগেছে এখানে শপিং করে। নিজের জন্য পনেরো পিস থ্রি পিছ, আর তিনটা শাড়ি কিনেছে। আরও অনেক বাকি। এখনও মনে কেড়ে নেয়ার মত ফ্যাশনের পোশাক খুঁজে পায়নি সে।
দোকানগুলো সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা- সাড়ে দশটা পর্যন্ত খোলা থাকছে, শুধুমাত্র যেসব বিক্রেতারা রোজা রেখেছেন তারা সাময়িক বন্ধ রাখছেন ইফতারের জন্য।
একই জিনিস কলকাতায় অনেক সস্তায় পাওয়া গেলেও ঢাকায় গেলেই ১০ গুণ দাম বেড়ে যায়। তাই এখানে আসা। তবে নতুন কোনো কালেকশন নেই। এমনই জানালেন পঞ্চাশোর্ধ্ব আফসানা খান।
একদিকে শপিং-এর ভিড় অন্যদিকে ইফতার। দুটোই সামাল দিচ্ছেন তারা। কেনার ফাঁকে নিউমার্কেট চত্বরের রেস্তরাঁগুলোতে ইফতারের জন্য টাকা দিয়ে টেবিল বুকিং করে নিচ্ছেন।
শপিং আর ইফতারে মজে থাকা বাংলাদেশিদের ভিড়ে এভাবেই জমে উঠেছে কলকাতার নিউমার্কেট।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ২২ জুন, ২০১৭
আরআই