ঢাকা: সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। আগামী সপ্তাহে প্রজ্ঞাপন হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) অষ্টম কমিশন সভা শেষ নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ডিলিমিটেশনটা আমাদের ফাইনাল পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আজকের বৈঠকেও উপস্থাপন করা হয়েছে। তবে এখানে ওই সংস্কার কমিশনের সুপারিশ এবং অপরাপর সুপারিশের আলোকেও আমরা দেখেছি যে আরেকটু বোধহয় টেকনিক্যাল কমিটি দ্বারা এটাকে বাছাই করার সুযোগ আছে। কারণটা বলি। সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের মধ্যে ছিল যে বড় জেলাগুলোতে ১০ পারসেন্ট ভোটারের ভেরিয়েশন রাখা, প্লাস মাইনাস ১০ শতাংশ ভোটার। কিন্তু বাস্তবতাতে দেখা যাচ্ছে যেটা অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হচ্ছে না। এভাবে এডজাস্ট করতে হলে সবগুলো আসনকে ভেঙে ভেঙে সাজাতে হবে। এটার আরেকটা দিকে আছে। ২২১টি আসনের সীমানা পরিবর্তনে কোনো ধরনের আবেদন হয়নি। তদুপরি এ যেখানে যেখানে অনেক বেশি ভেরিয়েশন আছে এটাতে আরেকটু কিছু করা যায় কিনা সেটার জন্য আমরা দেখতে বলেছি। আগামী সপ্তাহে ইনশাল্লাহ জেনে যাবেন। প্রকাশ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে যে আপনার আসন সংখ্যাগুলো বেড়েছিল সেগুলো কমবে কিনা। খুব বেশি কমবে না। তার বাস্তবতা হচ্ছে ঢাকা শহরে জনসংখ্যা বেড়েছে ব্যাপক হারে। এবং ভোটার সংখ্যাও বেড়েছে ব্যাপক হারে। আমি বারবার ভোটার সংখ্যার কথা বলছি একটা কারণ আছে। কারণ ২০২২ এর রেফারেন্স নিয়ে কাজ করতে গিয়েছি, কাজ করে দেখেছি যে খুব রিলাই করা যাচ্ছে না। কিছু কিছু জায়গায় বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছি আমরা। আমরা যদি কম্পেয়ার করি তাহলে ১০০ জনে গড়ে ৭৩ থেকে ৭৪ জন ভোটার হয়। কিন্তু ঢাকা শহরে দেখা যাচ্ছে ১০০ জনে মাত্র ৫৫ জন ভোটার। গাজীপুর শহরে দেখা যাচ্ছে ১০০ জনে মাত্র ৫১ জন ভোটার। অর্থাৎ আমরা যদি জনসংখ্যা ধরে ডিস্ট্রিবিউট করি তাহলে এসব জায়গাতে আরও কেটে নিয়ে আসতে হবে বাইরে। এবং আসন দিতে হবে এখানে। বাট বাস্তবতা হচ্ছে এই খানে যাদেরকে আমরা জনসংখ্যা দেখছি তারা ফ্লোটিং জনসংখ্যা। তারা এ জেলার লোক নন। এমত অবস্থায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ডাটাটা আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি রিলায়েবল সেটা হচ্ছে ভোটার তালিকা। আমরা প্রায়রিটি দিয়ে জনসংখ্যাটাকেও বিবেচনায় নিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণ চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, আইনেই বলা আছে আপনার ভৌগোলিক অবস্থা এবং অবস্থান, প্রশাসনিক সুবিধা, যাতায়াত ব্যবস্থা, পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের আবার এখতিয়ার আছে নির্বাচন কমিশনের বিবেচনায় অন্য যে কোনো ধরনের ক্রাইটেরিয়াকে যেটাকে যৌক্তিক মনে হলে সেটাকে এড করে তারপর সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। সো ভোটার সংখ্যা ইজ ওয়ান রেফারেন্স। নট দ্য আলমেট রেফারেন্স।
ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিষয়ে তিনি বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে আজ পর্যন্ত ৪৪ লাখ ৬ হাজার ৬০২ জন বাদ পড়া ভোটার আমরা পেয়েছি, যারা নিবন্ধন করেছেন নতুনভাবে। আর তালিকার মধ্যে মৃত ভোটার পেয়েছি ২১ লাখ ৩২ হাজার ৫৯০ জন। ভোটার তালিকা হালনাগাদের একটি সম্পূরক তালিকা আগামী সপ্তাহেই প্রকাশ হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, যাদের সম্পূরক তালিকা প্রকাশ করা হবে তারা ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি ভোটার হওয়ার যোগ্য হয়েছেন। কিন্তু কোনো কারণে তারা ভোটার হননি। তাই তাদের তালিকা প্রকাশ করা যাবে।
তিনি বলেন, বর্তমান আইন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। তবে আমরা চেয়েছি যে বছরের মাঝামাঝিও যদি কেউ ভোটার হয়, যেন তার তালিকা প্রকাশ করা যায়।
ইইউডি/জেএইচ