ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

তিনটি মোবাইলে ধারণ করা হয় চবি ছাত্রী হেনস্তার ভিডিও 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২
তিনটি মোবাইলে ধারণ করা হয় চবি ছাত্রী হেনস্তার ভিডিও  ...

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় এক যাত্রীকে যৌন হয়রানির পর বিবস্ত্র করে তিনটি মোবাইলে ভিডিও ধারণ করা হয়। এরমধ্যে একটি গ্রেফতারকৃত আজিমের মোবাইল।

সে বিষয়টি র‌্যাবের কাছে স্বীকার করেছে। এছাড়াও ওই ছাত্রীকে তারা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
 

শনিবার (২৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় নগরের বহদ্দারহাটস্থ চান্দগাঁও র‌্যাব-৭ এর ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন র‌্যাব-৭ পতেঙ্গার অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।

তিনি বলেন, ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে ও বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে জানতে পারি আজিমের নেতৃত্বে এ ঘটনার সঙ্গে ৬ জন সস্পৃক্ত। অভিযুক্ত সাইফুলকে ধরতে পারলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। ঘটনাটি তাৎক্ষণিক ঘটেছে। পূর্ব কোনও পরিকল্পনা ছিল না তাদের। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।  

তিনি বলেন, ভুক্তভোগী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ছাত্রী গত ১৭ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে খাওয়া দাওয়া শেষ করে বন্ধুকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকা হয়ে প্রীতিলতা হল সংলগ্ন রাস্তায় যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে  অজ্ঞাত ৫ জন লোক তাদের পথরোধ করে জেরা করতে থাকে। এসময় তার বন্ধুকে মারধর করতে থাকে। তখন বাধা দিলে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে মারধরের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী ও তার বন্ধুকে জোর করে বেগম ফজিলাতুন নেছা হলের পিছনে ইটের রাস্তা দিয়ে ঝোপ-ঝাড়ের দিকে নিয়ে যায়। মারধরের পর শ্লীলতাহানী করে ও অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে।

তিনি আরও জানান, আসামিদের একজন হুমকি প্রদান করে বলে- তার সঙ্গে শারিরীক সম্পর্ক না করলে ধারণকৃত ভিডিও ভাইরাল করে দিবে। তারা এক ঘন্টা আটকে রেখে ভুক্তভোগী ও তার বন্ধুর ২টি মোবাইল ও নগদ ১৩ হাজার ৭০০ টাকা নিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে গত ২০ জুলাই হাটহাজারী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।  

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের ধরতে র‌্যাব নজরদারী এবং তৎপরতা চালায়। গত ২২ জুলাই রাতে হাটহাজারী ও রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগ ২য় বর্ষের ছাত্র মো. আজিম (২৩), হাটহাজারী কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্র মো. নুর হোসেন শাওন (২২), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগ ২য় বর্ষের ছাত্র মো. নুরুল আবছার বাবু (২২), হাটহাজারী কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র মো. মাসুদ রানা (২২) কে আটক করা হয়। এছাড়া চবি ইংরেজি বিভাগ ৩য় বর্ষের ছাত্র মেহেদী হাসান হৃদয় (২৩)-কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ছাত্রী হেনস্তায় অভিযুক্ত আজিম নোয়াখালীর হাতিয়া থানার চর ভারত সেন এলাকার মো. আমির হোসেনের পুত্র। নুর হোসেন শাওন হাটহাজারীর ফতেপুর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জাবেদ হোসেনের ছেলে। নুরুল আবছার বাবু ফেনীর পরশুরাম বেড়াবাড়ি এলাকার বেলায়েত হোসেনের ছেলে। মাসুদ রানা ঝালকাঠির আশিয়ার এলাকার আবদুল মান্নানের ছেলে।  মেহেদী হাসান হৃদয় চবি শাহ আমানত হলে থাকেন। তিনি শেরপুরের মাধবপুর এলাকার রনজু মিয়ার ছেলে।

র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, হাটহাজারী সরকারি কলেজের দুই শিক্ষার্থীর আত্মীয়-স্বজন চবিতে কর্মরত থাকার কারণে তারা প্রায়ই ক্যাম্পাসে থাকে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।