ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

‘ঘাতকদের অপপ্রচার ভেসে যাবে দেশপ্রেমের জোয়ারে’

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৩
‘ঘাতকদের অপপ্রচার ভেসে যাবে দেশপ্রেমের জোয়ারে’

গণজাগরণ চত্বর থেকে: সম্প্রতি শাহবাগে তরুণ প্রজন্মের আন্দোলন নিয়ে জামায়াত-শিবিরের মালিকানাধীন কয়েকটি গণমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাতে গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ডা. ইমরান এইচ সরকার একটি লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন।

বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য বিবৃতিটি হুবহু তুলে ধরা হলো:  
১৫ দিন ধরে প্রজন্ম চত্বরের গণজাগরণ মঞ্চে লাখ লাখ মানুষ একাত্তরের মানবতাবিরোধী দল ও অপরাধীদের বিচারের সুনির্দিষ্ট দাবিতে দিন রাত ২৪ ঘণ্টা স্লোগন দিচ্ছেন। গলা ফাটিয়ে সুতীব্র আত্মচিৎকারে প্রকাশ করছেন ৪২ বছরের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ। এখানে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টানসহ সব ধর্ম, মত ও আদর্শের মানুষ আসেন।

কেবলমাত্র গণহত্যাকারী, খুনী, ধর্ষক, যুদ্ধাপরাধী ও তাদের দোসররা ছাড়া। দেশের সর্বস্তরের মানুষ আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ।

এ গণজাগরণ মঞ্চ কোনো গোপন সমাবেশ নয়। চার দেওয়ালে বন্দি কোনো কর্মযজ্ঞ নয়। এখানে কী হয়, তা দেশের সব মানুষ দেখছেন। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা আমাদের কার্যক্রম সম্প্রচার করছে দেশেরে সব টেলিভিশন চ্যানেল। সংবাদ প্রচার করছে দেশের সব সংবাদপত্র।

মানবতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, গণহত্যাকারীদের অর্থপুষ্ট কিছু সংবাদ মাধ্যম শুরু থেকে জনগণের এ জাগরণ নিয়ে আপত্তিকর, মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্ভট কল্প-কাহিনী প্রচার ও প্রকাশ করছে।

রাজাকার শয়তানের দোসর মস্তিস্ক বিকৃত এসব অপসংবাদ মাধ্যমকে বিক্ষুব্ধ জনতা ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা তাদের গ্রহণযোগ্যতার শেষ বিন্দুটিও হারিয়ে ফেলেছে। ঘাতক ও গণহত্যাকারীদের দোসররা এ দেশে তাদের সর্বশেষ মরণ কামড়টি বসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসের অপব্যবহার করে ‘শাহবাগে ইসলাম বিদ্বেষের প্রতিবাদে গর্জে উঠুন’ শিরোনামে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে।

অতীতেও আমরা দেখেছি, যখনই ধর্ম ব্যবসায়ীরা অস্তিত্বের সংকটে পড়ে, তখনই মানুষের ধর্মানুভূতিকে ব্যবহার করে প্রিয় বাংলাদেশকে দোজখে পরিণত করার হিংস্র অপচেষ্টায় মেতে উঠে। এ কাজটি ওরা একাত্তরেও করেছে।

ধর্মের নামে ধর্মকে ব্যবহার করে এসব শয়তানেরা গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট জায়েজ করতে চেয়েছিল। কিন্তু জেগে উঠেছে জনতা। হায়েনার চক্র, ঘাতকের শয়তানি, দেশবিরোধী সব অপপ্রচার ভেসে যাবে দেশপ্রেমের জোয়ারে।

দেশবাসীর প্রতি আমাদের অনুরোধ, আপনারা চোখ-কান খোলা রাখুন, সজাগ থাকুন। ধর্মের নামে কোনো ধরনের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। দেশের আলেম সমাজকে বলছি, শয়তানের প্ররোচণায় প্ররোচিত হবেন না।

গণজাগরণ মঞ্চে কেবল ইসলাম ধর্মই না, অন্য কোনো ধর্ম কিংবা মতের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ কিংবা ঘৃণা উচ্চারিত হয়নি, হচ্ছে না, হওয়ার কোনো কারণ নেই। এ মঞ্চে যাবতীয় ঘৃণার উচ্চারণ যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে।

মিডিয়ার প্রতি আমাদের অনুরোধ, এ গণজাগরণ মঞ্চের ৬ দফা দাবির বাইরে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন না।

আমরা স্পস্ট  করে বলছি, ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’। বাংলাদেশের মাটিতে বাংলা মায়ের পবিত্র দেহে ধর্মান্ধ, মৌলবাদী, দেশবিরোধীদের একটি আঘাতও পড়তে দেবো না। এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলছে, সংগ্রাম চলবে। জয়বাংলা।

বাংলাদেশ সময়: ০১১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৩
এমআইএইচ/ সম্পাদনা: জয়নাল আবেদীন, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।