মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সামরিক উত্তেজনা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে, গতরাতেই হাইফায় একাধিক মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইরান। যার মূল লক্ষ্য ছিল হাইফা বন্দর, আর তার সরাসরি প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ভারতের আদানি গ্রুপের ইসরায়েলভিত্তিক ব্যবসায়িক বিনিয়োগে।
১.২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ইসরায়েলের হাইফা বন্দরের ৭০% মালিকানা এবং সামরিক ড্রোন উৎপাদনে ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান এলবিট সিস্টেমসের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ— আদানি গ্রুপের এই দুটি প্রধান প্রকল্প এখন ঝুঁকির মুখে।
আদানি পোর্টসের মালিকানাধীন হাইফা বন্দরটি ইসরায়েলের আমদানি-রপ্তানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এবং প্রতিষ্ঠানটির মোট কার্গো পরিচালনার প্রায় ৩% এখান থেকেই হয়। যদিও এটি উত্তরের তুলনামূলক নিরাপদ অঞ্চলে অবস্থিত, চলমান সংঘাতে পণ্য পরিবহন বিলম্ব, রুট পরিবর্তন কিংবা বড় পরিসরে ভূমধ্যসাগরীয় বাণিজ্যে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এই অনিশ্চয়তার প্রেক্ষিতে শুক্রবার মুম্বাই শেয়ারবাজারে আদানি পোর্টসের শেয়ার ৩.২% এবং আদানি এন্টারপ্রাইজেসের শেয়ার ২.৮% হারে কমে যায়। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্পষ্ট উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
যদিও হাইফা বন্দর আদানি পোর্টসের সামগ্রিক কার্যক্রমে তুলনামূলক ছোট ভূমিকা রাখে, তবু এর প্রতীকী গুরুত্ব অনেক বেশি। একটি কৌশলগত এলাকায় বিশাল বিনিয়োগ আদানিদের মধ্যপ্রাচ্য কৌশলের অংশ, যা এখন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে।
২০১৮ সালে আদানি এন্টারপ্রাইজেস ও এলবিট সিস্টেমসের যৌথ উদ্যোগে হায়দরাবাদে স্থাপিত "আদানি এলবিট অ্যাডভান্সড সিস্টেমস" কারখানায় হার্মার্স-৯০০ নামে একটি সামরিক ড্রোন তৈরি হয়, যা ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ব্যবহার করে থাকে। সংঘাত বৃদ্ধি পেলে এই ড্রোনের চাহিদা বাড়তে পারে, তবে একইসঙ্গে ভারতের পক্ষ থেকে এই ধরনের প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদানি গ্রুপের ইসরায়েলি বিনিয়োগ এখন শুধু ব্যবসার প্রশ্ন নয়, বরং এক জটিল ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার অংশ। যুদ্ধ চলতে থাকলে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও বিনিয়োগ পরিস্থিতির ওপর আরও বড় প্রভাব পড়তে পারে।
এমএম