রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) উন্নয়ন কাজ থেকে চাঁদার দাবিতে পাহাড়ি সশস্ত্র গ্রুপের সদস্যরা হানা দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত পৌনে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অস্ত্রধারী সাতজন সন্ত্রাসী প্রবেশ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘সন্ত্রাসীরা উন্নয়নকাজে নিয়োজিত ১৫ জন শ্রমিকের মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেয় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। শ্রমিকদের উদ্দেশে সন্ত্রাসীরা জানায়, চাঁদা না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের কাজ বন্ধ রাখতে হবে। অন্যথায় বার্স্ট ফায়ার করে শ্রমিকদের হত্যা করা হবে বলে হুমকিও দেয় তারা। ’
হঠাৎ এ হামলায় শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাঙামাটি শহরের আসামবস্তী-কাপ্তাই সংযোগ সড়ক এলাকার পুরো অঞ্চলে পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন সন্তু লারমার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস), প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এবং এম এন লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সংস্কারের (পিসিজেএসএস সংস্কার) প্রভাব বিস্তার রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, উন্নয়ন কাজ শুরুর পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সন্তু গ্রুপের পিসিজেএসএস এবং ১১ মে পিসিজেএসএস সংস্কার চাঁদার দাবিতে কাজ বন্ধ করে দেয়। এরপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাহাড়ি সশস্ত্র দুটি সংগঠনকে চাঁদা পরিশোধ করলে কাজ পুনরায় শুরু হয়।
তবে মে মাসের শেষ দিকে ইউপিডিএফ একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ থেকে বড় অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছুদিন এলাকায় টহল জোরদার রাখলে সন্ত্রাসীরা আত্মগোপনে চলে যায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে সুযোগ বুঝে সন্ত্রাসীরা ফের অস্ত্র হাতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে শ্রমিকদের কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এসময় শ্রমিকদের ১৫টি মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অধীনে 'রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন (দ্বিতীয় সংশোধিত)' শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহযোগিতায় তিনতলা ভিত্তির ওপর তিনতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে এমই-আরবি জয়েন্ট ভেঞ্চার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা।
এসআরএস