ঢাকা, শনিবার, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৪ জুন ২০২৫, ১৭ জিলহজ ১৪৪৬

খেলা

ভারতে দাবা টুর্নামেন্টে গিয়ে বিড়ম্বনায় রানি হামিদ

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:০০, জুন ১২, ২০২৫
ভারতে দাবা টুর্নামেন্টে গিয়ে বিড়ম্বনায় রানি হামিদ

ভারতের দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ২১তম আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার্স দাবা টুর্নামেন্টে অংশ নিতে গিয়ে অপ্রত্যাশিত এক ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন বাংলাদেশের কিংবদন্তি দাবাড়ু রানি হামিদ। দিল্লি পৌঁছেই তার সফরসঙ্গী ও সহদাবাড়ু আছিয়া সুলতানাকে আটকে দেয় ভারতীয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।

৮২ বছর বয়সী রানি হামিদ বার্ধক্যজনিত কারণে সবসময়ই সফরসঙ্গী নিয়ে বিদেশে ভ্রমণ করেন। এবারের টুর্নামেন্টেও ঈদের আগের দিন তার সঙ্গে দিল্লি পাড়ি জমান ৩৭ বছর বয়সী আছিয়া সুলতানা। নিজেও একজন আন্তর্জাতিক রেটিংধারী দাবাড়ু আছিয়া টুর্নামেন্টে অংশ নিতে চাইলেও ইমিগ্রেশনে তার প্রবেশ আটকে দেওয়া হয় এবং পরদিন বাধ্য করা হয় বাংলাদেশে ফিরে যেতে।

ভারতীয় রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (FRRO) সূত্রে জানা গেছে, আগের এক সফরে চিকিৎসা ভিসা নিয়ে কলকাতায় একটি দাবা টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার কারণে আছিয়াকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করা হয়। সেই তালিকাভুক্তির জেরেই দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে রাতভর আটকে রাখা হয় এবং দ্বিগুণ মূল্যে টিকিট কিনে ফেরত পাঠানো হয়।

ঘটনাটি মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছে রানি হামিদকে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াকে তিনি বলেন, ‘আমি খুবই হতাশ। মেয়েটিকে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। সে পুরো রাত ইমিগ্রেশনে বসেছিল, এমনকি লাগেজও পায়নি। পরদিন তাকে জোর করে দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ’

আছিয়া সুলতানাও নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘আমার মেডিকেল ভিসা ছিল। কাশ্মীরে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলাম, কিন্তু ডাক্তার না থাকায় একটি টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে ফিরে আসি। বিষয়টি ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের ব্যাখ্যা করলেও তারা শোনেননি। ভারতের দাবা সংগঠনের কয়েকজন এগিয়ে এসেছিলেন, জরিমানা দিয়েও বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। ’

দাবা অঙ্গনে নিয়মিত হতে থাকা আছিয়া এর আগে শ্রীলঙ্কাতেও রানি হামিদের সঙ্গে একটি টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে একা থেকে মানসিক চাপে পড়েছেন বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানি হামিদ। তিনি বলেন, ‘আমি কখনো একা ভ্রমণ করি না। বয়স হয়েছে, ফলে একা একা মানিয়ে নেওয়া খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। খেলায় মনোযোগও দিতে পারছি না। ’

রানির ছেলে, সাবেক ফুটবলার কায়সার হামিদ বলেন, ‘মা একা বিদেশে থাকতে পারেন না। আছিয়া সব সময় তার সঙ্গে ছিল। এখন সে না থাকায় আমরা সবাই খুব চিন্তিত। ’

এই পরিস্থিতির জেরে দিল্লি টুর্নামেন্ট শেষে রানি হামিদের মুম্বাইয়ে আরেকটি টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে।

দিল্লির এই টুর্নামেন্টে রানি হামিদকে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আন্তর্জাতিক দাবা জগতে তিনি শুধু একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় নন, তরুণ দাবাড়ুদের জন্য এক অনন্য অনুপ্রেরণাও।  

আরইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।