ঢাকা: নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং স্থানীয় নির্বাচন আগে দেওয়ার দাবিতে বুধবার (২১ মে) নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
মঙ্গলবার (২০ মে) ঘটা করে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে কর্মসূচি ঘোষণার করলেও বিক্ষোভে এনসিপির শীর্ষ ১০ নেতার অনেককেই দেখা যায়নি।
এদিকে বিক্ষোভে কম উপস্থিতি নিয়েও দিনভর আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে।
অবশ্য শীর্ষ নেতাদের সবাই উপস্থিত না হওয়াকে স্বাভাবিকভাবে দেখছেন এনসিপির নেতারা। তারা বলছেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার দাবি ছাড়াও দলের আরও এজেন্ডা-কার্যক্রম রয়েছে। ফলে শীর্ষ নেতাদের সবাই এখানে থাকবেন না, তাই স্বাভাবিক।
দলের আত্মপ্রকাশের পর থেকেই জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন মাত্র তিন মাস বয়সী এই দলটি। সাথে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা এবং জুলাই হত্যাকাণ্ডের দৃশ্যমান বিচার হওয়ার আগে নির্বাচনের বিষয়ে একাধিকবার আপত্তি জানিয়েছিলেন নেতারা।
সম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণার ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমকে পক্ষপাতমূলক আখ্যা দিয়েছে দলটি। একইসঙ্গে এই কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের আস্থা রাখতে পারছে বলে জানিয়েছে এনসিপি।
নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমকে বিতর্কিত উল্লেখ করে তা পুনর্গঠনের দাবিতে বুধবার ইসি ভবনের সামনে বিক্ষোভের ডাক দেন এনসিপির নেতারা।
বুধবার কর্মসূচি শুরুর সময় এনসিপির উল্লেখযোগ্য নেতাদের উপস্থিতি দেখা যায়নি। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে কেউ কেউ এসে যোগ দেন।
এক্টিভিস্ট জাহেদ উর রহমান বলেন, সমাবেশে এনসিপির বিপর্যয় হয়েছে। এটিকে সমাবেশ বলা যাবে কি না, সে আলোচনাও আসবে। এটি না হওয়াই তাদের জন্য ভালো ছিল। সমাবেশের উপস্থিতি তাদের ভবিষ্যতের রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত।
এনসিপির উপস্থিতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ হিল বাকি লিখেছেন, এনসিপির যতজন আজকে নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছে,... বিক্ষোভে গিয়েছে?
এসব বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের অন্যান্য সাংগঠনিক কার্যক্রমের মতোই এটা একটা কার্যক্রম। ফলে সবাই এখানে উপস্থিত থাকবেন না, এটাই স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবেই দল হিসেবে আমরা যখন ফাংশান করব, তখন অন্যান্য কাজের সাথে এটা আমাদের একটা কাজ। ফলে সবাই উপস্থিত থাকবেন, এরকম কোনো ব্যাপার আসলে নেই।
তিনি বলেন, আমাদের এখনো কোনো সাংগঠনিক বিস্তার হয়নি। আমরা এখনো যতগুলো কর্মসূচি নিচ্ছি, সবগুলো তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে। গতকালও সন্ধ্যার সময় আমরা সংবাদ সম্মেলন করি, আমরা জানিয়েছি এবং এই কর্মসূচি খুব গোছানো ছিল না।
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের অনেকে হয়তো সেরকম এমপাওয়ার্ড অনুভব করছেন না। আমরা যেভাবে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে রাজনীতি গুছিয়ে তোলার পরিকল্পনা করছি, তারপর সবকিছু আরও গুছিয়ে আসবে। এখন যে পরিস্থিতি চলছে, তা স্বল্প সময়ের জন্য।
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেছেন, এনসিপির মাথা গোণার রাজনীতি করা উচিত নয়। এনসিপি রাজনীতি করবে তার দাবির মেরিট নিয়ে এবং তার জন্য যত সংখ্যক লোকই রাস্তায় দাঁড়াক না কেন তাও গুরুত্ব বহন করবে।
তিনি বলেন, যারা এনসিপির প্রোগ্রামের মাথা গুনেন তাদের বলি এটি ছাড়েন। এনসিপির একেকটি মাথা একটি রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থান করে রাস্তায় এসেছে, তাদের দাবির মেরিট ও গণঅভ্যুত্থানের লিগ্যাসির কারণে এই গাঠনিক সময়ে তারা প্রচণ্ডভাবে
ম্যাটার করে।
এফএইচ/এএটি