দখলদার ইসরায়েলের হাতে জিম্মি ফিলিস্তিনের সমর্থন ও গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রতিবাদে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে বিক্ষোভ হয়েছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) হাজার হাজার মানুষ এ বিক্ষোভে অংশ নেন, তারা মিছিলও করেছেন।
রোববার (৫ অক্টোবর) সংবাদ সংস্থাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রতিবাদকারীরা বিশাল একটি ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে মিছিল করেন এবং গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানান। তাদের অনেকেই এই যুদ্ধকে ‘ফিলিস্তিনি জনগণের গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
স্পেনের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নেন। অনেকে বলেন, এখনই সময় বিশ্বকে গাজার পাশে দাঁড়ানোর।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সান্দ্রা বলেন, হামাসের পরিস্থিতি জটিল। তাদের শুধু নিজেদের দাবি নয় সাধারণ মানুষের কথাও ভাবতে হবে। কিন্তু যা আমাকে সবচেয়ে বেশি হতাশ করে, তা হলো একটি তৃতীয় শক্তিশালী দেশ (যুক্তরাষ্ট্র) গাজার মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করছে, অথচ তাদের মতামতই চাওয়া হচ্ছে না।
ইসাবেল গুয়াদিয়ানা নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, এ ধরনের বিক্ষোভে আমি এই প্রথম অংশ নিচ্ছি। গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু করতে পারলে ভালো লাগত, কিন্তু জানি না এই বিক্ষোভগুলো সত্যিই শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে বা হত্যাযজ্ঞ থামাতে পারবে কিনা। তবুও আমাদের রাস্তায় নামতে হবে, আমাদের যা করার তা করতে হবে।
প্রতিবাদকারী লরা মার্তিনেজ বলেন, খুব নিরাশ লাগছে। যখন মানবিক সাহায্যবাহী ফ্লোটিলা রওনা দিয়েছিল, আমরা সবাই তাদের সাফল্য কামনা করেছিলাম। কিন্তু ইসরায়েলি অভিযানে যা ঘটল, তা ভীষণ হতাশাজনক। সবাইকে রাস্তায় নামতে হবে, এই বর্বরতা ও গণহত্যার বিরুদ্ধে কণ্ঠ তুলতে হবে। সবাইকে তা করতে হবে।
মাদ্রিদের কেন্দ্রস্থলে অনুষ্ঠিত এ বিক্ষোভে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা, শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিকেরা অংশ নেন। তারা ‘গাজায় শান্তি চাই’, ‘নৃশংসতা বন্ধ করো’, ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাস ও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রস্তাবের পর ইউরোপজুড়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে জনমত আরও জোরদার হচ্ছে।
এদিকে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক মেনে নিয়েছে বলে জানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার এবং ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও ইসরায়েলকে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে হামাসের পক্ষ থেকে জিম্মিদের মুক্তির প্রস্তুতির ঘোষণার পরও গতকাল শনিবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও কয়েকজন নিহত হন।
সূত্র: রয়টার্স