জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বসুন্ধরা শুভসংঘের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখার উদ্যোগে ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিযোগিতা ও আলোচনা অনুষ্ঠান ‘কবি, কণ্ঠ ও কল্পনায় নজরুল’ আয়োজিত হয়েছে।
রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মমতাজ উদ্দিন ভবনের ২০৬ নম্বর কক্ষে আয়োজিত এক আলোচনাসভা থেকে বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা ও পুরস্কার তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নজরুল গবেষক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুণ-অর-রশিদ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘নজরুল ছিলেন বহুমাত্রিক এক বিস্ময়।
তিনি শুধু বিদ্রোহী কবি ছিলেন না, ছিলেন প্রেম, মানবতা ও সাম্যের একজন অনন্য দার্শনিক। তরুণদের মনে নজরুলের যে চেতনা জাগ্রত করতে হবে, তা হলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, মানবতার পক্ষে দাঁড়ানোর সাহস। আজকের এই আয়োজন নিঃসন্দেহে তরুণদের সেই ভাবনার পথ তৈরি করবে। ’
তিনি বলেন, ‘নজরুলকে জানতে হলে শুধু তাঁর কবিতা পড়লেই হবে না, বুঝতে হবে সময়কে; যার বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেছেন, গান ধরেছেন এবং সংগ্রামের কথা বলেছেন। ’
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন বসুন্ধরা শুভসংঘের রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আলফাজ উদ্দিন টনিক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুবনা শারমিন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও শুভসংঘের রাবি শাখার উপদেষ্টা সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিক্ষক মিলনায়তন কেন্দ্রের (টিএসসিসি) পরিচালক অধ্যাপক মুরশিদা ফেরদৌস বিনতে হাবিব।
আয়োজকরা জানান, এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কবির বিদ্রোহী চেতনা, মানবিক বোধ ও কাব্যিক প্রতিভা নজরুলপ্রেমী তরুণদের মাঝে পুনর্জাগরণ ঘটানোই ছিল আমাদের মূল উদ্দেশ্য। গত ১৫ মে কবিতা আবৃত্তি, সংগীত ও রচনা লিখন ক্যাটাগরিতে শুভসংঘের পক্ষ থেকে ভিডিও ও লেখা আহ্বান করা হয়।
তিন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন আবৃত্তিতে প্রথম জারিন তাসনীম, দ্বিতীয় ফারজানা ইসলাম হিয়া এবং তৃতীয় অপূর্ব কৃষ্ণ দে। রচনা লিখন ক্যাটাগরিতে প্রথম রাসেল শেখ, দ্বিতীয় মুনিরা আকতার সুমা এবং তৃতীয় বাঁধন বিশ্বাস। সংগীত ক্যাটাগরিতে প্রথম তোফায়েল আহমেদ তোফা, দ্বিতীয় হেদায়াতুল্লাহ হাসানাত এবং তৃতীয় আস্মিকা পাল।
অনুষ্ঠানে শুভসংঘের সভাপতি মাহবুব হাসান বলেন, ‘নজরুল শুধু একটি নাম নয়, একটি চেতনার নাম—যা আমাদের প্রতিবাদের ভাষা দিয়েছে, মানবতার দীপ্তি দিয়েছে। তরুণ প্রজন্মের মাঝে তার সাহিত্য, সঙ্গীত ও মানবিক দর্শন ছড়িয়ে দিতে আমরা এই আয়োজন করেছি।
আমরা চাই, নজরুল থাকুক আমাদের চিন্তায়, চেতনায় এবং কর্মে। এই আয়োজন সফল করতে যারা পাশে ছিলেন, তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ’
এনডি