ঢাকা, সোমবার, ২ আষাঢ় ১৪৩২, ১৬ জুন ২০২৫, ১৯ জিলহজ ১৪৪৬

ফুটবল

মেসির ওপর নির্ভরতা মায়ামির জন্য আশীর্বাদ না অভিশাপ?

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৩৯, জুন ১৬, ২০২৫
মেসির ওপর নির্ভরতা মায়ামির জন্য আশীর্বাদ না অভিশাপ? দলের পারফরম্যান্সে হতাশ ও ক্লান্ত লিওনেল মেসি/সংগৃহীত ছবি

ইন্টার মায়ামির মূল খেলোয়াড় লিওনেল মেসি — এ কথা বললে যেন কিছুটা কম বলা হয়। তিনি যেন এক মানবঘূর্ণি, যার মধ্য দিয়েই দলের সমস্ত সৃষ্টিশীলতা প্রবাহিত হয়।

মায়ামির খেলোয়াড়দের এক অলিখিত সমঝোতা—মেসি যদি বল চাওয়ার জায়গায় থাকেন, তাহলে কোনো পরিস্থিতিতেই তাকে পাস না দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এমনকি তিনি নিজের সীমানাতে দাঁড়িয়ে থাকলেও। বার্সেলোনা, পিএসজি কিংবা আর্জেন্টিনা দলে এ নির্ভরতা থাকলেও, সে সব দলে মেসিকে ঘিরে গড়ে তোলা কাঠামো অনেক বেশি ভারসাম্যপূর্ণ ছিল।

কিন্তু হাভিয়ের মাচেরানোর ইন্টার মায়ামি সেই ভারসাম্য খুঁজে পায়নি। আর তারই খেসারত দিতে হয়েছে ক্লাব বিশ্বকাপে আল আহলির বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে। গোলশূন্য ড্র করা ম্যাচে মায়ামির খেলার ছন্দ ছিল ছন্নছাড়া, রক্ষণভাগ ছিল প্রায় অনুপস্থিত।

ছন্দহীন প্রথমার্ধে ভেঙে পড়া কাঠামো

মেসি ও লুইস সুয়ারেজকে সামনে রেখে ৪-৪-২ ফর্মেশনে খেলতে নামে মায়ামি। কিন্তু ১৫ মিনিটের মাথায় মেসি বুঝে যান, সামনে বল পেতে হলে মাঝমাঠে নেমে নিজেকেই বল তুলে আনতে হবে। এখানেই শুরু মায়ামির সমস্যা—মেসি নিচে নামলে বল এগোয়, কিন্তু দল হারায় কাঠামো।

যখন মেসি মাঝমাঠের নিচে নামেন, তখন দুই ফুলব্যাক উপরে উঠে যান, আর দুই উইঙ্গার ভেতরে সরে এসে চারজনের এক আক্রমণভাগ তৈরি হয়। কিন্তু এই অবস্থানে পড়ে থাকে বিশাল ফাঁকা জায়গা — যা আল আহলির মতো দ্রুতগতির দলের জন্য ছিল দারুণ সুযোগ।

এক ভুল পাস মানেই বিপদ

মেসি বল পেলে চারপাশের খেলোয়াড়রা জায়গা ছেড়ে দেয় তার জন্য। কিন্তু তার একটিমাত্র ভুল পাস বা বল হারানোর মানে, পুরো মায়ামি রক্ষণব্যবস্থার ধস। একাধিকবার দেখা গেছে, মেসির পায়ের বল কাটা পড়ার পর দুই পাসেই আল আহলি গোলের মুখে পৌঁছে যাচ্ছে।

মেসি কখনো উইংয়ে গিয়ে জায়গা খুঁজে নিচ্ছেন, কখনো বুসকেতসের পাশে এসে বল নিচ্ছেন। কিন্তু এতে করে পুরো দল ছড়িয়ে যাচ্ছে, আর মাঝমাঠে তৈরি হচ্ছে গর্ত।

দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা পরিবর্তন, কিন্তু নির্ভরতা থেকেই যায়

দ্বিতীয়ার্ধে মাচেরানো কিছু রদবদল করেন—তোমাস আভিলেসকে তুলে এনে রাইট-ব্যাক ইয়ান ফ্রেকে সেন্টারব্যাকে খেলান। এতে করে কিছুটা ভারসাম্য ফেরে। তবে মেসি যখনই আবার নিচে নামা শুরু করেন, তখনই আল আহলি আক্রমণের জায়গা খুঁজে পায়।

মেসির ওপর নির্ভরতা স্বাভাবিক। কিন্তু এই নির্ভরতা যে কী ভয়ানক কৌশলগত ফাঁদ তৈরি করতে পারে, তা এই ম্যাচে স্পষ্ট হয়। মাচেরানোর মায়ামি যদি শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে খেলত—যেমন গ্রুপের পরের ম্যাচে প্রতিপক্ষ পর্তুগালের পোর্তো—তাহলে হয়তো প্রথমার্ধেই লজ্জাজনক ফল হতো।

এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।