চট্টগ্রাম: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, প্রফেসর ইউনূসের মূল আইডিয়াটা হচ্ছে বাংলাদেশকে ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ করা। বাংলাদেশ এখন যে জায়গায় আছে, বাংলাদেশে এখন যদি নতুন করে প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি করতে হয়, যেটা ইয়াং ছেলেমেয়েদের প্রচুর জব দরকার এবং বাংলাদেশের ইকোনমিক উন্নতি নতুন উচ্চতায় নিতে হলে এ দেশকে ম্যানুফেকচারিং হাব করতে হবে।
শুক্রবার (২ মে) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্যসচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস সচিব বলেন, চট্টগ্রামে যত টার্মিনাল আছে, লালদিয়া, বে টার্মিনাল, পতেঙ্গা টার্মিনাল, মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর বলেন পুরো অঞ্চলটা বন্দরের জন্য উপযোগী। চট্টগ্রামের পোর্ট সিস্টেমকে সক্ষম করা। কারণ এটা দিয়ে প্রচুর পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করতে হবে। ধরেন একজন আমেরিকান রপ্তানিকারক বাংলাদেশে পণ্য বানিয়ে নিজের দেশে নিয়ে যাবে। সে তো চাইবে কত দ্রুত বানিয়ে পণ্য নিয়ে যেতে। এখানে বানাতে আসবে কারণ এখানে কস্ট অব প্রডাকশন কম, বেতন দিতে হবে কম। বানানোর পর যত দ্রুত রপ্তানি করা যায় এর জন্য বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এই জন্যই বিদেশি সবচেয়ে ভালো কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলছি আমরা যাতে বন্দরের সক্ষমতা বাড়ে। এখন চট্টগ্রাম ও আশপাশের টার্মিনালগুলোর সক্ষমতা ১ দশমিক ২৭ মিলিয়ন টিইইউএস (২০ ফুট দীর্ঘ) কনটেইনার। এ সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে ২০৩০ এর মধ্যে এটা ৭৮ লাখ ৬০ হাজার টিইইউএসে নেওয়া, মানে ছয় গুণ বাড়ানো। বাংলাদেশকে ইকোনমিক হাব, ম্যানুফেকচারিং হাব করতে হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা নাম্বার ওয়ান, পূর্বশর্ত।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বন্দরকে ঘিরে মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আসবে। সেই কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আমরা কথা বলছি যারা ৭০ থেকে ৯০টি বন্দর হ্যান্ডলিং করছে। যত দ্রুত সম্ভব এটা করার চেষ্টা করছি। সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করতে চায়।
দেশি অপারেটররা টার্মিনাল হ্যান্ডলিং করতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যে পরিমাণ বিনিয়োগ লাগবে, বিশেষজ্ঞ লাগবে সেটি দেশি কারও নেই। উন্নত বিশ্বের অনেক বড় বড় বন্দর অভিজ্ঞ প্রাইভেট কোম্পানিকে দিয়েছে। আমাদের সেই বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান নেই।
মানবিক করিডোর প্রসঙ্গে বলেন, আমরা বলেছি যে মানবিক করিডোরে আমরা ইচ্ছুক যদি ইউএন চিন্তাভাবনা করে। পুরো জিনিসটা হবে দুইটি দেশের সাথে কথা বলে। ইউএন যখন কাজ করবে মায়ানমার সরকার ও আমাদের সঙ্গে কথা বলে তারপর সিদ্ধান্তে আসবে। রাখাইনে আরও যারা আছে তাদের সঙ্গেও কথা বলবে। এ করিডোরের প্রশ্ন আসছে, কারণ সেখানে সিভিল ওয়ার টাইপের কনফ্লিক্ট হচ্ছে। এ কনফ্লিক্টে পড়ে সেখানে রোহিঙ্গা, রাখাইন জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। অনেকে অনেক কষ্টে আছেন। মানবিক সংকট হয়েছে। পলিটিক্যাল পার্টিগুলো যে কথাগুলো বলছে আমার মনে হয় তা প্রিম্যাচিউর। এটা সর্বসম্মতিক্রমে হবে। আমরা মনে করি, এটা এখনো অনেক অনেক দূরের বিষয়। আমরা তো বলেছি, যখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিষয়ে আসবে তখন সবার সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত হবে।
‘আওয়ামী লীগ কোন মুখে এটা বলে? ওরা রোহিঙ্গা নাম নিতে ভয় পেত। রোহিঙ্গাদের মায়ানমাররা বলতো, ওরা বাঙালি। রোহিঙ্গা নাম নিতে ভয় পেয়ে তারা নাম দিয়েছে এফডিএমএম। মায়ানমারের জেনারেলরা আমার মামু লাগে! তার জন্য রোহিঙ্গাদের নাম নেবো না। আপনি যখনি রোহিঙ্গাদের নাম নেবেন না, তখন তাদের অধিকারে আপনি বিশ্বাসী না। ওদের কোনো রাইটসই নাই এগুলো নিয়ে কথা বলার। ’ যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, মে ২, ২০২৫
এআর/পিডি/টিসি