ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

ছেলেকে বলেছি, ঈদে বাড়ি এসো না: কাশ্মীরি মা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৯
ছেলেকে বলেছি, ঈদে বাড়ি এসো না: কাশ্মীরি মা কারফিউ শিথিলের সুযোগে বাজার করে ফিরছেন এক নারী। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: প্রায় সপ্তাহখানেক সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পর গত বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) থেকে সীমিত সময়ের জন্য ফোনে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন কাশ্মীরবাসী। পারিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার জন্য শ্রীনগরে দু’টি জরুরি টেলিফোন লাইন চালু করেছে সরকার। তবে, কার সঙ্গে কী কথা- তা জানানোর পরই সর্বোচ্চ এক মিনিটের জন্য কথা বলার অনুমতি পাচ্ছেন তারা।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন> ভারতীয় হাইকমিশনারকে বহিষ্কার করলো পাকিস্তান

কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের জেরে গত রোববার (৪ আগস্ট) থেকেই সেখানে যান চলাচল, ফোনকলসহ সবধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

বন্ধ রয়েছে সব স্কুল-কলেজ, চলছে কারফিউ। ইতোমধ্যে জম্মু-কাশ্মীরের শীর্ষ নেতারাসহ অন্তত পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। উপত্যকায় সংবাদমাধ্যমের প্রবেশেও কড়াকড়ি আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

এধরনের অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও ফোনে কথা বলার সুযোগ পেয়ে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে স্থানীয়দের মধ্যে।

আরও পড়ুন> কী আছে জম্মু-কাশ্মীরের সেই ৩৭০ ধারায়

শ্রীনগরের বাসিন্দা ফাহমিদা দ্য প্রিন্টকে বলেন, আমার মেয়ের এ সপ্তাহে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু, সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ থাকায় সে টিকিট বুক করতে পারেনি। তাই, সারাদিন দরজার দিকে তাকিয়ে থাকতাম, যদি সে চলে আসে! খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম, সে চণ্ডিগড় কেমন আছে, কারফিউফের মধ্যে কীভাবে বাড়ি পৌঁছাবে?

‘আজ কল করলে সে বললো, আগামীকাল বাড়ির পথে রওয়ানা হবে। ভাবতে পারেন, সে আসার ঠিক আগ মুহূর্তেই এ কথা জানতে পারলাম? সে পায়ে হেঁটেই বাড়ি আসতে চেয়েছিল। এখন বিমানবন্দরে গিয়ে তাকে আনার চেষ্টা করতে পারবো।

কাশ্মীর পরিস্থিতিতে বেশি ভুগছেন নারী ও শিশুরা।  ছবি: সংগৃহীত

‘ছেলেকে বলেছি, ঈদে বাড়ি এসো না’
‘আমার স্বামী ব্যাঙ্গালুরু থাকা ছেলেকে কল করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, তাকে বললাম, আমি যাবো। কারণ, নারীদের চেয়ে পুরুষদের বেশি চেকপয়েন্টে থামানো হচ্ছে। একারণে জওয়াহারনগর থেকে হেঁটে গিয়ে ছেলের কাছে কল করি। সে কাঁদছিল। পরে, তাকে আমাদের জন্য চিন্তা না করে নিজের খেয়াল রাখতে বললাম। তাকে বলেছি, ঈদের সময় বাড়ি এসো না। কারণ এখানকার পরিস্থিতি এখনো উত্তেজনাপূর্ণ। ’

আরও পড়ুন> ভারতের সঙ্গে এবার রেল যোগাযোগও বন্ধ করলো পাকিস্তান

দ্য প্রিন্টকে এভাবেই নিজের দুর্দশার কথা জানান আরেক নারী। তিনি নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি। বরং, নিজেকে ‘মৌজা আঁখ’ অর্থাৎ ‘অনেক মায়েদের মধ্যে একজন’ বলে পরিচয় দেন।

দ্য প্রিন্টের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কিছু সৌভাগ্যবান কথা বলতে পারলেও অনেকেই সে সুযোগটুকু পাননি। নির্ধারিত সময় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে সরকারি অফিসে পৌঁছাতে না পারায় তাদের ফিরে যেতে হয়েছে।

আরও পড়ুন> ঈদে কাশ্মীরবাসী পশুর বদলে কি নিজেদের কোরবানি দেবে?’

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।