চট্টগ্রাম: নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনগুলো ও নাগরিকদের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
মঙ্গলবার (১৩ মে) আগ্রাবাদ বক্স কালভার্ট, মহেষখাল, নাজির খাল পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এ মন্তব্য করেন।
চসিকের চলমান খাল খনন ও পরিচ্ছন্নতা অভিযানের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা বলেছেন, জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান কোনো একক সংস্থার পক্ষে সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আমি নিজে চট্টগ্রামে প্রাথমিক থেকে কলেজ পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। তখন শহরে কখনো এরকম জলাবদ্ধতা ছিল না। এটি প্রাকৃতিক সমস্যা নয়, বরং দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা ও খাল দখলের ফল। যারা অতীতে সিডিএর নেতৃত্বে ছিলেন, তারাই মূলত এ অবস্থার জন্য দায়ী।
খাল উদ্ধার ও পুনঃখনন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে খালের ওপর গড়ে ওঠা দোকান, ঘরবাড়ি এমনকি চিনির গুদাম পর্যন্ত অপসারণ করা হয়েছে। অনেক বাধা অতিক্রম করে আজ আমরা খালগুলো আগের রূপে ফিরিয়ে আনার কাজ করছি। আমরা সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীকেও এই কাজে সম্পৃক্ত করেছি। এ এক বিশাল সমন্বিত উদ্যোগ।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা প্রশাসনিক দিক থেকে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এখন নাগরিকদের দায়িত্ব সচেতন হওয়ার। রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনসহ সবাইকে সম্পৃক্ত করে আমরা কাজ করছি। আশা করছি, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ জলাবদ্ধতা একদিন স্থায়ীভাবে নিরসন সম্ভব হবে।
নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, খাল পরিষ্কারের পর আবারও যদি কেউ সেখানে ময়লা ফেলে, তাহলে সেটি হবে আমাদের সব প্রচেষ্টার অপচয়। নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেউ বাইরে ময়লা ফেললে, তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা দল-মত-নির্বিশেষে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রামকে একটি ক্লিন, গ্রিন, হেলদি, স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন খাল খনন ও পরিষ্কার কার্যক্রমে সব রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের অংশগ্রহণের ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন দেখতে চাই।
খাল উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্পর্কে মেয়র বলেন, নাজিরখাল, মহেষখাল আমাদের জলাবদ্ধতা নিরসন কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে দৃশ্যমান অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। আমরা মনে করি, একটি স্মার্ট, ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি সিটি গড়তে হলে দল-মত-নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণ অপরিহার্য। জলাবদ্ধতা নিরসনে ভূমিকা রাখা রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন সেবা সংস্থার কর্মকর্তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম শহরকে আমরা পরিচ্ছন্ন, আধুনিক এবং বাসযোগ্য নগরে পরিণত করতে চাই। এজন্য দল-মত, পেশা, শ্রেণি নির্বিশেষে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি আশা করি, সবাই মিলে আমরা এই শহরকে একটি আদর্শ স্মার্ট সিটিতে রূপান্তর করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়া উদ্দিন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সংসদীয় দলের সাবেক হুইপ, চট্টগ্রাম মহানগরী আমির শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নুরুল আমিন, নগর জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, এসএম লুৎফুর রহমান প্রমুখ।
এআর/টিসি