ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১১ জুলাই ২০২৫, ১৫ মহররম ১৪৪৭

শিক্ষা

বরিশাল বোর্ডে বিজ্ঞান ও সামগ্রিক পাসে এগিয়ে মেয়েরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:২৯, জুলাই ১০, ২০২৫
বরিশাল বোর্ডে বিজ্ঞান ও সামগ্রিক পাসে এগিয়ে মেয়েরা

২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার নেমে এসেছে ৫৬ দশমিক ৩৮ শতাংশে। বিগত বছরের তুলনায় ফলাফলে বিপর্যয় ঘটলেও মেয়েরা এবারও ছেলেদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে রয়েছে পাসের হার ও জিপিএ-৫ অর্জনে।

এই ধারা গত পাঁচ বছর ধরে অব্যাহত রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ৪ হাজার ৮০৩ জন। পাশাপাশি, পাসের হার গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। মেয়েদের পাসের হার ৬৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ, যেখানে ছেলেদের হার ৪৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

বিষয়ভিত্তিক ফলাফলেও মেয়েদের আধিপত্য দেখা গেছে। বিজ্ঞান বিভাগে মেয়েদের পাসের হার ৮৫ দশমিক ৬২ শতাংশ, ছেলেদের ৮০ দশমিক ৩৮ শতাংশ। মানবিক বিভাগে মেয়েরা ৫২ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং ছেলেরা মাত্র ৩১ দশমিক ৪৩ শতাংশ পাস করেছে। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে মেয়েরা ৬৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং ছেলেরা ৪৬ দশমিক ৩১ শতাংশ পাস করেছে।

এদিকে তিন বিভাগের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার সর্বোচ্চ ৮৩ দশমিক ১৩। এরপর ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৫৪ দশমিক ৬১ এবং মানবিক বিভাগে পাসের হার ৪৩ দশমিক ১৪। সর্বোচ্চ পাসের হারে থাকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ২৪ হাজার ৯০৫ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ২০ হাজার ২০৭ জন এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৯২০ জন। মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ৪৯ হাজার ১১২ জন, পাস করেছে ২১ হাজার ১৮৬ জন এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫৯ জন। অপরদিকে, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ৮ হাজার ৯১৪ জন, পাস করেছে ৪ হাজার ৮৬৮ জন এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৩৫ জন।

জিপিএ-৫ প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও মেয়েরা এগিয়ে। এ বছর ১ হাজার ৬৮৫ জন মেয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে, যা ছেলেদের তুলনায় ২৫৬ জন বেশি। ছেলেদের জিপিএ-৫ সংখ্যা ১ হাজার ৪২৯।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবারে ৬ জেলার ১ হাজার ৫০২টি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মোট ৮৪ হাজার ৭০২ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৮২ হাজার ৯৩১ জন ১৯৪টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং পাশ করে ৪৬ হাজার ৭৫৮ জন।

তবে পরীক্ষার সময় ২৮ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে, যার মধ্যে ছেলেদের সংখ্যা বেশি।

ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মে. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, সরকার শিক্ষার প্রকৃত চিত্র জানতে চেয়েছিল, তাই আমরা শতভাগ নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা নিতে সক্ষম হয়েছি। শিক্ষার্থীদের খাতা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে বলেই এবার ৫৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ পাসের হার এসেছে।

তিনি আরও বলেন, শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে ফলাফল বিপর্যয় বেশি ঘটেছে। ইংরেজি ও গণিতে অধিকাংশ শিক্ষার্থী খারাপ ফল করেছে। এ কারণে শিক্ষকদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর জি. এম. শহীদুল ইসলাম বলেন, গতবার নম্বর ও সিলেবাসে ছাড় ছিল। এবারে পূর্ণমান ও পূর্ণ সিলেবাসে পরীক্ষা হয়েছে, যা ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার কম থাকাও বড় একটি কারণ। তবে এই ফলাফলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফেরার অনুপ্রেরণা পাবে বলে আশা করছি।

তিনি জানান, গ্রামাঞ্চলের শিক্ষকদের মানোন্নয়নে প্রশিক্ষণসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা এবারও ভালো ফল করেছে এবং সার্বিকভাবে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় পাসের হার ও জিপিএ-৫-এ এগিয়ে রয়েছে।

এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।