নেপালে তীব্র বিক্ষোভের মধ্যে দেশটির মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের নিরাপদ স্থানে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে সরিয়ে নিয়েছে সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বিক্ষোভকারীরা বিশেষভাবে ভৈসেপাটিতে মন্ত্রীদের বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনী পার্লামেন্ট ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনাগুলো রক্ষার দায়িত্ব নেয়। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাময়িকভাবে সেনা শিবিরে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করেন। ‘বর্তমান সংকটের সাংবিধানিক সমাধানের পথ প্রশস্ত করার জন্য’ তিনি পদত্যাগ করছেন বলে পত্রে উল্লেখ করেছেন তিনি।
পদত্যাগের আগে বিক্ষোভকারীরা তার ব্যক্তিগত বাসভবনে অগ্নিসংযোগ চালিয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই সময়ের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায় তাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
নেপালে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে দুর্নীতি ও সামাজিক মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়ণে ১৯ তরুণ নিহত হওয়ার পর দেশজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সরকার বিক্ষোভ দমন করার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার বাড়ি ও দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালায়, পাথর নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
ললিতপুরে দেশের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুঙের বাড়িতেও আগুন ধরানো হয়। ভৈসেপাটিতে অবস্থিত উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাওডেলের বাড়িতেও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। সোমবার পদত্যাগ করা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকের বাসভবনেও হামলা চালানো হয়।
বিক্ষোভকারীরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নেপালি কংগ্রেস সভাপতি শেরবাহাদুর দেউবারের বুদ্বানিলকণ্টা এলাকার বাড়িতেও হামলার চেষ্টা করে, তবে তা প্রতিহত করা হয়। খুমলটারে প্রধান বিরোধী দল সিপিএনের (মাওইস্ট সেন্টার) চেয়ারম্যান পুষ্পকমল দাহালের বাসভবনেও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, প্রশাসনের বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার পরও বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন জেলায় মুখ্যমন্ত্রী, প্রাদেশিক মন্ত্রী ও অন্যান্য নেতাদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছে।
এমজে