ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ছোলা আমদানি বাড়লেও দাম নিয়ে শঙ্কা ভোক্তাদের

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২২
ছোলা আমদানি বাড়লেও দাম নিয়ে শঙ্কা ভোক্তাদের রমজানের ইফতারে ছোলার চাহিদা বেশি

চট্টগ্রাম: রমজানের ইফতারে চাহিদা বাড়ে ছোলার। সারা বছরই ছোলা কখনো ভেজে, কখনো ডাল বা বেসন বানিয়ে নানাভাবে খাওয়া হয়।

তারপরও দেশে রমজানের অত্যাবশ্যকীয় ভোগ্যপণ্য ছোলা। গত অর্থবছরের তুলনায় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দ্বিগুণের বেশি ছোলা আমদানি হয়েছে এবার, তবুও দাম বাড়ার শঙ্কা ভোক্তাদের।

বেশিরভাগ ছোলা আমদানি হয় অস্ট্রেলিয়া থেকে। এরপর বড় অংশ আসে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। সেখানে ছোলা উৎপাদন হয় না ঠিকই, কিন্তু রি-এক্সপোর্ট বা অন্য দেশ থেকে এনে রফতানি করা হয়। মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে ছোলা আসে। পাকিস্তানি সাদা বড় দানার কাবলি ছোলাও আসে।  

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আসা ছোলা খালাসের ছাড়পত্র দিয়ে থাকে কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র। এ কেন্দ্রের উপপরিচালক মো. নাছির উদ্দিন মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) বাংলানিউজকে বলেন, ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ছোলা আমদানি হয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার ৩৬৪ টন। এ আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে ছোলা আমদানি হয়েছিল ১ লাখ ৫ হাজার ৯১২ টন।  

তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খেজুর আমদানি হয়েছে ৬০ হাজার ৪১৪ টনের বেশি। মশুর ডাল এসেছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৪৮৯ টন।  

সূত্র জানায়, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এসেছে আরও প্রায় ২৮ হাজার টন ছোলা।

এ হিসাব থেকে পরিষ্কার, দ্বিগুণের বেশি ছোলা ঢুকেছে দেশে। গুদামে রয়ে গেছে গত বছরের বিক্রি না হওয়া ছোলা। আসছে টেকনাফ দিয়ে মিয়ানমারের ছোলা। সব মিলে ছোলার সরবরাহ বেশি এবার। বড় আমদানিকারকদের কিছু ছোলা এখনও পাইপলাইনে আছে। কিছু আছে জাহাজে।  

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ জামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, পবিত্র রজমান সামনে রেখে প্রচুর ছোলা আমদানি হয়েছে। বন্দর থেকে সড়ক ও নদীপথে সারা দেশে সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে এ ছোলা। কর্ণফুলীর বিভিন্ন ঘাট ছাড়াও বিভিন্ন স্থানের গুদাম থেকে ছোলা চলে যাচ্ছে পাইকারদের কাছে। শবে বরাতের পরপরই নগর ও আশপাশের বিভিন্ন উপজেলার খুচরা বিক্রেতারা খাতুনগঞ্জের আড়তে পাইকারি ছোলা কিনতে ভিড় করবেন। আশা করি এবার ছোলা নিয়ে সংকট হবে না।  

সরেজমিন কাজীর দেউড়ি সিডিএ মার্কেট ও আশপাশের খুচরা দোকানে ভালো মানের অস্ট্রেলিয়ার ছোলা বিক্রি হচ্ছে কেজি ৭৮-৮০ টাকা। একজন দোকানি জানান, আজ খাতুনগঞ্জ থেকে ছোলা এনেছি এক বস্তা। কেজিতে গাড়িভাড়া পড়েছে ১ টাকার বেশি। সব মিলিয়ে ৭৫ টাকা কেজিপ্রতি কেনাদাম।  

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, দেশে ছোলার চাহিদা, আমদানির পরিমাণ সম্পর্কে সঠিক হিসাব দরকার। একই সঙ্গে আমদানিকারকের কেজিপ্রতি খরচ কত, লাভ কত, পাইকারের কেনা কত, খুচরা বিক্রেতার কেনা কত সব মনিটরিং করা দরকার। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে প্রচুর ছোলা বিক্রি করে বাজার স্থিতিশীল রাখার উদ্যোগ নিতে হবে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে পুরো মাসের ছোলা একসঙ্গে কিনলে বাজারে বাড়তি চাহিদার সৃষ্টি হয়। তাই কয়েক ধাপে ছোলা কেনা উচিত প্রতিটি পরিবারের। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের বিষয়টিও ভাবতে হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৩  ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২১
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।