দেশের আউটডোর বিজ্ঞাপন খাতে প্রথমবারের মতো অডিয়েন্স মেজারমেন্ট ও মনিটরিং প্ল্যাটফর্ম নিয়ে এসেছে ব্রেইনকাউন্ট। এ প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগের মাধ্যমে বিলবোর্ড বিজ্ঞাপনের কার্যকারিতা নিয়মিতভাবে পরিমাপ করা যাবে, যা ব্র্যান্ড ও এজেন্সিগুলোকে দ্রুত ও তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশে আউটডোর বিজ্ঞাপন খাতে প্রতিবছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ হয়। দেশজুড়ে ১২ হাজারের বেশি বিলবোর্ড ও ডিজিটাল স্ক্রিন থাকা সত্ত্বেও এতদিন বিজ্ঞাপনের ফলাফল নির্ভরযোগ্যভাবে পরিমাপের কোনো কার্যকর ব্যবস্থা ছিল না। ফলে বিজ্ঞাপনদাতাদের অনুমান ও অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করেই সিদ্ধান্ত নিতে হতো।
দীর্ঘদিনের এ সমস্যার সমাধান হিসেবে ব্রেইনকাউন্ট নিয়ে এসেছে আধুনিক ডেটা বিশ্লেষণভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম। এখানে ডেটা সায়েন্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আইওটি ডিভাইস ও অন্যান্য প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপনদাতারা জানতে পারবেন কোন এলাকার কোন বিলবোর্ড কেমন ফলাফল দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞাপন প্রচারের সময়ই প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিজ্ঞাপনের কৌশলে পরিবর্তন আনার সুযোগও তৈরি হয়েছে। প্ল্যাটফর্মটির সাহায্যে বিজ্ঞাপনদাতারা তাদের বিনিয়োগ কতটা কার্যকর হচ্ছে তা যাচাই করতে পারবেন। পাশাপাশি প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিজ্ঞাপনের সঙ্গে তুলনামূলক বিশ্লেষণও সহজেই করতে পারবেন।
বিশ্বের সবকিছু যখন তথ্যনির্ভর হয়ে উঠছে তখন আমাদের দেশের আউটডোর বিজ্ঞাপন খাতটি চলছিল কোনো তথ্যের সহায়তা ছাড়াই। ব্রেইনকাউন্ট সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন এনেছে বলেন ব্রেইনকাউন্টের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ মার্কেটার তাওহীদুর রহমান তাপস।
তিনি বলেন, বিলবোর্ড বা আউটডোর বিজ্ঞাপন অনেকদিন থেকেই ব্র্যান্ডগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। তবে এতদিন এর কার্যকারিতা প্রমাণের সুযোগ ছিল না। ব্রেইনকাউন্ট এই খাতে ডেটাকে যুক্ত করেছে। বিজ্ঞাপনদাতারা এখন তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে।
তাওহীদুর রহমান তাপস বলেন, মিডিয়া মালিকদের জন্যও ব্রেইনকাউন্ট নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। কোন এলাকায়, কোন বিলবোর্ড কতটা দৃশ্যমান এখন তার সঠিক তথ্য পাবেন তারা। ফলে নতুন লোকেশন নির্বাচন কিংবা ক্লায়েন্টের সঙ্গে আলোচনার সময় নির্ভরযোগ্য তথ্য ব্যবহার করা যাবে। ডেটাভিত্তিক এই প্রমাণ মিডিয়া মালিকদের সেবা ও মূল্য নির্ধারণে আরও স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করবে।
বিশ্বব্যাপী অডিয়েন্স মেজারমেন্ট ব্র্যান্ডগুলোর পরিকল্পনা, ব্যয় ও ক্যাম্পেইনের ফলাফল মূল্যায়ন পদ্ধতিকে পরিবর্তন করে দিয়েছে বলেন ব্রেইনকাউন্টের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সফল টেক উদ্যোক্তা ইমতিয়াজ আহমেদ।
তিনি বলেন, ডেটা সায়েন্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডিজিটাল আর্কিটেকচার ব্যবহার করে বিশ্ববাজারগুলো আউটডোর বিজ্ঞাপনকে নতুনভাবে গড়ে তুলেছে, যার ফলে থ্রিডি বিলবোর্ড, ইন্টারঅ্যাকটিভ আউটডোর কমিউনিকেশন ও রিয়েল-টাইম বিজ্ঞাপন ডেলিভারি সিস্টেমের মতো উদ্ভাবন সম্ভব হয়েছে। এই উন্নত পদ্ধতিগুলো মাথায় রেখে আমরা ব্রেইনকাউন্ট তৈরি করেছি যাতে বাংলাদেশেও এই সক্ষমতা আনা যায়, যা আউটডোর বিজ্ঞাপনের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করবে।
প্রতিষ্ঠানটি ভবিষ্যতে অডিয়েন্স মেজারমেন্ট ও মনিটরিং কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ না থেকে আরও বড় পরিসরে কাজ করার পরিকল্পনা করছে। নতুন নতুন সেবা নিয়ে আসার মাধ্যমে আউটডোর বিজ্ঞাপনের খাতকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় ব্রেইনকাউন্ট। অডিয়েন্স মেজারমেন্ট চালু হওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের আউটডোর বিজ্ঞাপন খাত একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে- যেখানে প্রতিটি বিজ্ঞাপন পরিমাপযোগ্য, কৌশলগুলো আরও স্মার্ট ও প্রতিটি ইম্প্রেশন গুরুত্বপূর্ণ।
আরবি