ঢাকা, সোমবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩২, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

‘একটি চক্র ভবদহে টিআরএম বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টায় লিপ্ত’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:২৩, অক্টোবর ৫, ২০২৫
‘একটি চক্র ভবদহে টিআরএম বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টায় লিপ্ত’

যশোর: ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়নের দাবিতে আয়োজিত গণসমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, অতীতের মতো এখনো একটি চক্র টিআরএম বাস্তবায়নের সরকারি সিদ্ধান্ত বাধাগ্রস্ত করতে চেষ্টায় লিপ্ত।  

পর্যায়ক্রমে বিলগুলোতে টিআরএম এবং উজানে নদী সংযোগ না হলে এই অঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে স্থায়ীভাবে পানির তলে চলে যাবে।

এই জনপদের জলবদ্ধতা থেকে স্থায়ী মুক্তির জন্য সকলকে টিআরএম কার্যকর করতে সহযোগিতা করতে হবে।  

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, যে বিলে টিআরএম হবে, সেই বিল ভরাট ও উঁচু হবে। জমি হয়ে উঠবে চাষাবাদের উপযোগী। বিলের জমির মালিক, ঘেরমালিক, বর্গাচাষি, শ্রমজীবী, মৎস্যজীবী এবং বিলের ওপর নির্ভরশীল প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সবাইকে ক্ষতিপূরণের আওতায় আনতে হবে।

ক্ষতিপূরণের টাকা ইউনিয়ন কাউন্সিল অথবা ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে প্রদানের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিতে হবে জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, টিআরএম চালু হওয়া বিলের মধ্যে একটি মেশিন রাখতে হবে, যাতে বিলের শেষ শেষপর্যন্ত যাতে পলি পৌঁছাতে পারে।  

রোববার (৫ অক্টোবর) বিকেলে অভয়নগরের মশিয়াহাটী হাইস্কুল মাঠে ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও ছয় দফা দাবিতে আয়োজিত গণসমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
ভবদহ দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এই গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিৎ বাওয়ালী।

বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী আব্দুল হামিদ, সদস্যসচিব চৈতন্য কুমার পাল, ফিলিস্তিন সংহতি কমিটির আহ্বায়ক ডাক্তার অধ্যাপক হারুন অর রশিদ এবং তসলিম উর রহমান।  

সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ভৈরব নদ সংস্কার আন্দোলনের নেতা জিল্লুর রহমান ভিটু, কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনের অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান হিরু, মুক্তেশ্বরী সংস্কার আন্দোলনের আলাউদ্দিন, জুলাইযোদ্ধা রাশেদ খান, ইউপি চেয়ারম্যান মনোজিত বালা, মাসুদ শেখ, আব্দুল মান্নান মোল্লা, বাপা’র আবু সাঈদ প্রমুখ।  

২০১৬ সালের ৫ সালে যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ায় আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশি হামলায় আহতদের সংবর্ধনা দেওয়া হয় সমাবেশে।  

একই মঞ্চে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন শিক্ষক তীসা চামেলি। সমাবেশ শেষে বাউল গান পরিবেশিত হয়।

যশোরের মণিরামপুর, অভয়নগর, কেশবপুর, ও সদর (আংশিক) এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা (আংশিক) উপজেলায় প্রতিবছর জলাবদ্ধতার কারণে বাড়িঘর, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, শ্মশান, মসজিদ, মন্দির, খেলার মাঠ, রাস্তা, ঘাট, ফসলী জমি পানিতে ডুবছে।  

নিত্যসঙ্গী এই স্থায়ী জলাবদ্ধতায় মানুষের মৃত্যু, রোগবালাই, ফসলহানিতে বিপন্ন জীবন। মনুষ্যসৃষ্ট এই দুর্যোগের গ্রাস থেকে বাঁচতে এই এলাকার মানুষ লাগাতার সংগ্রাম করে আসছে। বর্তমান সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ভবদহ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।  

ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু তা এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি। ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে দ্রুত আমডাঙ্গা খালের জমি অধিগ্রহণ ও সংস্কার কাজ শুরু, ৮১ কিলোমিটার নদী খননের কাজ শুরু, বিলে বিলে টিআরএম চালু, ২১ ভেন্টের সকল গেট খুলে দেওয়া, ঘের নীতিমালা ২০১৯ বাস্তবায়ন এবং ২০১৬ সালের ৫ অক্টোবর নওয়াপাড়ায় পুলিশি হামলার সাথে জড়িতদের বিচার।

এসএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।