ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

প্রাচ্যনাটের ‘কিনু কাহারের থেটার’ মঞ্চস্থ

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৮
প্রাচ্যনাটের ‘কিনু কাহারের থেটার’ মঞ্চস্থ কিনু কাহারের থেটার নাটকের একটি অংশ। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: দেশের অন্যতম নাট্যসংগঠন ঢাকা পদাতিকের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে নাট্যোৎসব-২০১৮। উৎসবে বুধবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে প্রাচ্যনাট মঞ্চস্থ করে ‘কিনু কাহারের থেটার’।

ঘটনায় পুতনা রাজ্যের কাহিনি। রাজ্যের উজির এক নারীর শ্লীলতাহানি করেছেন।

এ কারণে রাজ্যের বড়লাট সাহেব খেপেছেন। সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘এ অপকর্মের যদি বিচার না হয়, তাহলে আমি সিংহাসন ফালাইয়া দিব। ’ রাজা পড়লেন উভয় সংকটে। উজির তার প্রাণের দোসর, তাকে কী করে শাস্তি দেবেন? অন্যদিকে ঘটনা আরও জটিল। শুধু উজির নন, অপকর্মটি তিনি নিজেও করেছেন। তাই সাজা তারও প্রাপ্য। এ নিয়ে শুরু কিনু কাহারের থেটার নাটকের কাহিনি।

একটি দেশের অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতিতে রাজনীতির দোহাই দিয়ে সুবিধাভোগীদের ফায়দা নেওয়ার বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে কিনু কাহারের থেটার-এ। নাটকের পুতনা রাজ্য যেন বাংলাদেশ। এ রাজ্যের রাজা, লাট সাহেব, উজির, ঘণ্টাকর্ণ বারবার মনে করিয়ে দেয় আমাদের সরকার, বিরোধী দল আর সাধারণ মানুষের কথা।

দলটির ১৫তম প্রযোজনার এ নাটকটির এটি ছিল ৫০তম প্রদর্শনী। নাটকটি রচনা করেছেন মনোজ মিত্র। নির্দেশনা দিয়েছেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন।

নাটকে একটি চরিত্রের নাম ‘ঘণ্টাকর্ণ’। এ চরিত্রের মজার দিকটি হচ্ছে, সবাই অপরাধ করে আর ঘণ্টাকর্ণকে ভাড়া করে নিয়ে যায় দোষ স্বীকার করতে। ঘণ্টাকর্ণও সবার সামনে অপরাধীর হয়ে দোষ স্বীকার করে বলে, ‘অপরাধটি ও করেনি, আমি করেছি। ’ কেউ কোনো অপরাধ করলে দোষ স্বীকার করতে ঘণ্টাকর্ণকে ভাড়া করা যেন নিয়ম হয়ে গেছে। এতে দেশটিতে চুরি, ডাকাতিসহ সব ধরনের অপরাধ বেড়ে যায়। কারণ, দোষ স্বীকার করার পাশাপাশি অপরাধের শাস্তিটাও মাথা পেতে নেয় বেচারা ঘণ্টাকর্ণ। এভাবে তার ওপর দোষ চাপিয়ে বেঁচে যায় শ্লীলতাহানির অভিযোগে অভিযুক্ত উজির মহাশয়।

একদিন রাজা ফেঁসে গেলেন ছাগল হত্যার দায়ে। লাট সাহেবের বুদ্ধির প্যাঁচে রাজার হলো ফাঁসির আদেশ। রাজা হুকুম দিলেন ঘণ্টাকর্ণকে, ‘আমার হয়ে তুই ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়া। ’ কিন্তু ঘণ্টাকর্ণ এবার বেঁকে বসে। জানিয়ে দেয়, রাজার ফাঁসির দায়ভার বহনে সে রাজি নয়। মানুষের পাপের বোঝা আর বয়ে বেড়াতে চায় না সে। এমন বোধের মধ্য দিয়েই এগিয়েছে নাটকটির কাহিনী।

নাটকটিতে অভিনয় করেছেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন, মিতুল রহমান, নাসিফুল ওয়ালিদ অম্লান, রন্তিক বিপু, এ. বি. এস. জেম, হীরা চৌধুরী,  রিঙ্কন শিকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, আবুল হাসনাত ভুঞা রিপন, বিলকিস জাহান জবা, সানজিদা আনোয়ার প্রীতি প্রমুখ।

নাটক সম্পর্কে কথা হয় এর নির্দেশক তৌফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের ওপর কোনো মামলা করা হলে বলা হয়, এটা রাজনৈতিক মামলা। আসলে সে কোনো অপরাধ করেনি। এ নাটকটা তেমনি একটি।

বাংলাদেশ সময়: ০২০৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৮
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।